কলকাতা, 13 জুলাই: স্বয়ং মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে জমি দখল ও মারধোরের অভিযোগ ৷ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) রুজু মামলা ৷ ঘটনা জানার পরই মামলাকারীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ আদলতের ৷ অবিলম্বে পুলিশকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে বললেন বিচারপতি শম্পা সরকার (Justice Shampa Sarkar) ৷ আদালতের সাফ কথা, জমির মালিক যাতে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি তৈরির কাজ সারতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই ৷
সংশ্লিষ্ট মামলাটি যিনি করেছেন, তাঁর নাম শেখ সাবির ৷ বুধবার তাঁর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতকে জানিয়েছেন, "মামলাকারীকে বারবার হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ এত দিন বাড়ির পুরুষ সদস্যরা ঘরছাড়া ছিলেন ৷ মঙ্গলবার বিকেল থেকে মহিলা ও শিশুদেরও ঘরছাড়া করা হয়েছে ৷ অবিলম্বে মামলাকারীর সুরক্ষার ব্যবস্থা করুক আদালত ৷" অন্যদিকে, এই মামলায় রাজ্যের তরফে আইনজীবী শুভব্রত দত্ত আদালতকে বলেন, "গত 5 জুলাই শেখ সাবির তিলজালা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ পুলিশ সেই অভিযোগের তদন্ত করছে ৷"
আরও পড়ুন: Jihad Word Controversy: 'জেহাদ' মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে, মামলা রুজু আইনজীবীর
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, 4/1 তপসিয়া ফার্স্ট লেনে শেখ সাবিরের পরিবারের একটি 7 কাঠা জমি রয়েছে ৷ সেই জমিতে একটি পুরনো ভাঙাচোরা বাড়ি ছিল ৷ সেই বাড়ি ভেঙে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল শেখ পরিবারের ৷ কিন্ত বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হতেই সমস্যার সূত্রপাত ৷ শেখ সাবিরের অভিযোগ, জাভেদ খানের (Javed Ahmed Khan) ছেলে ফৈয়জ খান (Faiz Ahmed Khan) অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে সেই জমিতে পৌঁছন এবং কাজে বাধা দেন ৷ এমনকী, ফৈয়জ বাঁশ দিয়ে জমিটি ঘিরে ফেলেন বলেও দাবি করেছেন সাবির ৷ আর তারপর থেকেই শুরু হয় হুমকি, ভয় দেখানোর পালা ৷ এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয় শেখ পরিবার ৷ কিন্তু, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ ৷ এমনকী, পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করারও অভিযোগ উঠেছে ৷
এর আগে আলিপুর আদালতে মামলাটি উঠেছিল ৷ সেই সময় দু'দফায় নির্দেশিকা জারি করে আদালত ৷ তাতে বলা হয়, ফৈয়জ খান ওই জমি দখল করে রাখতে পারবেন না ৷ একইসঙ্গে, তিলজলা থানা যাতে শেখ পরিবারকে সবরকম সহযোগিতা করে, সেই নির্দেশও দিয়েছিল আলিপুর আদালত ৷ কিন্তু, তারপরও পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে বলে অভিযোগ ৷ তার জেরেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করেন শেখ সাবির ৷
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এদিন বিচারপতি সরকার বলেন, গত 7 জুন নিম্ন আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছিল ৷ সেই নির্দেশ অনুসারেই নতুন বাড়ি তৈরির কাজ করতে পারবেন শেখ সাবির ৷ এই কাজে তাঁর যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে তিলজলা থানাকেই ৷ তবে, মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে জমি দখল ও মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে এখনই হস্তক্ষেপ করবে না আদালত ৷ কারণ, পুলিশ এই অভিযোগের তদন্ত করছে ৷ সেই তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ৷ কিন্তু, মামলাকারী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যাতে সুরক্ষিত থাকেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকে ৷