কলকাতা, 27 মার্চ : অবিভক্ত মেদিনীপুর ৷ যার একটা বড় অংশে প্রভাব রয়েছে অধিকারী পরিবারের ৷ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের একটা অংশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয় কাঁথির শান্তিকুঞ্জ থেকে ৷ সেই অধিকারী গড়ের অনেকটা অংশে শনিবার ভোটাররা তাঁদের রায়দান করলেন ৷
কিন্তু দিনভরের সেই ভোট প্রক্রিয়ায় দেখা গেল কিছু বেনজির পরিস্থিতি ৷ এতদিন কাঁথিতে যে ঘটনার কথা ভাবাই যেত না, প্রথম দফার নির্বাচনের দিন সেটাই ঘটে গেল ৷ শান্তিকুঞ্জের ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীর গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হল ৷ ঘটনায় আহত হয়েছেন সৌমেন্দুর গাড়ির চালক ৷
গত দুই দশকে পূর্ব মেদিনীপুর যতগুলি নির্বাচনে সাক্ষী থেকেছে, প্রতিটিতেই অধিকারী পরিবার ছিল ঘাসফুলের সঙ্গে ৷ এখন অধিকারীদের বড় অংশ গেরুয়া শিবিরের অংশীদার ৷ শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে বিজেপির হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন ৷ সৌমেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷
আর শিশির অধিকারী অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদির সভায় উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি গেরুয়া শিবিরের সঙ্গেই আছেন ৷ তার উপর শনিবার ভোট দেওয়ার পর তিনি বিজেপির জয়ের পক্ষেই সওয়াল করেছেন ৷ একমাত্র ব্যতিক্রম দিব্যেন্দু অধিকারী ৷ তমলুকের সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারের হয়ে তোপ দাগছেন বটে ! কিন্তু এখনও সরকারি ভাবে বিজেপির মঞ্চে উপস্থিত হননি ৷
এই পরিস্থিতিতে কাঁথির তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা যে অধিকারী পরিবারের উপর রুষ্ট, তা গত কয়েক মাস ধরেই বোঝা যাচ্ছিল ৷ কিন্তু একেবারে হামলার ঘটনা ঘটে যাবে, তা বোধহয় অনেকেই আঁচ করতে পারেননি ৷
স্বাভাবিক ভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি মেদিনীপুরে অধিকারী গড়ের ভিত আলগা হচ্ছে ? যে অধিকারীদের কথাকেই এতদিন পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে বেদবাক্য হিসেবে ধরা হত, সেই অধিকারীদের হাত থেকে কি রাশ সরে যাচ্ছে ?
তৃণমূল দাবি করছে, শিশির-শুভেন্দুদের এই ভোলবদল মেদিনীপুরের মানুষ মেনে নিতে পারছেন না ৷ তাই এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে ৷ অন্যদিকে অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে ভোটে হেরে যাবে বলেই তৃণমূল এসব করছে ৷
আরও পড়ুন : পদ্মফুলে শিশির-বিন্দু, বড়-অধিকারীর দৃপ্ত ঘোষণায় ঘাসফুলে আরও শ্যাওলা !
পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি আসনে এখনও ভোট বাকি আছে ৷ দ্বিতীয় দফায় আগামী 1 এপ্রিল ওই আসনগুলিতে ভোট হবে ৷ তার পর 2 মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে উত্তরের জন্য ৷ সেদিনই জানা যাবে কতটা অক্ষত রইল অধিকারী গড় ?