কলকাতা, 20 জানুয়ারি : আমফান ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে দুর্নীতি মামলায় সিএজি-কে তদন্তের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণাণ এবং বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে সিএজিই তদন্ত করবে। এর আগে 1 ডিসেম্বর আমফান ক্ষতিপূরণ বিরুদ্ধে দুর্নীতিসংক্রান্ত মামলায় সিএজি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ কিন্তু রাজ্যের তরফে আদালতের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছিল ৷ আদালত রাজ্যের এই আবেদন খারিজ করল ৷
গতবছরের 1 ডিসেম্বর আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কতজনকে টাকা দেওয়া হয়েছে আর কতজন টাকা পাননি তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সিএজি-কে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, সিএজি-র সঙ্গে যেন সমস্ত রকমের সহযোগিতা করা হয়। 6 জানুয়ারি সিএজি তদন্তের নির্দেশ ফের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। আজ সেই আবেদন খারিজ করল আদালত ৷
গত বছরে 16 মে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে ৷ ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য দেয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার ৷ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের পর পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য 1 হাজার কোটি টাকা সাহায্য করেছিলেন তিনি । পরে দ্বিতীয় দফায় 2707 কোটি টাকা অর্থ সাহায্য করার কথাও কেন্দ্র ঘোষণা করে । কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই অভিযোগ করেন, সরকারি ক্ষতিপূরণ তাঁরা পাননি ৷ গতবছরের 3 অগাস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কাকদ্বীপের বাসিন্দা খয়রুল আনম শেখ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমফানে ৷ কিন্তু তিনি ক্ষতিপূরণের কোনও টাকা পাননি বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। পাশাপাশি আরও চার-পাঁচটি মামলা একই দাবিতে দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আমফান নিয়ে এর আগেও আদালতের কাছে সিওজিকে তদন্তের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার ৷ কিন্তু গত 4 ডিসেম্বর সেই আবেদনও খারিজ করে আদালত ৷
আরও পড়ুন :কৃষি আইন নিয়ে কমিটি রিপোর্ট দেবে, সিদ্ধান্ত নয় : সুপ্রিম কোর্ট
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত কতজন মানুষ আমফান ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তার বিস্তারিত বিবরণ-সহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে রাজ্যের ওয়েবসাইটে। পাশাপাশি আবেদন সত্ত্বেও যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু মামলার শুরু থেকেই রাজ্যের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। প্রথম থেকেই রাজ্যের আচরণে অসন্তুষ্ট ছিল আদালত। ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে অর্থবণ্টন করা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে আদালতকে হলফনামা দেয়নি তারা। মামলাকারী খয়রুল আনম শেখের আইনজীবী সৌমিক শমীক বাগচী বলেন , "আদালত নির্দেশে জানিয়েছে যে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে বেশ কিছু দিন সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও ওটাকেই ডাইরেকটিভ হিসাবে রাখা হচ্ছে তবে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা দিনের পর দিন ধরে যে অসহযোগিতা করছে সেটাও আর করা চলবে না । দ্রুত সিএজি-কে নথিপত্র, রিপোর্ট দিতে হবে।"