কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: গোটা দেশের মতো গণেশ চতুর্থীর আনন্দে মাতোয়ারা হয়েছিল রাজ্যও ৷ মহারাষ্ট্র এবং দক্ষিণ ভারতরে গণ্ডি ছাড়িয়ে এ রাজ্যতেও গত কয়েক বছরে গণেশ পুজোর সংখ্যা বেড়েছে অনেকটা । দশ দিনের উৎসব গণেশ চুতুর্থীর (Ganesh Chaturthi 2022) অনেকটাই কেটে গিয়েছে ৷ কলকাতা, মুম্বই-সহ বেশ কিছু শহরে বিসর্জনও শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ এখন দেখে নেওয়া যাক মোটের উপর কেমন হল এবারের গণেশ পুজোর বাজার (Ganesh Chaturthi Market) ৷
মোদক ও লাড্ডুর বাজার
গণেশের প্রধান প্রসাদ হিসেবে মিষ্টি ভোগ দেওয়া হয় ৷ তার মধ্যে প্রথমেই যা থাকে তা হল মোদক ও লাড্ডু। আর এই বিশেষ দিনগুলিতে গণপতির প্রসাদ লাড্ডু ও মোদক বিক্রির বাজার থাকে তুঙ্গে ৷ বিক্রি বাড়াতে পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Midnapore) মোদকের স্বাদে ভ্যারাইটি এনেছিল মিষ্টির দোকানগুলি ৷ সেখানে 10 রকমের মোদক তৈরি করা হয়েছে ৷ বৈচিত্র্য আনতে বানানো হয়েছে ভিন্ন স্বাদের মোদক গন্ধরাজ । তাছাড়াও ছিল ম্যাংগো, চকোলেট, স্ট্রবেরি-সহ নানা স্বাদের মোদক (Modak in Ganesh Puja) ৷ ভ্যানিলা ও স্ট্রবেরি দরবেশও বাজার মাতিয়েছে ৷
মিষ্টির দোকানের মালিকও স্বীকার করে নেন ৷ আগে গণেশ পুজোর এত চল ছিল না ৷ তাই গণেশ চতুর্থীতে এই পরিমাণ বিক্রি হত না ৷ তবে এখন পাড়ায় পাড়ায়, বাড়িতে বাড়িতে গণেশ পুজো হয় । আর তাই বিক্রিও বেড়েছে অনেকটা ৷
এবারে মোদকের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লাড্ডুর চাহিদা ৷ চন্দননগরের সূর্যমোদক (Surjya Modak in Chandannagar) বানাল 50 কেজির লাড্ডু ৷ 50 কিলো লাড্ডু ছাড়াও 5 কিলো, 10 কিলো ও 20 কিলো-সহ লাড্ডুরও অর্ডার এসেছিল। 10 টাকা থেকে শুরু করে 15 হাজার টাকা পর্যন্ত এই লাড্ডু বিক্রি হয়েছে সূর্যমোদকে । সেইসঙ্গে 20 টাকা থেকে শুরু করে 400 টাকা পর্যন্ত মোদকও বিক্রি হয় ।
গণেশ মূর্তির বাজার
দু'বছরে করোনার কারণে মন্দায় ছিলেন কুমোরটুলির শিল্পীরা ৷ এবছর করোনার বাড় বাড়ন্ত তেমন না থাকায় তাঁরা আশা করেছিলেন ভালো বাজারের ৷ মৃৎশিল্পীদের অনেকের মতে এ বছর আশা অনুযায়ী বাজার ভালো গিয়েছে । সব ঠাকুর বিক্রি হয়েছে ন্যায্য দামে । অপরদিকে কিছু শিল্পী আবার এর সঙ্গে সহমত নয় ৷ তাঁদের মতে, প্রথম দিকে বাজার ভালোই যাচ্ছিল । তবে গণেশের ক্ষেত্রে অনেকেই কুমোরটুলি পর্যন্ত না এসে অন্য জায়গা থেকে ঠাকুর কিনে নেন। সেটা না হলে বাজার আশানুরূপ হত বলে তাঁদের অনুমান।
জামাকাপড়ের বাজার
পুজো মানেই নতুন পোশাক ৷ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেলিব্রেটি থেকে সাধারণ মানুষকে অনেককেই গণেশ পুজোয় নতুন জামাকাপড় পরে মাতাতে দেখা গিয়েছে ৷ গণেশ পুজোর কেনাকাটাতে ভাঁটা পড়ল না এ বছর ৷ জমিয়ে বাজার করলেন পশ্চিমবঙ্গবাসী ৷ দুর্গাপুজো যদি ফাইনাল হয় তাহলে গণেশ পুজোকে সেমিফাইনাল হিসেবেই দেখলেন ক্রেতারা । কলকাতার ধর্মতলা, হাতিবাগান, গড়িয়াহাটে ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড় ৷
আরও পড়ুন : ঐতিহ্য-পরম্পরার সঙ্গে থিমের মিশেলে সমৃদ্ধ গণেশোৎসব, রইল তালিকা
শহরজুড়ে এখন পুজোর মরশুম । দুর্গাপুজোর রব ওঠা শুরু হয় গণেশ পুজো দিয়েই । আর বাঙালীর দুর্গাপুজোর কেনাকাটাও শুরু হয়ে যায় গণেশ পুজোর সঙ্গে সঙ্গে ৷ আগেভাগে ভালো ভালো ট্রেন্ডি জামাকাপড় কেনার ধুম পড়ে যায় বাজারগুলিতে ৷ মাত্র কয়েকদিন বাকি দুর্গাপুজোর ৷ তার আগে শপিং সেরে ফেলতে হবে ৷ করোনার দু'বছর পর এবারে পুজোর আমেজ অনেকটা বেশি ৷ করোনার সংক্রমণের হার আগের বছরের তুলনায় অনেকটাই কম বলে দুর্গাপুজোয় মেতে উঠতে তৈরি সকলই । মায়ের আগমনে শুধু আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা ! তারপরেই বাঙালীর শেষ্ঠ উৎসবের শুরু ৷