কলকাতা, 14 এপ্রিল: কোরোনার জন্য লকডাউন, আর লকডাউনের কারণে বাঙালির নববর্ষ উদযাপন বন্ধ হয়ে গিয়েছে! সাধারণত নববর্ষের প্রথম দিন চিৎপুরের যাত্রাপাড়া থাকে লোকে লোকারণ্য। যাত্রা শিল্পীদের কাছে আজকের দিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা বছরের পালার বুকিং হয় মূলত আজকের দিনেই। আজকের দিনে যাত্রাপাড়ায় আসেন যাত্রা শিল্পী, কলাকুশলীরা। শুভেচ্ছা বিনিময় চলে। এদিন বিভিন্ন জেলা থেকে পালা বুকিং করতে আসেন বিভিন্ন কমিটির উদ্যোক্তারা। কিন্তু, আজ বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন যদিও, তথাপি যাত্রাপাড়া জনশূন্য দেখা গেল। নেই ব্যস্ততা, উৎসবের আমেজ তো বহুদূর। লকডাউনের রাজ্যে নববর্ষে যাত্রা কোম্পানিগুলির শাটারে ঝুলছে তালা।
চিৎপুরে বর্তমানে 35টি যাত্রা কোম্পানি রয়েছে। সেই ঐতিহাসিক যাত্রাপাড়ায় আজ নববর্ষের দিন শ্মশানের শূন্যতা। খাঁ-খাঁ করছে এলাকা। এদিকে আচমকা লকডাউন ঘোষণার ফলে যাত্রা শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু কলাকুশলী আটকে পড়েছেন চিৎপুরেই। তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারেননি। তবে যাত্রা শিল্পীদের কাছে তারচেয়েও বড় সংকট রয়েছে। তা হল চৈত্র মাসের অধিকাংশ বুকিং বাতিল। পাশাপাশি এখনও গোটা মরশুমের জন্য কাজের খবর নেই। এদিকে যাত্রা কোম্পানিগুলি জানিয়ে দিয়েছে, কাজ না থাকলে শিল্পী বা কলাকুশলী কাউকেই বেতন দেওয়া সম্ভব না। সব মিলিয়ে কোরোনা প্রকোপে ও লকডাউনের কারণে সংকটে রাজ্যের যাত্রাশিল্প।
এই প্রসঙ্গে যাত্রা কর্মীরা জানান, সারা বছরের যাত্রার বেশিটাই বিক্রি হয় আজকের দিনে। সেখানে বুকিং একদম বন্ধ। চৈত্র মাসে গাজনের মেলায় প্রচুর পালা অনুষ্ঠিত হয়। কোরোনার জেরে সমস্ত বুকিং বাতিল হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিনেও বুকিং নেই!
কার্যত হতাশ শিল্পী ও কলাকুশলীরা। কোরোনার প্রভাব কেটে কবে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে দেশ তথা রাজ্য, কবে ফের যাত্রা শিল্পীরা কাজে ফিরবেন, তা নিয়ে রীতিমতো সংশয়ে চিৎপুর।