কলকাতা, 12 মে : করোনা আর পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, এই দুইয়ের জেরে সবথেকে খারাপ অবস্থা রাজ্যের বাস মালিকদের । আর তাই এই মুহূর্তেই বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে অনড় রয়েছেন বাস মালিকরা । ডিজেলের দাম প্রায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে । বর্তমানে করোনার কারণে বাস চলছে অর্ধেক । অনেক রুটে যাত্রী নেই বললেই চলে । ফলে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করছেন বাস মালিকরা ।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, বাস ভাড়া না বাড়ালে গাড়ি চালানো দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে । গত বছর থেকে এই পরিস্থিতি চলছে । তার উপর প্রায় প্রতিদিনই ডিজেলের দাম বাড়ছে । তাই বাসভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় নেই । রাজ্যের নতুন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রাজ্যে ইলেকট্রিক বাস পরিষেবা বাড়ানোর কথা বলেছেন । মূলত, দূষণের পাশাপাশি খরচও কমবে । বেসরকারি বাস মালিকরাও যাতে ইলেকট্রিক বাস বেশি করে নামায় তাতে উৎসাহ দিচ্ছে সরকার ।
বেসরকারি বাস মালিকদের বক্তব্য, ইলেকট্রিক বাসের দাম অত্যন্ত বেশি । সেই সঙ্গে পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি । কেন্দ্রীয় সরকার আগেও বহুবার ইলেকট্রিক বাস বেশি করে চালানোর উদ্যোগ নিয়েছিল । বায়ো ডিজেল ও সিএনজিতে গাড়ি চালানোর উদ্যোগ নিয়েছিল । সবই খাতা-কলমে রয়ে গিয়েছে । ইলেকট্রিক বাস চালাতে গেলে যে ধরনের পরিকাঠামো দরকার তৈরি করতে অনেক সময় লাগবে । তৈরি করার দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে । তাছাড়া ইলেকট্রিক বাস কেনার মত আর্থিক ক্ষমতা এখন তাঁদের নেই ।
তপনবাবুর বক্তব্য, “গত বছর বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে আমরা মুখ্যমন্ত্রী দ্বারস্থ হয়েছিলাম । মুখ্যমন্ত্রী একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন । কিন্তু এখনও সেই কমিটির কোনও রিপোর্ট পেশ করা হয়নি । আমরা চাই এই কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করুক । প্রতিদিন গাড়ি চালাতে গিয়ে কত আয়, কত ব্যয় হয় আমাদের, সবই আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি পরিবহণ দফতর ও রাজ্য প্রশাসনকে । তাই সরকার এসব খতিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবে বাস চালাতে গিয়ে কীভাবে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বাস মালিকদের ।”
আরও পড়ুন : কেন্দ্রের নির্দেশে দিল্লিকে কোভ্যাক্সিন দেয়নি ভারত বায়োটেক: বিস্ফোরক সিসোদিয়া
তপন বাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘সরকারি বাস চালাতে গিয়ে ডিজেল কিনতে না পারায় বাস বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । ভলভোগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সরকারি ভর্তুকি সত্ত্বেও সরকারি পরিবহণের যদি এই হাল হয়, তাহলে আমাদের কথা ভাবুন ! আমাদের তো কোনও গৌরী সেন নেই যে টাকাটা লোকসান হলেও দেবে ।’’