আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসর নেওয়ার সময় হয়েছিল, অবসর নিয়েছেন ৷ ওঁকে এক্সটেনশন দিতে চেয়েছিল, সম্ভবত ওঁ নিতে চায়নি ৷ আমি এটাই ধরে নেব ৷ কেন্দ্র-রাজ্যের এতখানি বিতর্কের পরেও আলাপন জেন্টলম্যানের মতো শান্ত ও ভদ্র থেকেছে ৷ আমি এতখানি আশা করিনি ৷ আমার মনে হয়, ওঁ ভেবে দেখেছে, ওঁ যদি থেকে যায় তাহলে আরও বড় সংঘাত তৈরি হতে পারে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ৷ ফলে ওঁ অবসর নিয়েছে ৷
আলাপনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে লেখা রাজ্য সরকারের চিঠি আমি দেখেছি ৷ যেখানে জানানো হয়েছে, আলাপনকে কেন্দ্রের তলব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক ৷ ভাল বয়ানে লেখা হয়েছে ৷ আমি শুনলাম, এর পর বিকেলের দিকে আলাপনকে শো-কজ করা হয়েছে ৷ এইসঙ্গে আগামীকাল তাঁকে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে ৷ আজকে লোকটা অবসর নিল, কাল সকালে কোথায় জয়েন করবে সে ! এই কথা বলা যায় না ৷ আইন বিরুদ্ধ ৷ ওঁকে যে এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছিল তা তো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুপারিশে, পশ্চিমবঙ্গে কাজ করার জন্যই ৷ দিল্লিতে কাজ করার জন্য নয় ৷ তাহলে এর মানে কী ! যারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা হল অ্যাপয়েন্ট কিমিটি অফ ক্যাবিনেট ৷ তাতে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি আছেন ৷ ক্যাবিনেট সেক্রেটারির সেক্রেটারি এসট্যাবলিশমেন্ট অফিসার, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি মেম্বার, ডিপার্টমেন্টাল মিনিস্টার মেম্বার, হোম মিনিস্টার মেম্বার, প্রাইম মিনিস্টার মেম্বার আছেন ৷ আমি বুঝতে পারছি না, আমাদের এসট্যাবলিশমেন্ট অফিসার, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি.. এরা কী করছেন ! যদি একজন রাজনীতিক ভুল কাজ করেন, তবে তাঁদের কাজই তো বোঝানো, যে ভুল কাজ করবেন না, এর ফলে এই এই হতে পারে ৷
আরও পড়ুন: অবসর নিয়েই কেন্দ্রের রোষানলে আলাপন, মিলল শোকজ় নোটিস
বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অবসর নিয়েছে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আমার ধারনা, এর ফলে যাবতীয় বিতর্কের অবসান হবে ৷ অবসর পরবর্তী জীবনে কোনও অসুবিধা হবে না ৷ পেনশন ইত্যাদি প্রক্রিয়ার জন্য নানা আইন রয়েছে ৷ কোনও ডিসপুট থাকলে পেনশন আটকানোর প্রশ্ন উঠবে ৷ মনে রাখতে হবে, ওঁকে শাস্তি দেওয়া হয়নি ৷ পেনশন বন্ধ হয়েছে অনেকের ৷ কিন্তু তা অন্য পরিপ্রেক্ষিত ৷ কোনও আমলার বিরুদ্ধে যদি কোনও বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া চলে, তবে সে সব হতে পারে ৷ বর্তমানে যে বিষয়টা ঘটে চলেছে তাতে তো আলাপনের কোনও ভুল নেই ৷ কেন্দ্রীয় সরকার ওঁকে কাজে যোগ দিতে বলেছে, রাজ্য সরকার ওঁকে ছাড়ছে না ৷ এর মধ্যে ওঁর তো কোনও ভুল নেই ৷ বরং আইনে বলে, কেন্দ্র এভাবে একজন আমলাকে কাজে যোগ দিতে বলতে পারে না ৷ যতক্ষণ সে রাজ্যের কর্মী ৷