ETV Bharat / city

Educationists on CM as Chancellor: বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী ! কী মনে করছেন শিক্ষাবিদরা ?

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য রাজ্যপাল ৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) মন্ত্রিসভা বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এবার থেকে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীই হবেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য ৷ এ বিষয়ে কী বলছেন শিক্ষাবিদরা ?(Educationists about CM being chancellor of universities)

Educationists about CM being chancellor of universities
Educationists on CM as Chancellor
author img

By

Published : May 26, 2022, 9:08 PM IST

কলকাতা, 26 মে : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Governor Jagdeep Dhankhar)সঙ্গে বারেবারে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য সরকার । তা সে শিক্ষা ক্ষেত্রেই হোক বা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে ৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, সর্বসম্মতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee)রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসবেন । এত দিন এই পদে থাকতেন রাজ্যপাল ৷ তিনি আর এই পদে থাকবেন না । যদিও বিধানসভায় এই বিষয় প্রস্তাব করা হবে এবং তারপর বিল পাশ করানো হবে । এই ঘোষণাকে ঘিরে পুরনো বিতর্ক আবারও উস্কে উঠল ।

এরপরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কানাঘুষো শোনা গেল শিক্ষামহলে (Educationists about CM being chancellor of universities)। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার মনে করেন যে আচার্য পদে যিনিই আসুন না কেন দেখতে হবে শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে কি না । তিনি বলেন, "সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ইউজিসি (UGC) আর্থিক সহায়তা করলেও অনেকটাই রাজ্য সরকারকেই চালাতে হয় । তাই যদি মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হন, তাহলে রাজ্য সরকারের হাতেই রইল । তবে তাতে বাড়তি কোনও সুবিধা হবে কি না, তা আমার জানান নেই। অন্যদিকে শিক্ষক-অধ্যাপক মিলিয়ে বহু শূন্যপদ রয়েছে, সেগুলি দ্রুত পূরণ হবে কি না, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাড়বে কি না, এই সব প্রশ্নগুলি রয়েছে । তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপাল না হয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হন, তাহলে শিক্ষাগত মান কতটা উন্নত হবে সেইটা দেখার বিষয় ।"

তিনি আরও বলেন, "রাজ্যপাল একটি আলংকারিক পদ । তবে রাজ্যের বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে কেন্দ্রের একটা যোগ সূত্র হচ্ছে রাজ্যপাল । আমি যখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ছিলাম তখন দেখেছি যে তৎকালীন রাজ্যপাল ডক্টর নুরুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছিলেন । তিনি আমাদের অনেক উৎসাহ জুগিয়েছিলেন এবং সবরকম সাহায্য করেছিলন । বহু ক্ষেত্রেই রাজ্যপাল এতটা করেন না । তবে সব সময় কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্য যোগাযোগের রাস্তা খোলা রাখলে অনেক দিক থেকেই সুবিধা হয় বলে আমার মনে হয় । জনগণ মন্ত্রিসভাকে নির্বাচন করে নিয়ে এসেছে, তাই তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার ওপর তো কিছু বলা যায় না । তাই তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিশ্চয়ই ঠিক ।"

পাশাপাশি প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোাপাধ্যায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী একজন রাজনৈতিক ফিগার এবং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । তাই তিনি যদি আচার্য হন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র নষ্ট হবে । অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি হস্তক্ষেপ হবে, এটা অবাঞ্ছনীয় । এর ফলে শিক্ষার সর্বনাশ হবে । পাশাপাশি এটা প্রায় একটা 100 বছরের পরম্পরা যে ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সেই রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে থাকেন । এতদিনের এই রীতি এখন একটা নিয়মে রূপান্তরিত হয়েছে । এই নিয়ম ভঙ্গ করা উচিত নয় ।"

আরও পড়ুন : CM as Chancellor of Universities : এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মুখ্যমন্ত্রী, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

তিনি আরও বলেন, "এই রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একটা দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে । কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যপালও বাড়াবাড়ি করেছেন । কিন্তু এই রাজ্যপালের মেয়াদও শেষ হবে, তখন তিনি চলে যাবেন । তাই এই রাজ্যপালের কথা ভেবেই এতদিনের একটা আইন কি পরিবর্তন করা উচিত? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আইনটি বিধানসভায় পাশ হয়ে গেলে এটি রাজ্যপালের কাছে সইয়ের জন্য যাবে । সেই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল যদি না করেন, তাহলে রাজ্য অর্ডিন্যান্স জারি করবে । কিন্তু অবশেষে যদি দেখা যায় রাজ্যপাল বিলটিতে সই করেনি, তাহলে এটি আইনে পরিণত হবে না । সেই ক্ষেত্রে থেকে যাবে একটা বড় প্রশ্ন চিহ্ন ।"

কলকাতা, 26 মে : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Governor Jagdeep Dhankhar)সঙ্গে বারেবারে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য সরকার । তা সে শিক্ষা ক্ষেত্রেই হোক বা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে ৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, সর্বসম্মতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee)রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসবেন । এত দিন এই পদে থাকতেন রাজ্যপাল ৷ তিনি আর এই পদে থাকবেন না । যদিও বিধানসভায় এই বিষয় প্রস্তাব করা হবে এবং তারপর বিল পাশ করানো হবে । এই ঘোষণাকে ঘিরে পুরনো বিতর্ক আবারও উস্কে উঠল ।

এরপরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কানাঘুষো শোনা গেল শিক্ষামহলে (Educationists about CM being chancellor of universities)। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার মনে করেন যে আচার্য পদে যিনিই আসুন না কেন দেখতে হবে শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে কি না । তিনি বলেন, "সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ইউজিসি (UGC) আর্থিক সহায়তা করলেও অনেকটাই রাজ্য সরকারকেই চালাতে হয় । তাই যদি মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হন, তাহলে রাজ্য সরকারের হাতেই রইল । তবে তাতে বাড়তি কোনও সুবিধা হবে কি না, তা আমার জানান নেই। অন্যদিকে শিক্ষক-অধ্যাপক মিলিয়ে বহু শূন্যপদ রয়েছে, সেগুলি দ্রুত পূরণ হবে কি না, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাড়বে কি না, এই সব প্রশ্নগুলি রয়েছে । তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপাল না হয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হন, তাহলে শিক্ষাগত মান কতটা উন্নত হবে সেইটা দেখার বিষয় ।"

তিনি আরও বলেন, "রাজ্যপাল একটি আলংকারিক পদ । তবে রাজ্যের বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে কেন্দ্রের একটা যোগ সূত্র হচ্ছে রাজ্যপাল । আমি যখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ছিলাম তখন দেখেছি যে তৎকালীন রাজ্যপাল ডক্টর নুরুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছিলেন । তিনি আমাদের অনেক উৎসাহ জুগিয়েছিলেন এবং সবরকম সাহায্য করেছিলন । বহু ক্ষেত্রেই রাজ্যপাল এতটা করেন না । তবে সব সময় কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্য যোগাযোগের রাস্তা খোলা রাখলে অনেক দিক থেকেই সুবিধা হয় বলে আমার মনে হয় । জনগণ মন্ত্রিসভাকে নির্বাচন করে নিয়ে এসেছে, তাই তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার ওপর তো কিছু বলা যায় না । তাই তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিশ্চয়ই ঠিক ।"

পাশাপাশি প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোাপাধ্যায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী একজন রাজনৈতিক ফিগার এবং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । তাই তিনি যদি আচার্য হন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র নষ্ট হবে । অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি হস্তক্ষেপ হবে, এটা অবাঞ্ছনীয় । এর ফলে শিক্ষার সর্বনাশ হবে । পাশাপাশি এটা প্রায় একটা 100 বছরের পরম্পরা যে ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সেই রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে থাকেন । এতদিনের এই রীতি এখন একটা নিয়মে রূপান্তরিত হয়েছে । এই নিয়ম ভঙ্গ করা উচিত নয় ।"

আরও পড়ুন : CM as Chancellor of Universities : এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মুখ্যমন্ত্রী, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

তিনি আরও বলেন, "এই রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একটা দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে । কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যপালও বাড়াবাড়ি করেছেন । কিন্তু এই রাজ্যপালের মেয়াদও শেষ হবে, তখন তিনি চলে যাবেন । তাই এই রাজ্যপালের কথা ভেবেই এতদিনের একটা আইন কি পরিবর্তন করা উচিত? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আইনটি বিধানসভায় পাশ হয়ে গেলে এটি রাজ্যপালের কাছে সইয়ের জন্য যাবে । সেই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল যদি না করেন, তাহলে রাজ্য অর্ডিন্যান্স জারি করবে । কিন্তু অবশেষে যদি দেখা যায় রাজ্যপাল বিলটিতে সই করেনি, তাহলে এটি আইনে পরিণত হবে না । সেই ক্ষেত্রে থেকে যাবে একটা বড় প্রশ্ন চিহ্ন ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.