ETV Bharat / city

New TMC Hoarding 6 মাসে নতুন তৃণমূলের চেহারা কেমন হবে, যা বলছে রাজনৈতিক মহল - অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

6 মাসে নতুন তৃণমূলে (New Trinamool in Six Months) 'নতুন' কী থাকবে ? আগামীর তৃণমূলের চেহারা সম্পর্কে নানা মত রাজনৈতিক মহলে ৷ তবে অনেকেই একে ভাবমূর্তি রক্ষার প্রয়াস হিসেবে দেখছেন (New TMC Hoarding)৷

how-will-be-the-nature-of-new-trinamool-in-six-months
6 মাসে নতুন তৃণমূলের চেহারা কেমন হবে, যা বলছে রাজনৈতিক মহল
author img

By

Published : Aug 19, 2022, 3:54 PM IST

কলকাতা, 19 অগস্ট: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব যা পেরেছেন, তা পারেননি উত্তরপ্রদেশের নেতাজি অর্থাৎ মুলায়ম সিং যাদব । রাজনীতির কারবারিরা বলেন, দেশের পাওয়ার পলিটিক্স বরাবরই কিছু চমক নিয়ে আসে । সেই চমক কখনও কখনও শুধু শিরোনাম হয় না, নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয় । ঠিক যেভাবে মুলায়ম সিং যাদবকে সরিয়ে অখিলেশ যাদবের ক্ষমতা দখল করা একটা ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল ।

তবে বিহারে লালু প্রসাদ যাদবের ক্ষেত্রে তৎকালীন আরজেডি সুপ্রিমো দুর্নীতির মামলায় জড়িয়ে পড়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি সেভাবে আলোচনার বিষয় হয়নি । কিন্তু দুই প্রজন্মের মধ্যে ক্ষমতার হস্তান্তর সর্বদা সুখের নয় । অন্তত ইতিহাস তো সে কথাই বলছে । রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাতে যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন এ কথা বলা যাবে না । তবে তৃণমূল কংগ্রেসে একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে দুটি ক্ষমতার ভরকেন্দ্র তৈরি হয়েছে । কোথাও নীতিগতভাবে ক্যামাক স্ট্রিট এবং কালীঘাটের মধ্যে অবস্থানের ভিন্নতা দলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তাই নিয়ে একটা লড়াই দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই । রাজনৈতিক মহলের মতে, 'নতুন তৃণমূল' আসলে দলের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখার কৌশল ।

'ছয় মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূল' বলে প্রচার হোর্ডিং (New TMC Hoarding) কি শুধুই অতি উৎসাহী তৃণমূল সমর্থকদের হুজুগে প্রচার ? বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষক অমল মুখোপাধ্যায় কিন্তু এমনটি মনে করছেন না । বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের অন্দরেই সংস্কারের স্রোত চলছে । তার মধ্যে দলের ক্ষমতা দখলের একটা প্রয়াস রয়েছে । সেটাই আজকের নতুন তৃণমূল । তিনি মনে করছেন, এ ধরনের ভিন্ন ভাবনা আগামী দিনে দলকে বিভাজিত করতে পারে । 6 মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলের এই প্রচারের মাধ্যমে নিজের নাম ব্যবহার না করে শক্তি প্রদর্শনের একটা প্রয়াস রয়েছে ।

আরও পড়ুন: নতুন তৃণমূল হোর্ডিং কি আদতে কালীঘাটের উপর ক্যামাক স্ট্রিটের চাপ তৈরির খেলা

যদিও ছয় মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলের এই প্রচারে সংঘাতের কোনও সম্ভাবনাই দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র । তিনি বলেন, "আমার মনে হয় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও অস্তিত্ব আছে । তৃণমূল কংগ্রেসের তথাকথিত 2 নম্বর নেতা বলে যাঁরা এতদিন পরিচিত ছিলেন, ক্রমেই তাঁরা নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন । মুকুল রায়ের তৃণমূল ত্যাগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়া, শুভেন্দু অধিকারীর দল ছাড়া সব কিছুর প্রভাব মমতার বৃত্তের উপর পড়েছে । তাই পরিবারের সদস্য হিসাবে মমতাও এখন অভিষেকের (Abhishek Banerjee) উপর অনেক বেশি বিশ্বাস রাখছেন । এখন তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নাম সামনে রেখে রাজনৈতিক লড়াই হলেও দলীয় ভাবে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেন অভিষেক । এ ক্ষেত্রে নতুন তৃণমূল দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটা রাজনৈতিক কৌশল মাত্র । যেমনটি ছিল দিদিকে বলো ।"

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রাজু রায় বলেছেন, এই মুহূর্তে একের পর এক নেতার দুর্নীতি দলের ভাবমূর্তি তলানিতে এনে দাঁড় করিয়েছে । বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশ সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন । এই অবস্থায় একটা স্বচ্ছতা অভিযান প্রয়োজন । যা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সরিয়ে দলীয় নেতাদের প্রাসঙ্গিক করে তুলবে । সেই লক্ষ্যেই এই প্রচার । ফলে 6 মাসের মধ্যে দলের খোলনলচে বদলে নতুন চেহারায় দেখা যেতে পারে তৃণমূলকে । এ ক্ষেত্রে বুথ থেকে শুরু করে দলের বিভিন্ন স্তরের রদবদল হতে পারে । আগামী দিনে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বিভিন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হতে পারে । এমন কিছু পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে । প্রশ্ন হল, আজকে দলের ভাবমূর্তি যেখানে দাঁড়িয়ে তার বদল আদৌ সম্ভব কি !

কলকাতা, 19 অগস্ট: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব যা পেরেছেন, তা পারেননি উত্তরপ্রদেশের নেতাজি অর্থাৎ মুলায়ম সিং যাদব । রাজনীতির কারবারিরা বলেন, দেশের পাওয়ার পলিটিক্স বরাবরই কিছু চমক নিয়ে আসে । সেই চমক কখনও কখনও শুধু শিরোনাম হয় না, নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয় । ঠিক যেভাবে মুলায়ম সিং যাদবকে সরিয়ে অখিলেশ যাদবের ক্ষমতা দখল করা একটা ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল ।

তবে বিহারে লালু প্রসাদ যাদবের ক্ষেত্রে তৎকালীন আরজেডি সুপ্রিমো দুর্নীতির মামলায় জড়িয়ে পড়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি সেভাবে আলোচনার বিষয় হয়নি । কিন্তু দুই প্রজন্মের মধ্যে ক্ষমতার হস্তান্তর সর্বদা সুখের নয় । অন্তত ইতিহাস তো সে কথাই বলছে । রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাতে যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন এ কথা বলা যাবে না । তবে তৃণমূল কংগ্রেসে একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে দুটি ক্ষমতার ভরকেন্দ্র তৈরি হয়েছে । কোথাও নীতিগতভাবে ক্যামাক স্ট্রিট এবং কালীঘাটের মধ্যে অবস্থানের ভিন্নতা দলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তাই নিয়ে একটা লড়াই দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই । রাজনৈতিক মহলের মতে, 'নতুন তৃণমূল' আসলে দলের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখার কৌশল ।

'ছয় মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূল' বলে প্রচার হোর্ডিং (New TMC Hoarding) কি শুধুই অতি উৎসাহী তৃণমূল সমর্থকদের হুজুগে প্রচার ? বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষক অমল মুখোপাধ্যায় কিন্তু এমনটি মনে করছেন না । বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের অন্দরেই সংস্কারের স্রোত চলছে । তার মধ্যে দলের ক্ষমতা দখলের একটা প্রয়াস রয়েছে । সেটাই আজকের নতুন তৃণমূল । তিনি মনে করছেন, এ ধরনের ভিন্ন ভাবনা আগামী দিনে দলকে বিভাজিত করতে পারে । 6 মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলের এই প্রচারের মাধ্যমে নিজের নাম ব্যবহার না করে শক্তি প্রদর্শনের একটা প্রয়াস রয়েছে ।

আরও পড়ুন: নতুন তৃণমূল হোর্ডিং কি আদতে কালীঘাটের উপর ক্যামাক স্ট্রিটের চাপ তৈরির খেলা

যদিও ছয় মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলের এই প্রচারে সংঘাতের কোনও সম্ভাবনাই দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র । তিনি বলেন, "আমার মনে হয় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও অস্তিত্ব আছে । তৃণমূল কংগ্রেসের তথাকথিত 2 নম্বর নেতা বলে যাঁরা এতদিন পরিচিত ছিলেন, ক্রমেই তাঁরা নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন । মুকুল রায়ের তৃণমূল ত্যাগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়া, শুভেন্দু অধিকারীর দল ছাড়া সব কিছুর প্রভাব মমতার বৃত্তের উপর পড়েছে । তাই পরিবারের সদস্য হিসাবে মমতাও এখন অভিষেকের (Abhishek Banerjee) উপর অনেক বেশি বিশ্বাস রাখছেন । এখন তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নাম সামনে রেখে রাজনৈতিক লড়াই হলেও দলীয় ভাবে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেন অভিষেক । এ ক্ষেত্রে নতুন তৃণমূল দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটা রাজনৈতিক কৌশল মাত্র । যেমনটি ছিল দিদিকে বলো ।"

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রাজু রায় বলেছেন, এই মুহূর্তে একের পর এক নেতার দুর্নীতি দলের ভাবমূর্তি তলানিতে এনে দাঁড় করিয়েছে । বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশ সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন । এই অবস্থায় একটা স্বচ্ছতা অভিযান প্রয়োজন । যা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সরিয়ে দলীয় নেতাদের প্রাসঙ্গিক করে তুলবে । সেই লক্ষ্যেই এই প্রচার । ফলে 6 মাসের মধ্যে দলের খোলনলচে বদলে নতুন চেহারায় দেখা যেতে পারে তৃণমূলকে । এ ক্ষেত্রে বুথ থেকে শুরু করে দলের বিভিন্ন স্তরের রদবদল হতে পারে । আগামী দিনে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বিভিন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হতে পারে । এমন কিছু পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে । প্রশ্ন হল, আজকে দলের ভাবমূর্তি যেখানে দাঁড়িয়ে তার বদল আদৌ সম্ভব কি !

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.