কলকাতা, 21 জানুয়ারি : বন্দি মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ ও সংশোধনাগারগুলিতে নির্দিষ্ট সংখ্যার থেকে বেশি সংখ্যক বন্দি রাখার বিষয়ে রাজ্যের (Calcutta High Court orders WB Government) রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশের প্রত্যেকটি হাইকোর্টই এই ব্যাপারে স্বতঃস্ফূর্ত মামলা দায়ের করেছে ৷ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চেও স্বতঃস্ফূর্ত মামলা দায়ের হয়েছে ৷
ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট একাধিক আদালত বান্ধবও নিয়োগ করেছে এই মামলায় । আদালত বান্ধবরা রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারগুলিতে বন্দিদের কী পরিস্থিতি সেই বিষয় খতিয়ে দেখে একাধিক রিপোর্ট দিয়েছে । শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে মানবাধিকার সংগঠনের তরফের আইনজীবী অভিযোগ করেন, রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে যতজন থাকার কথা তার থেকে দ্বিগুণ সংখ্যক বন্দি রয়েছে । জেলে থাকাকালীন বন্দির মৃত্যুও হয়েছে কিন্তু এখনও তাদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি, এরকম 42 জনের তথ্য তাদের কাছে রয়েছে । তিনি আদালতে আরও জানান, মালদা সংশোধনাগারে বন্দি থাকার কথা 350 জনের সেখানে বন্দি রয়েছে 1 হাজার 100 জন । গত প্রায় তিন বছর ধরে গোটা দেশ, গোটা বিশ্ব করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াই করছে । এই করোনা আবহেও ঠাসাঠাসি-গাদাগাদি করে বন্দিদের থাকতে হচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সংশোধনাগারগুলির অমানবিক পরিস্থিতি থেকে বন্দিদের রেহাই দেওয়া যায় কি না সেই বিষয়ে বিচার বিবেচনা করছে আদালত ৷
আরও পড়ুন : শত বিক্ষোভেও দমেননি তিনি, আদালতে বুঝিয়ে দিলেন কল্যাণ
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব আগামী 7 মার্চের মধ্যে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এই বিষয়ে সংশোধনাগারে বন্দিদের যে সমস্যাগুলি রয়েছে, তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট আদালতকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শুক্রবার । উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছর ধরে গোটা দেশের বিভিন্ন সংশোধনাগারগুলিতে বন্দিদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে বিভিন্ন আদালতে । উদ্বেগজনক ভাবে দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক 10 জন বন্দির মধ্যে 8 জন বন্দির বয়স পঞ্চাশ বছরের বেশি ৷ করোনা আবহে বয়স্ক লোকেদেরই কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ৷ সুপ্রিম কোর্ট মহামারি আবহে এই বন্দিদের বিষয়ে একাধিক নির্দেশও দিয়েছে । প্যারোলে ছাড়া থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের 14 বছরের বেশি হয়ে গেলে তাদের মামলার বিষয় খতিয়ে দেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া যায় কি না এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বিবেচনা করতে বলেছে শীর্ষ আদালত ।