কলকাতা, 14 অক্টোবর : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Bengal Recruitment Scam) অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের চাকরি দেওয়ার বদলে টাকার লেনদেনের অভিযোগ আগেই উঠেছে ৷ এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Enforcement Directorate) হাতে এল আরও বড় তথ্য ৷
ইডি সূত্রে খবর, অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে বিএড (B Ed) পাস করানোরও ব্যবস্থা হয়েছিল ৷ বেসরকারি বিএড কলেজ (Private B Ed College) থেকে পাসের সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা ৷ যে সমস্ত কলেজে ওই পরীক্ষার্থীরা বিএড পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন, সেই কলেজগুলির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) স্ত্রী ও ছেলের সংস্থার ৷ এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে অলিখিত চুক্তিও ছিল ৷
ফলে গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে ৷ আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে এই দুর্নীতিতে ৷ আর কে কে জড়িত রয়েছেন এই দুর্নীতিতে, আপাতত সেই তথ্যের সন্ধান করছেন ইডির (ED) গোয়েন্দারা ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মানিক ভট্টাচার্য এক সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন ৷ সেই সময়ই তিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ ৷ বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ক মানিক ৷ তাঁকে দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করেছে ইডি ৷ আপাতত তিনি ইডির হেফাজতে রয়েছেন ৷
এই পরিস্থিতিতে তদন্তে উঠে আসছে আরও একাধিক তথ্য ৷ সেই তথ্যের মধ্যেই রয়েছে বিএড কলেজের সঙ্গে অলিখিত চুক্তি ও লেননেদের বিষয়টি ৷ ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে গেলে প্রয়োজন বিএড পাসের সার্টিফিকেট ৷ যে সমস্ত প্রার্থীর ওই সার্টিফিকেট ছিল না, তাঁদের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিএড কলেজে ভরতি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য ৷
ইডির ওই সূত্র জানাচ্ছে যে মানিকের পরামর্শেই ওই সমস্ত বেসরকারি বিএড কলেজে ভরতি হয়েছিলেন ওই সব অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা ৷ পরে তাঁরা সেখান থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে এসে চাকরির নিয়োগ পান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে ৷ তদন্ত নেমে ইডি জানতে পেরেছে যে 2018 সালের অক্টোবর থেকে 2019 সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত একাধিক পরিষেবা বাবদ বিএড কলেজগুলি 2 কোটি 64 লক্ষ টাকা দেয় মানিকের ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যের সংস্থাকে ।
মানিকের স্ত্রী ও ছেলের একাধিক সংস্থা রয়েছে ৷ প্রতিটি সংস্থার সঙ্গেই এই ধরনের পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি ছিল ৷ কী ধরনের চুক্তি ? কেন চুক্তি করা হয়েছিল ? আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি ৷ তাই সংশ্লষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষগুলিকে ডাকতে চলেছেন তদন্তকারীরা ৷
আরও পড়ুন : নিয়োগ দুর্নীতিতে ব্যবহার হয়েছে গরুপাচারের টাকা ! খতিয়ে দেখছে সিবিআই