কলকাতা, 15 জুলাই : সংসদের সচিবালয়ের ঠিক করে দেওয়া শব্দের তালিকায় অসংসদীয় কোনও শব্দ নেই বলেই মত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal Assembly Speaker Biman Banerjee) । তিনি মনে করছেন, এ জন্য সংসদের সচিবালয় (Parliament Secretariat) যে তালিকা তৈরি করেছে, তার কোনও প্রয়োজনই ছিল না । বিরোধীরা সব সময় এই ধরনের শব্দগুলো ব্যবহার করে । তাদের কণ্ঠরোধ করা আদৌ সমীচীন হচ্ছে না বলেও মনে করছেন তিনি ।
তাঁর কথায়, রুলস অফ প্রসিডিওর টু কনডাক্ট দ্য বিজনেসের 351 ধারা অনুযায়ী, আলোচনার সময় কোনও শব্দ যদি স্পিকারের মনে হয় তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কাউকে অসম্মান করা হয়েছে, অপ্রাসঙ্গিক, অসংসদীয় অথবা অশোভনীয়- সেক্ষেত্রে অধ্যক্ষের এই ক্ষমতা রয়েছে ওই শব্দ বা বক্তব্যের অংশকে কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার । ওই বক্তব্যের অংশ বা শব্দবন্ধ ছাপা অক্ষরে প্রকাশিত হবে না । যে কোনও অধ্যক্ষ ইচ্ছা করলেই সেই শব্দগুলি বাদ দিতে পারেন । এর জন্য আলাদা করে পুস্তক বা বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন ছিল না ।
উদাহণস্বরূপ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি (Communal Harmony) নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গ টেনে আনেন স্পিকার । তিনি বলেন, ‘‘আলোচনায় কোনও এক পক্ষ যদি নির্দিষ্ট ধর্মের নাম করে অসম্মানসূচক বক্তব্য রাখেন । আর অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর যদি মনে হয় এই বক্তব্য যথাযথ নয় । সে ক্ষেত্রে এর জন্য আলাদা করে কোনও তালিকার প্রয়োজন নেই । অধ্যক্ষ নিজেই তা বাদ দিতে পারেন । শাসক এবং বিরোধী দলের সদস্য বহুক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য রাখার সময় এমন অনেক কড়া শব্দ ব্যবহার করেন, যা বিধানসভার চৌহদ্দিকে ব্যবহার করা যায় না । সে সমস্ত শব্দ আমরা বাদ দিয়ে দিই । এর জন্য কোনও তালিকার প্রয়োজন হয় না ।’’
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘লোকসভার (Lok Sabha) অধ্যক্ষ কেন এই পুস্তিকা বের করেছেন, তা তো তিনি বলতে পারবেন । বিশেষ করে এখানে এমন কিছু শব্দ আছে, যাকে কোনোভাবেই অসংসদীয় শব্দ বলা যায় না । লোকসভার স্পিকার কেন শব্দের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছেন, তা আমি বলতে পারব না । এই নিয়ে বিস্তারিত আমাদের সঙ্গে আলোচনা হলে বলতে পারতাম ।’’
একই সঙ্গে সংসদের চত্বরে ধর্না, বিক্ষোভ, ধর্মীয় আচরণ করা যাবে না বলে যে নির্দেশিকা আর জারি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এগুলি নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার । এ বিষয়ে আমি কী বলব ? তাহলে মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দিতে হয় । ওরা ইচ্ছে করে যা খুশি করতে চাইছে, তা তো আর হতে পারে না । মুখে গণতন্ত্রের কথা বলব, কাজের সময় গণতন্ত্র বিরোধী কাজ করব তার তো হতে পারে না ।’’
আরও পড়ুন : Unparliamentary Words: 'প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনজীবী বলতে পারবেন, বিরোধীরা জুমলাজীবী বললেই অসংসদীয়': অভিষেক