কলকাতা, 31 জানুয়ারি : 2008 সালের নভেম্বর মাসে জিন্দাল শিল্পগোষ্ঠীর প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার শিলান্যাস করে সড়কপথে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী থেকে কলকাতা ফিরছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (former CM Buddhadeb Bhattacharjee) । অন্য কনভয়ে ফিরছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান এবং রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন । সেই সময় রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের কাছেই একটি বিস্ফোরণ হয় ৷ অল্পের জন্য রক্ষা পান বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ৷ পরে জানা যায় তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল মাওবাদীরা । এই ঘটনা সবারই জানা । কিন্তু শালবনী ছাড়াও আরও তিনবার তিন জায়গায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল । একবার কলকাতায় রাইটার্স বিল্ডিং বা মহাকরণে, একবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর কাছে এবং আরেকবার মুর্শিদাবাদ জেলাতে । এমনি সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সম্প্রতি প্রকাশিত "Operation Black Stiletto: My Days In Intelligence." নামক একটি বইয়ে ৷
আরও পড়ুন : অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন, এখনও সঙ্কটমুক্ত নন গীতশ্রী
বইয়ের লেখক দিলীপকুমার মিত্র ৷ যিনি রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল এবং রাজ্য ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের প্রাক্তন অ্যাডিশনাল ডিরেক্টের জেনারেল । এই বইটিতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রথমবার বুদ্ধদেববাবুকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল 2001 সালে । ছক ছিল নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের কাছে বুদ্ধবাবুর গাড়িতে গ্রেনেড লঞ্চার দিয়ে আক্রমণ করার । কিন্তু ওই আক্রমণ হওয়ার আগেই গ্রেফতার হয় ওই ষড়যন্ত্রের মূল চক্রী আবদুল এবং ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায় । মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুদ্ধবাবুর জেলা সফরেও তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল ইসমত আরা এবং জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস নামে এক দম্পতি ৷ যদিও ঘটনা ঘটার আগেই মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই দম্পতিকে ৷ তাদের জেরা করে রাজ্য পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ জানতে পারে, এই হত্যার ছক কষা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে । শেষ ছক ছিল, রাইটার্স বিল্ডিং বা মহাকরণে যে ঘরে বুদ্ধবাবু বসতেন তার পাশের ঘরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাঁকে হত্যা করার । কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটানোর আগেই ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় ষড়যন্ত্রের মূল চক্রী বাবলু, যার ওই ঘরে বিস্ফোরক রাখার কথা ছিল । ফলে বেঁচে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য ইটিভি ভারতের তরফে বইটির লেখক দিলীপকুমার মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷