কলকাতা, 20 ডিসেম্বর : বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান। বিমান বসু একটি সমীক্ষা রিপোর্টকে সামনে এনে বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারকেই আক্রমণ করেছেন । মানুষের জন্য অন্নের সংস্থানে নজর না দিয়ে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের সমালোচনাও করেছেন আবদুল মান্নান।
একদিকে যখন দিল্লির সীমানায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে, তখন দেশে বেকারত্বের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ । বছরের শেষ মাসেও রেকর্ড পরিমাণ মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে । নভেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ কাজ হারানোর আগে থেকেই অর্থনীতির হাল ফেরানো নিয়ে কেন্দ্র বা রাজ্যের সরকার বিন্দুমাত্র উদ্যোগী নয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। আবদুল মান্নানের দাবি, এখনও পর্যন্ত শুধু এই রাজ্যে 20 লাখ শ্রমিক কর্মচ্যুত হয়েছে। কাজ হারানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সংখ্যাও শূন্যতে গিয়ে নেমেছে।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সি এম আই ই'র ক্রেতা পিরামিড পরিবার পিছু সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে এনে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর দাবি, বামফ্রন্ট সরকারের শাসনকালেও এমন অবস্থা রাজ্যে ঘটেনি । সি এম আই ই'র রিপোর্ট হাতে নিয়ে তিনি বলেন, লকডাউনের সময় এপ্রিলে কর্মহারা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জুন মাসে আনলকে ফের সবকিছু চালু হওয়ায় আবার কর্মসংস্থান কিছু বাড়তে থাকে। কিন্তু বৃদ্ধির হার ধরে রাখা যায়নি। জুলাই, অগাস্ট, সেপ্টেম্বরে কিছু বৃদ্ধি দেখা গেলেও অক্টোবর থেকে অর্থনীতিতে বিপরীত গতি দেখা গেল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই সময় অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর যে কথা বলা হচ্ছিল, তা ঠিক নয়। তাঁর বক্তব্য, অক্টোবরের পর নভেম্বরে দেখা যাচ্ছে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। কেবলমাত্র গত মাসে গোটা দেশে রেকর্ড পরিমাণ মানুষের চাকরি গিয়েছে। দেশের ৯৬ শতাংশ পরিবারের প্রকৃত আয় বিপুল হারে কমে গিয়েছে। এই অবস্থায় সরকার আচ্ছে দিনের কথা কীভাবে বলে প্রশ্ন বিমান বসুর।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু এতদিন জানতেন না যে ভাইপো তোলাবাজ, প্রশ্ন বিমান-মান্নানের
এদিকে আবদুল মান্নান বলেন, আগে কিছু মানুষ বিশ্বাস করত যে মোদি সরকার অর্থনীতির ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাতে অর্থনীতির ভালো হবে। মানুষের আয় বাড়বে। মহামারীর সময় সেই বিশ্বাস চলে গিয়েছে। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। দেশের সরকার মন্দির প্রস্তুত করতে ব্যস্ত। নতুন সংসদ ভবন বিপুল অর্থ খরচ করে তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না । মানুষের পেটে ভাত না দিয়ে, হাতে কাজ না দিয়ে সংসদ ভবন তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। সচ্ছ্বল পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় ভোগ্য পণ্যের বিক্রি যেমন কমেছে। তেমনই গরিব মানুষ আরও গরিব হয়েছেন। এভাবে চলতে পারে না, মানুষ এসবের জবাব দেবেন বলে মন্তব্য করেছে ।