কলকাতা, 11 অক্টোবর: রাজ্য সরকারের (West Bengal Government) দেওয়া অনুদানের অর্থ কোন খাতে খরচ করতে হবে, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ আদালত নির্দেশিত সেই পথেই সরকারের দেওয়া অনুদানের অর্থ খরচ হয়েছে কিনা, তা জানতে এবার তৎপর হল নবান্নও (Nabanna) ৷ এবছর প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে 60 হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ সরকারের দেওয়া সেই অর্থ কোন কোন খাতে খরচ করা হয়েছে, পুজো মিটতেই তার হিসাব চাইল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন ৷ পুজো কমিটিগুলির কাছে বিশেষভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে ঠিক কী কী জনসচেতনতামূলক কাজে এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে ৷
পুজো কমিটিগুলির প্রতি নবান্নের নির্দেশ, খরচের হিসাব দেখাতে উপযুক্ত বিল, ভাউচার ও শংসাপত্র জমা দিতে হবে আগামী তিনদিনের মধ্যে ৷ উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার 3 হাজার পুজো এবং রাজ্য পুলিশের আওতাভুক্ত মোট 35টি জেলা ও কমিশনারেট এলাকার 37 হাজার 28টি পুজোর জন্য এবছর (Durga Puja 2022) মোট 240 কোটি 16 লক্ষ 80 হাজার টাকা অনুদান বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার ৷ অর্থ দফতর সূত্রে খবর, পুজো কমিটিগুলির কাছে অনুদানের টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল দু'টি পৃথক 'মেমো'র মাধ্যমে ৷ রাজ্য পুলিশকে 222 কোটি 16 লক্ষ 80 হাজার টাকা এবং কলকাতা পুলিশকে 18 কোটি দেওয়া হয়েছিল পুজো কমিটিগুলির হাতে অনুদান হিসাবে তুলে দেওয়ার জন্য ৷
আরও পড়ুন: সরকারি অনুদান পেয়ে চাঁদার একাংশ ফেরত, নজির মালদার মহিলা পুজো উদ্যোক্তাদের
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে পুজোর অনুদান নিয়ে রুজু হওয়া জনস্বার্থ মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতিরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট খাতে পুজোর অনুদান খরচ করতে হবে ৷ এই বিষয়ে তাঁরা একটি গাইডলাইনও তৈরি করে দিয়েছিলেন ৷ মূলত ছ'টি শর্ত ধরানো হয়েছিল রাজ্যকে ৷ সেগুলি হল,
- অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালতের আগের সমস্ত নির্দেশ এবং গাইডলাইন মেনে চলতে হবে ৷
- অনুদান শুধুমাত্র সেই ক্লাব অথবা পুজো কমিটিগুলোকে দেওয়া হবে, যারা গত বছর সরকারের বেঁধে দেওয়া খাতে অনুদান খরচ করেছিল এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয়ের শংসাপত্র জমা দিয়েছিল ৷
- অনুদানের টাকা যাতে সাধারণ মানুষের স্বার্থে খরচ হয়, তা দেখতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে ৷
- অনুদানের টাকা যাতে নির্ধারিত খাতেই খরচ করা হয়, তা রাজ্য পুলিশের ডিজি নিশ্চিত করবেন ৷
- 15 নভেম্বরের মধ্যে পুজো কমিটিগুলি তাদের ব্যয়ের শংসাপত্র, বিল এবং ভাউচার নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করবে ৷
- রাজ্য সরকার সেই সমস্ত ব্যয়ের শংসাপত্র পরীক্ষা করে খরচ সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে 15 ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে ৷
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছে, যেহেতু মাথার উপর আদালতের নির্দেশ রয়েছে, তাই রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া অর্থের অবিলম্বে হিসাব নেওয়া জরুরি ৷ সূত্রের খবর, আগামী 15 ডিসেম্বরের মধ্যে এই হিসাব নবান্নের তরফ থেকে আদালতে জমা করা হবে ৷