কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য সরকারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গঙ্গা ও পদ্মার ভাঙন। অথচ এই নিয়ে কেন্দ্রের তেমন উদ্যোগ নেই বলে দাবি রাজ্য প্রশাসনের । শুধু তাই নয় নবান্নের একাধিক শীর্ষকর্তা মনে করেন, এই প্রধান নদীর ভাঙনের ফলে একটা বড় অংশের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত তখন কেন্দ্র কার্যত 'উদাসীন'। আর এতেই ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (State govt unhappy over river erosion)।
ভাঙন নিয়ে গত 21 ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । সম্প্রতি সেই চিঠির জবাব নবান্নে এসে পৌঁছেছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র ভাঙন রোধে রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়াতে একরকম 'অস্বীকার' করেছে। শুধু তাই নয় চিঠি বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, কেন্দ্র চায় একতরফাভাবে রাজ্য সরকার এই সামগ্রিক খরচ বহন করুক। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের অনেকেই মনে করেন ভাঙন রোধের বিপুল খরচ একা রাজ্যের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। সে কারণেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেই প্রশ্ন উঠছে মানুষের জীবন-জীবিকা যেখানে প্রশ্নের মুখে সেখানে কেন্দ্র উদ্যোগ নেবে না কেন ?
আরও পড়ুন: তৈরি নিম্নচাপ, পুজোর আগে আবারও বৃষ্টির ভ্রূকুটি বঙ্গজুড়ে
মালদা মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া জেলার একটা বিস্তীর্ণ অংশ গঙ্গা ভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে খবর নবান্ন সূত্রে। নদীগর্ভে চলে গিয়েছে প্রায় 2800 হেক্টর জমি। পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এই ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়বে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চিঠিতে সামগ্রিকভাবে ভাঙনের পুরো চিত্রই কেন্দ্রকে জানানো হয়েছিল। রাজ্যের দাবি, এতকিছুর পরেও গোটা বিষয়টির দায় তাদের ঘাড়েই চাপিয়ে দিল কেন্দ্র।
2005 সালে কেন্দ্র ফারাক্কা ব্যারেজের দুদিকে মোট 120 কিলোমিটার এলাকার ভাঙন প্রতিরোধের জন্য দায়িত্ব নিজেদের কাছে নিয়েছিল। মোদি সরকার আসার পর 2017 সালে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই নিয়ম বদলে দেওয়া হয় বলে অবিযোগ। সাম্প্রতিক চিঠিতে কেন্দ্র জানিয়েছে, ফারাক্কা ব্যারেজের ঊর্ধ্ব এবং নিম্ন অববাহিকার 19 কিলোমিটার ভাঙন রোধের দায়িত্ব তারা নিচ্ছে। আর এতেই বিপাকে রাজ্য। কীভাবে ভাঙন রোধে কাজ হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।