হাওড়া, 17 মে : ভোটের আগেই রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই প্রতিশ্রুতি রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী । সোমবার প্রায় সারাদিন নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে ধরনায় বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিকেলে সেখান থেকে নবান্নে ফিরে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন তিনি । রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাবকে সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় ।
আজ ছিল রাজ্য রাজনীতির অন্যতম ডামাডোলের দিন ৷ এদিন সকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ যে ঘটনার পর মন্ত্রীসভার বৈঠক বাতিল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কিন্তু বিকেলে নবান্ন সভাঘরে সেই বৈঠক হয় ৷ সেখানেই বিধান পরিষদ গঠনে শিলমোহর দেয় মন্ত্রিসভা ৷
অন্য অনেক রাজ্যে বিধান পরিষদ থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে ছিল না এতদিন । এবার সেই পরিষদ গঠনের পথে এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার । এদিন মন্ত্রিসভার সংক্ষিপ্ত বৈঠকে যে গুরুত্বপূর্ণ 3টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ তার মধ্যে অন্যতম হল বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ । রাজ্যের ক্ষেত্রে বিধান পরিষদ অনেকটা রাজ্যসভার মতো । সে ক্ষেত্রে বিধান পরিষদের সদস্যরা মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারবেন । অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বিধান পরিষদের সদস্য হন তবে তাঁকে আর বিধানসভা ভোটে জিতে আসতে হবে না । রাজ্য মন্ত্রিসভার আজ এই প্রস্তাব এর পর যাবে রাজ্যপালের কাছে । রাজ্যপালের অনুমোদন পেলে সেই প্রস্তাব যাবে বিধানসভায় । সেখানে আলোচনার পর পাশ হলে তা আইনে পরিণত হবে । এবং আইনসভায় আলোচনার মাধ্যমে বিধান পরিষদের নিয়ম নীতি নির্ধারণ করবেন বিধায়করা ।
আরও পড়ুন: ফিরহাদ-সুব্রত-শোভন-মদনদের জামিন মঞ্জুর
বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ ছাড়াও আরও যে দু'টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তার অন্যতম হল সরকারি নিয়োগ নীতি সংক্রান্ত প্রস্তাব । অর্থাৎ সরকারি বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কী নীতি মেনে চলা হবে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নিয়ম তৈরি হবে । তৃতীয় প্রস্তাব হল করোনা চিকিৎসায় বিভিন্ন হাসপাতালে স্যাটেলাইট সেন্টার তৈরি করা । এর ফলে করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলি বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
1969 সালের 21 মার্চ পশ্চিমবঙ্গ আইনসভায় বিধান পরিষদ অবলুপ্তির একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছিল । এরপর ভারতীয় সংসদে পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ (অবলুপ্তি) আইন, 1969 পাশ হয়। 1969 সালের 1 অগস্ট এই পরিষদ অবলুপ্ত হয় । কিন্তু 2011 সালে তৃণমূল সরকার পুনরায় এই পরিষদ গঠনের পরিকল্পনা করে । তবে তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত করা যায়নি ৷ এখন দেখার এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা বাস্তবায়িত করতে পারেন কিনা ।