কলকাতা, 24 মার্চ : বগটুই-কাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি শেষ ৷ তবে বৃহস্পতিবার রায়দান করেনি কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আদালত রায়দান স্থগিত রেখেছে (Calcutta High Court Reserves Order of Rampurhat Massacre Case) ৷ আজ সন্ধ্যার পর অথবা আগামিকাল, এই মামলার রায়ের কপি কলকাতা হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে ।
এদিন এই ঘটনার কেস ডায়েরি আদালতে পেশ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল । আদালতকে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে 31টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে । সিএফএসএলকে খবর দেওয়া হয়েছে । কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় তারা আজকের মধ্যে ঘটনাস্থলে চলে যাবে । প্রত্যক্ষদর্শীদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে । ময়নাতদন্তেরও ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে ৷
এদিকে আজ মামলার শুনানিতে এক মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী সেখানে গিয়ে আজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে । সিসি ক্যামেরা গতকাল আদালতের নির্দেশ মতো বসানো হয়নি ।আজ বসানো হয়েছে ।"
এই নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতকে জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) রাজ্যের যেকোনও জায়গায় যেতে পারেন । সেই ক্ষমতা তাঁর আছে । সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর কাজ চালানো হচ্ছে ।
অন্যদিকে আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্রোপাধ্যায় বলেন, "নন্দীগ্রামের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । এখানে প্রমাণ নষ্ট করে দেওয়ার আগে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিক ।"
সিপিএমের তরফে আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, "কাছাকাছি থানা থাকলেও 164 ধারায় বয়ান নেওয়া হয়নি সাক্ষীর । মৃতদের পরিবারের সদস্যরা ঘরছাড়া । জ্ঞানবন্দ সিংকে কয়লা পাচার মামলায় ইডি সমন পাঠিয়েছিল । সেই কারণেই রাজ্য তাঁকে উঁচু পদে বসিয়েছে । রাজ্য তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে এই মামলার তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে পারে । এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর 14 বছর বয়স । পুলিশ তার কাস্টডি নিয়েছে শোনা যাচ্ছে । কিন্তু সে কোথায় আছে কেউ জানে না ।"
আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "এটা শুধু দু‘-একজনকে মারার ঘটনা নয় । এটা একটা বৃহৎ ষড়যন্ত্র । আনারুল নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশের গ্রেফতার করা উচিত, কিন্তু করা হচ্ছে না । সে শাসকদলের ব্লক সভাপতি । ফলে শাসকদল যে সংস্থা দিয়ে তদন্ত করবে, তা নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না ।" যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়েছে আনারুলকে ৷
আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, "মমতা সবার জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে । মমতাকে অনুব্রত চিঠি দিয়ে জানিয়েছে ভাদু শেখের ব্যাপারে । কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল করেই জানেন, সেখানে কী হয়েছে । ডিজি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বলছেন কী কী সেকশন দিতে হবে এই ঘটনার । এর থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় এই ঘটনার কী তদন্ত হবে । ফায়ার ব্রিগেড অথরিটি জল দিয়ে ঘটনাস্থল ধুয়ে সমস্ত তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে ।"
উল্লেখ্য, গতকাল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল রামপুরহাটের ঘটনার ।
আরও পড়ুন : Anarul Hossain Arrest : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেতেই তৎপর পুলিশ, তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার ‘পলাতক’ আনারুল
