কলকাতা, 14 জানুয়ারি: কোরোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। আর এই ভ্যাকসিন নিয়েই এরাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের দু'টি সংগঠনের তরফে প্রশ্ন তোলা হল, ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই কি এই ভ্যাকসিনের কমার্শিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু গিয়েছে ? না হলে এরাজ্যে যে কোভিশিল্ড এসেছে তার ম্যানুফ্যাকচার ডেট হিসেবে কেন গত বছরের অক্টোবর মাসের উল্লেখ রয়েছে ?
জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য কোরোনার দুটি ভ্যাকসিন কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ডকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । 16 জানুয়ারি থেকে এদেশে জরুরি ভিত্তিতে শুরু হতে চলেছে কোরোনার টিকাকরণের কাজ । এর জন্য মঙ্গলবার এরাজ্যে এসে পৌঁছেছে কোভিশিল্ড । পৌঁছে গিয়েছে বিভিন্ন জেলাতেও । এদিকে এরাজ্যে আসা এই ভ্যাকসিনের ম্যানুফ্যাকচার ডেট হিসেবে লেখা রয়েছে গত বছরের অক্টোবর মাস। এবং এই ভ্যাকসিনের এক্সপায়ারি ডেট হিসেবে লেখা রয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাস। এই কোভিশিল্ডের ম্যানুফ্যাকচার এবং এক্সপায়ারি যে গত বছরের অক্টোবর এবং চলতি বছরের এপ্রিল মাস তা সঠিক বলে স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তী। আর এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলছে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের দুটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল এবং সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম।
আরও পড়ুন : কোরোনার টিকাকরণে সমস্ত খরচ কেন্দ্রের : মোদি
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "কোনও ভ্যাকসিনের ট্রায়াল আর ম্যানুফ্যাকচারিং একই সঙ্গে চলতে পারে না। ট্রায়াল একটি ফেজ় পর্যন্ত পৌঁছানোর পর ভ্যাকসিনের কমার্শিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু হয়। গত বছরের অক্টোবরে এই কোভিশিল্ডের ম্যানুফ্যাকচার ডেট দেখানো হয়েছে, তখন এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল সম্ভবত প্রথম ফেজ়েই ছিল। অথচ তখনই এই ভ্যাকসিনের ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ জনস্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়েছে কর্পোরেট সেক্টর। এর ফলে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।" মানস গুমটা বলেন, "ফেজ় ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগে, ফেজ় ট্রায়াল চলার সময় না কি ফেজ় ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর এই কোভিশিল্ডের ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু হয়েছে ? যদি ফেজ় ট্রায়াল শুরু হওয়ার সময় এই ভ্যাকসিনের কমার্শিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং-ও শুরু হয়ে যায়, তা হলে এর মধ্যে অনেক রহস্য রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়। এই কারণে এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা, কার্যকারিতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আসবে।" তিনি বলেন, "এটা জনস্বাস্থ্যের বিষয়। ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ে স্বচ্ছ হওয়া উচিত । স্বচ্ছতা না থাকলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।"