কলকাতা, 29 অক্টোবর : দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই এসে গেল লক্ষ্মীপুজো । তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা । নিউ নির্মালের ছোঁয়া লেগেছিল দুর্গাপুজোয় । লক্ষ্মীপুজোতেও একই ছবি । ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন শুরু হলেও সর্বত্রই পুজো হচ্ছে ছোটো আকারে । লক্ষ্মীপুজো ছোটো করে হলেও বাজারে সব সামগ্রীর দর বেশ চড়া । তাই মধ্যবিত্তের যে নাভিশ্বাস উঠেছে তা বলাইবাহুল্য ।
শহরের বিভিন্ন বাজারে ভিড় করে পুজোর কেনাকাটি চলছে । চলছে প্রতিমা কেনা । প্রতিটি প্রতিমার মুখ খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখে পছন্দ চলছে । তবে প্রতিমার কেনার সময়ই ক্রেতাদের হাতে লাগছে ছ্যাঁকা । গত বছরের চেয়ে এবছর প্রতিমাগুলির দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে । তাই ধনলক্ষ্মীর আরাধনা করতে গিয়ে একেবারে নাজেহাল আমজনতা ।
প্রতিমার পাশাপাশি দাম বেড়েছে লক্ষ্মীর পট বা লক্ষ্মীর সরারও । ছোটো প্রতিমার দাম এই বছর 230 টাকা থেকে 300 টাকা, মাঝারি প্রতিমার দাম 400 টাকা থেকে শুরু করে 600 টাকা এবং তার চেয়ে বড় প্রতিমার দাম 700 টাকা থেকে 1200 টাকা । 2000 টাকা পর্যন্তও উঠছে বড় প্রতিমার দাম । আগের বছর যেখানে লক্ষ্মীর সরার দাম ছিল 70 টাকা থেকে 100 টাকার মধ্যে । এবার সেই দাম ঘোরাফেরা করছে 150 টাকা থেকে 200 টাকার আশপাশে । আগের বছর যে প্রতিমার দাম ছিল 180 টাকা সেটাই এখন একলাফে উঠেছে 230 টাকা পর্যন্ত।
এক প্রতিমা বিক্রেতা সঞ্জয় দাস স্বীকার করে নিয়েছেন যে এবছর প্রতিমার দাম বেশির দিকেই । বলেন , "আমাদের কেনাই পড়েছে অনেক দামে । সব প্রতিমার উপর প্রায় 30-40 টাকা করে বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে । তাই আমাদেরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।"
এক ক্রেতা সরিতা মুখোপাধ্যায় বলেন , "এবারে প্রতিমার দাম খুবই বেশি । কোনও সাজ ছাড়া ছোট প্রতিমার দাম 350 টাকা । আর ছোটো ঠাকুরই, যেগুলি একটু চুমকি বা শাড়ি দিয়ে সাজানো, সেগুলির দাম 1200 টাকা । একটা ছোট প্রতিমার দাম 1200 টাকা খুবই বেশি ।"
বাজারে প্রতিমার দরদাম করছিলেন অলি দত্ত নামে এক মহিলা । তাঁকে প্রশ্ন করায় বলেন, "এবার প্রতিমার দাম খুবই বেশি বলে মনে হচ্ছে । আমি একটা ছোটো প্রতিমা নিয়েছি । তারই দাম বলছে 400 টাকা । এবছর ফলমূলের দাম ততটা চড়া না হলেও শাকসবজির দাম খুবই বেশি।"
তবে যেকোনও পুজোর আগেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, বিশেষ করে শাকসবজি, ফুল ও ফল । তবে কোন এলাকায় বাজার তার উপরও নির্ভর করে বাজার দর । লেক মার্কেট, গড়িয়াহাট, মানিকতলা বাজারে দাম আগুন হলেও টালিগঞ্জ বাজার, যাদবপুর বাজার, কালীঘাট বাজার ও ল্যান্সডাউন বাজার তুলনামূলকভাবে দাম অনেকটাই কম । তবে এবছর কোরোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের ফলে ট্রেন বন্ধ থাকায় শুধুমাত্র উৎসবের সময়টাই নয়, আনলকের পর থেকেই বাজারে আগুন লেগেছে । দশমীর পর থেকে আরও বেড়েছে দাম।