কলকাতা, 9 অক্টোবর : গঙ্গা দূষণ প্রতিরোধ করতে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করেছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ৷ প্রতিবছরই গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় কলকাতা পৌরনিগমকে ৷ গঙ্গা দূষণ নিয়ে সরব হন পরিবেশবিদরা ৷ গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জনের ফলে প্রতিমার অঙ্গসজ্জায় ব্যবহৃত রং ও রঙে মিশ্রিত সিসার দ্বারা জল দূষিত হচ্ছে, এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের ৷ যদিও দূষণ রোধ করতে এখন গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জনের পরই সঙ্গে সঙ্গে ক্রেন দিয়ে প্রতিমার কাঠামো জল থেকে তুলে নেওয়া হয় ৷ এছাড়াও গঙ্গার ঘাটগুলিতে জলের নীচের অংশ জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় ৷ আর এবার গঙ্গার জলে সিসা যাতে না মেশে, সেই বন্দোবস্ত করেছে কলকাত পৌরনিগম ৷ ঠিক হয়েছে, নিরঞ্জনের ঠিক আগে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাইপের সাহায্যে পরিশ্রুত জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা হবে প্রতিমা ৷ প্রাথমিকভাবে হেস্টিংসের দই ঘাটে পরীক্ষামূলকভাবে এই পরিকল্পনা কাজে লাগানো হবে ৷
আরও পড়ুন : Durga Puja : চতুর্থীতেই শুরু নিরঞ্জনের প্রস্তুতি, ঘাট পরিষ্কারে নামল পৌরনিগম
কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, জল বিভাগের প্রধান আধিকারিকের নেতৃত্বে খিদিরপুরের হেস্টিংসের দই ঘাটে অভিনব এই পদ্ধতি পরীক্ষামুলকভাবে এ বছর থেকেই শুরু করা হচ্ছে ৷ যদি এই প্রক্রিয়া সফল হয়, তাহলে আগামী বছর থেকে আরও বড়ভাবে এই ব্যবস্থা করা হবে ৷ তবে এখনই জোর করে পুজো উদ্যোক্তাদের উপর প্রতিমা ধোওয়ার দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হবে না ৷ যেসব পুজো উদ্যোক্তারা চাইবেন, তাঁরাই একমাত্র এইভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন দিতে পারবেন ৷
কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শহরের বুকে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে তাতে প্রতিমা নিরঞ্জন করা বস্তুত সম্ভব নয় ৷ সেই ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি যদি সফল হয় তাহলে আগামী বছর থেকে এই পদ্ধতিতে আরও বেশি করে প্রতিমা নিরঞ্জন করার জন্য পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে আবেদন করা হবে ৷ উল্লেখ্য, এ বছরও করোনাবিধি মেনে প্রত্যেকটি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে ৷ ঘাটগুলি নিয়মিতভাবে সাফাই এবং স্যানিটাইজেশন করা হবে ৷
আরও পড়ুন : Kolkata Police : পুজোর সময় শহরে বিশেষ সতর্কতা কলকাতা পুলিশের
এছাড়াও কলকাতা শহরে যতগুলি ঘাট রয়েছে, সেই সবক’টি ঘাটকে প্রস্তুত করা হচ্ছে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য ৷ প্রতি বছরের মতোই এবারও ঘাটগুলিতে ক্রেন থাকবে ৷ জলে প্রতিমা নিরঞ্জনের পরেই ক্রেন দিয়ে কাঠামো তুলে নেওয়া হবে ৷ ফুল এবং পুজোর অন্যান্য সামগ্রী গঙ্গার ঘাটের আলাদা একটি স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে ৷ প্রতিমা নিরঞ্জনের পর সঙ্গে সঙ্গে ঘাটগুলি পরিষ্কার করে দেওয়া হবে ৷ পৌরনিগমের কর্মীরা মোতায়েন থাকবেন প্রত্যেকটি ঘাটে ৷ এছাড়াও কলকাতা পুলিশ এবং গঙ্গা রিভার পুলিশ থাকবে নজরদারিরতে ৷