কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর : তপন দত্ত খুনের মামলায় (Tapan Dutta Murder Case) সিবিআইকে যুক্ত করতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব । সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের পর বর্তমানে এই মামলার তদন্ত কী পরিস্থিতিতে রয়েছে, তাও জানতে চাইলেন তিনি ।
উল্লেখ্য, হাওড়ার জলাভুমি বাঁচাও আন্দোলনের নেতা তপন দত্ত খুনের প্রায় 11 বছর পর গত 9 জুন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন । ইতিমধ্যে সিবিআই (CBI) তদন্ত শুরুও করে দিয়েছে । সেই নির্দেশের পর তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) নেতা ষষ্ঠী গায়েন হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে মামলা করেন । সেই মামলারই শুনানি চলছে ।
এদিন রাজ্যের আইনজীবী প্রদীপ রায় জানালেন, ইতিমধ্যেই সিবিআই এই মামলায় একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে । প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সিবিআই সেটাই জানাক আদালতে এসে ।’’ এছাড়া মামলার শুনানির লিখিত বক্তব্য আদালতে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি ।
সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য হাজির হলে তাঁকে প্রধান বিচারপতি জানান, তদন্তের কী পরিস্থিতি, সেটা জানাতে হবে আদালতে । আগামী 12 সেপ্টেম্বর 2টোর সময় ফের শুনানি ।
মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী মুকুল রোহতাগি বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) গিয়েছিল । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টকেই মামলার নিস্পত্তি করতে নির্দেশ দেয় । সিঙ্গেল বেঞ্চ মামলা শোনার পর সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল । সিবিআই নতুন করে এফআইআর দায়ের করে এই মামলার তদন্ত শুরু করেছে ।’’
তিনি আরও জানান, গুজরাতের মতো রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটলেও কিছু তদন্তের বিষয় নেই । অথচ এখানে কী এমন হয়েছে যে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন ? সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি মামলা শুনে দ্রুত নির্দেশ দেওয়ার তাড়ায় ছিলেন । তদন্ত একবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই ভাবে ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যায় না । সিঙ্গল বেঞ্চ তাড়াহুড়ো করেছে ।
তিনি আরও বলেন, ‘‘অত্যন্ত বিরল মামলার ক্ষেত্রে যেখানে মনে করা হয় অবিচার হয়েছে, সেখানেই তদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পরও পুনরায় তদন্তভার দেওয়া হয় । এখানে দু’বার চার্জশিট পেশ হয়ে গিয়েছে । এই পরিস্থিতিতে এখানে পুনরায় সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া কতটা যুক্তিপূর্ণ !’’
অন্যদিকে তপন দত্তর পরিবারের তরফে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তপন দত্ত জলাভূমি বাঁচাও আন্দোলন করতে গিয়ে মারা যান । দু’বার আলাদা আলাদা কিছু নাম উঠে আসে চার্জশিটে, যাঁরা শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত । কিছু নাম বাদ দেওয়া হয় । তার মানে ন্যায়বিচারের সঙ্গে আপোষ করা হয়েছে । প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পায়নি । তদন্তের কাজ নিশ্চয় প্রমানপত্র নষ্ট করা নয় ! কিন্তু এখানে সেটা হয়েছে । সুপ্রিম কোর্ট বার বার হাইকোর্টকে বলেছে মামলা শুনতে ।’’
আরও পড়ুন : তপন দত্ত খুনের তদন্তের কী পরিস্থিতি, সিবিআইয়ের কাছে জানতে চাইল হাইকোর্ট