কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি : দু'দিন নিখোঁজ থাকার পর বুধবার নাইট শেল্টারে ফিরে আসেন আসুরা বিবি । তারপর থেকেই আসুরার নিরাপত্তায় রয়েছে সিঁথি থানার পুলিশ । এরই মাঝে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে রাজকুমারের ছেলেরা চাপ দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে বলতে বাধ্য করেছিল। যদিও ঘটনার দিন রাতে আসুরা দাবি করেছিলেন, তাঁর সামনে রাজকুমারকে মারধর এবং ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল । হঠাৎ এই বয়ান বদলে কারণ হিসেবে পুলিশি চাপের কথা বলছে সাউ পরিবার ।
গতকাল আসুরা বিবির জবানবন্দী নেন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বলরাম হাজরা । তাঁকে সিঁথি থানার গাড়িতে আনা হয় । তিনঘণ্টা ধরে তাঁর গোপন জবানবন্দী নেন ম্যাজিস্ট্রেট । এর ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়েছে । এদিকে রাজকুমারের ভাই রাকেশ সাউ এবং ছোটো ছেলে বিজয়ের জবানবন্দী নিয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ । তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন আইনজীবী অমর্ত্য দে । লালবাজার থেকে বেরিয়ে রাকেশ বলেন, “ টাকা দিতে না পারার জন্য যেভাবে আমার দাদাকে পিটিয়ে এবং ইলেকট্রিক শক দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে সেই সব তথ্য লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে নির্ভয়ে বলে এসেছি । গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তের প্রতি আমাদের আস্থা আছে । যদিও থানার প্রতি একেবারেই নেই । আমাদের পরিবারের একজনের মৃত্যু হয়েছে, তারপর আমরা কাউকে হুমকি দিতে যাব? পুলিশ এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আসুরা বিবিকে দিয়ে এভাবেই কেস সাজাচ্ছে ।’’ বিজয়ের দাবিও একই । তিনি বলেন, “দু'দিন পরে যেভাবে পুলিশ অভিযুক্তকে খুঁজে পেল তা মনের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে । এখন তো মনে হচ্ছে বাবাকে চোর সাজানোর জন্য পুলিশ চুরির কিছু মালপত্র আমাদের দোকানের আশপাশে ফেলে রাখবে । আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে ।’’
যদিও আসুরাকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে পুলিশের দাবি, “যদি কেউ আমাদের জানায় তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তবে আমরা সেটা বিবেচনা করি । তারপর যে কোনও মানুষকেই নিরাপত্তা দেওয়া হয় ।’’
বাড়ি থেকে জিনিস চুরির অভিযোগে 9 ফেব্রুয়ারি আসুরা বিবিকে গ্রেপ্তার করে সিঁথি থানার পুলিশ ৷ জেরায় তিনি জানান, চুরির জিনিস রাজকুমার সাউকে বিক্রি করেছেন ৷ ওই মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে আটক করা হয় রাজকুমারকে । তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঁথি থানায় । পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় । থানায় মারধরের পাশাপাশি তাঁকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ । আসুরা বিবিও প্রথমে এই দাবি করেছিলেন ৷ পরে তিনি বয়ান বদল করেন ।