ETV Bharat / city

Left-Congress: অধীরের আবেদনে সাড়া না দিয়ে তৃণমূল-বিরোধী আন্দোলনে কি একলা চলতে চাইছে বামেরা ?

বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে পরপর দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনে নেমেছে বামফ্রন্ট (Left Front) ও কংগ্রেস (Congress) ৷ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী একসঙ্গে আন্দোলনের জন্য বামেদের বার্তা দিয়েছেন ৷ তার পরও বামেরা একাই আন্দোলন করে যাচ্ছে ৷

Left Front Organising Rally against TMCs Corruption without Congress
Left-Congress: অধীরের আবেদনে সাড়া না দিয়ে তৃণমূল-বিরোধী আন্দোলনে কি একলা চলতে চাইছে বামেরা ?
author img

By

Published : Aug 4, 2022, 4:40 PM IST

কলকাতা, 4 অগস্ট : একুশের নির্বাচনে (Bengal Assembly Elections 2021) ভরাডুবির পর রাজ্যে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বাম-কংগ্রেস (Left-Congress) । সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (CPIM General Secretary Sitaram Yechuri) 'ভোট শেষ, জোট শেষ' এর কথা বলে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের ছেদের কথা ঘোষণাও করেন । তারপর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাম-কংগ্রেস নিজেদের মতো করে হারিয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারের চেষ্টা করে চলেছে গত এক বছর ধরে ।

এমন পরিস্থিতিতে সেই কাজে অনেকটাই অক্সিজেন জুগিয়েছে শাসক দলের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারি, এসএসসি দুর্নীতি-সহ একাধিক ঘটনা । আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধিতে বামেদের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Chowdhury) । অধীরের এই আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Bengal CPIM Secretary Md Salim) । তারপর প্রায় একমাস হতে চলল ৷ কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না ।

অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, "অবস্থানরত যোগ্য প্রার্থীদের হক আদায়ের আমরা সমস্ত রকম লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাব । আমরা চাই বামেরও এদের হক আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করুক যেখানে আমরা অংশগ্রহণ করব ।" সেদিন বিকেলেই অধীর চৌধুরীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । ব্যস ! ওই পর্যন্তই । তার প্রতিফলন আজও দেখা গেল না ।

অথচ গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতায় বড় তিনটি মিছিল করে করেছে বামেরা । যেখানে কংগ্রেস নেতৃত্বকে দেখা যায়নি । একইভাবে কংগ্রেসও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একই ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । এমনকি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে বিধান ভবন থেকে ধর্মতলার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলও হয় ।

অর্থাৎ অধীরের প্রস্তাবের পর প্রদেশ কংগ্রেস যেমন জেলা ও কলকাতায় আলাদা আলাদা করে আন্দোলন সংগঠিত করছে শাসকের বিরুদ্ধে ৷ ঠিক তেমনি বামেরাও কংগ্রেসকে সঙ্গে না নিয়ে আলাদা করে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে । এই ঘটনার পর থেকেই ফের একবার সীতারাম ইয়েচুরির ‘ভোট শেষ, জোট শেষ’ তথ্য চর্চায় চলে এসেছে । একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, বামেরা শুধু কংগ্রেসকে নির্বাচনের সময় পাশে পেতে চায় ?

একইভাবে গত 10 বছরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, যতবারই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বামেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, ততবারই ভোট সংখ্যার নিরিখে বামেদের ক্ষতিটা বেশি হয়েছে । তাই সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কংগ্রেসকে কি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতে চাইছে বামেরা ? এই প্রশ্নও কিন্তু উঠতে শুরু করেছে ।

এই নিয়ে সিপিএমের তরফে কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুমন রায়চৌধুরী বলেন, "সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার জন্য, তাঁদের ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে বাম-কংগ্রেস উভয় রাজনৈতিক দল লড়াই করছে । ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন চলছে । যৌথ ভাবে আন্দোলন করার জন্য উভয় পক্ষের শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনা করবেন । বাম-কংগ্রেস মানুষের হকের লড়াইয়ে আছে, থাকবে ।’’

সূত্রের খবর, সিপিএম ছাড়া বামেদের অন্যান্য শরিক সিপিআই (CPI), ফরওয়ার্ড ব্লক (Forward Block), আরএসপি (RSP)-র এক একাধিক নেতা কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের লড়াইয়ে দ্বিমত করেন । কারণ, হিসেবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার পর বামেদের হাল ক্রমশ খারাপ হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন তাঁরা । ঠিক তেমনি দেশের একাধিক রাজ্যে পরপর নির্বাচনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া কংগ্রেসকে মানুষ করতে চাইছে না বলেও উল্লেখ করা হয় । ফলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর যতই আহ্বান করুক না কেন, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জল মেপে পা ফেলতে চাইছে বামেরা, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের ।

আরও পড়ুন : দেশের আর্থিক মন্দা-সহ একাধিক ইস্যুতে সেপ্টেম্বরে 11 দিনের আন্দোলন সিপিএমের

কলকাতা, 4 অগস্ট : একুশের নির্বাচনে (Bengal Assembly Elections 2021) ভরাডুবির পর রাজ্যে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বাম-কংগ্রেস (Left-Congress) । সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (CPIM General Secretary Sitaram Yechuri) 'ভোট শেষ, জোট শেষ' এর কথা বলে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের ছেদের কথা ঘোষণাও করেন । তারপর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাম-কংগ্রেস নিজেদের মতো করে হারিয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারের চেষ্টা করে চলেছে গত এক বছর ধরে ।

এমন পরিস্থিতিতে সেই কাজে অনেকটাই অক্সিজেন জুগিয়েছে শাসক দলের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারি, এসএসসি দুর্নীতি-সহ একাধিক ঘটনা । আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধিতে বামেদের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Chowdhury) । অধীরের এই আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Bengal CPIM Secretary Md Salim) । তারপর প্রায় একমাস হতে চলল ৷ কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না ।

অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, "অবস্থানরত যোগ্য প্রার্থীদের হক আদায়ের আমরা সমস্ত রকম লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাব । আমরা চাই বামেরও এদের হক আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করুক যেখানে আমরা অংশগ্রহণ করব ।" সেদিন বিকেলেই অধীর চৌধুরীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । ব্যস ! ওই পর্যন্তই । তার প্রতিফলন আজও দেখা গেল না ।

অথচ গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতায় বড় তিনটি মিছিল করে করেছে বামেরা । যেখানে কংগ্রেস নেতৃত্বকে দেখা যায়নি । একইভাবে কংগ্রেসও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একই ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । এমনকি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে বিধান ভবন থেকে ধর্মতলার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলও হয় ।

অর্থাৎ অধীরের প্রস্তাবের পর প্রদেশ কংগ্রেস যেমন জেলা ও কলকাতায় আলাদা আলাদা করে আন্দোলন সংগঠিত করছে শাসকের বিরুদ্ধে ৷ ঠিক তেমনি বামেরাও কংগ্রেসকে সঙ্গে না নিয়ে আলাদা করে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে । এই ঘটনার পর থেকেই ফের একবার সীতারাম ইয়েচুরির ‘ভোট শেষ, জোট শেষ’ তথ্য চর্চায় চলে এসেছে । একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, বামেরা শুধু কংগ্রেসকে নির্বাচনের সময় পাশে পেতে চায় ?

একইভাবে গত 10 বছরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, যতবারই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বামেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, ততবারই ভোট সংখ্যার নিরিখে বামেদের ক্ষতিটা বেশি হয়েছে । তাই সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কংগ্রেসকে কি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতে চাইছে বামেরা ? এই প্রশ্নও কিন্তু উঠতে শুরু করেছে ।

এই নিয়ে সিপিএমের তরফে কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুমন রায়চৌধুরী বলেন, "সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার জন্য, তাঁদের ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে বাম-কংগ্রেস উভয় রাজনৈতিক দল লড়াই করছে । ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন চলছে । যৌথ ভাবে আন্দোলন করার জন্য উভয় পক্ষের শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনা করবেন । বাম-কংগ্রেস মানুষের হকের লড়াইয়ে আছে, থাকবে ।’’

সূত্রের খবর, সিপিএম ছাড়া বামেদের অন্যান্য শরিক সিপিআই (CPI), ফরওয়ার্ড ব্লক (Forward Block), আরএসপি (RSP)-র এক একাধিক নেতা কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের লড়াইয়ে দ্বিমত করেন । কারণ, হিসেবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার পর বামেদের হাল ক্রমশ খারাপ হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন তাঁরা । ঠিক তেমনি দেশের একাধিক রাজ্যে পরপর নির্বাচনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া কংগ্রেসকে মানুষ করতে চাইছে না বলেও উল্লেখ করা হয় । ফলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর যতই আহ্বান করুক না কেন, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জল মেপে পা ফেলতে চাইছে বামেরা, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের ।

আরও পড়ুন : দেশের আর্থিক মন্দা-সহ একাধিক ইস্যুতে সেপ্টেম্বরে 11 দিনের আন্দোলন সিপিএমের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.