কলকাতা, 14 অগস্ট: নিউইয়র্কে আক্রমণের শিকার প্রখ্যাত লেখক সলমন রুশদির (Salman Rushdie book) বিতর্কিত বই 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'-এর (The Satanic Verses) পক্ষে এ বার জোরালো সওয়াল করলেন বাঙালি অভিনেত্রী তথা পরিচালক অপর্ণা সেন (Aparna Sen on Rushdie book)৷ তাঁর অভিযোগ, তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের তোষণের নীতির কারণেই অসাংবিধানিক ভাবে এই বই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ৷ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করে স্বাধীনতার 75 বছরে এই বই থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি ৷ তবে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী কে নটবর সিং (K Natwar Singh) তাঁদের সিদ্ধান্তের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলার কারণেই বইটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ৷
নিউইয়র্কে হামলার শিকার হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি প্রখ্যাত লেখক সলমন রুশদি ৷ দু'দিন আগে নিউইর্য়কের একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তিনি । সেখানে বক্তব্য পেশের ঠিক আগে হারি মাতার নামে এক যুবক আক্রমণ করে তাঁকে । মাত্র 20 সেকেন্ডের মধ্যে ছুরি দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে 10 থেকে 15 বার আক্রমণ চালানো হয় । মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েন লেখক । হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা । আজ লেখকের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে ৷ তাঁকে বের করা হয়েছে ভেন্টিলেটর থেকে ৷
34 বছর আগে 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বইটি লেখার জন্য মৌলবাদীদের তীব্র রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল এই লেখককে ৷ তাঁর বই বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি বহুবার নানা মৌলবাদী সংগঠনের তরফে ধার্য করা হয় তাঁর মাথার দাম ৷ ভারতেও নিষিদ্ধ হয়েছিল 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'৷ রুশদির উপর হামলার ঘটনার পর তাঁর বই নিষিদ্ধ হওয়ার সেই বিতর্কিত অধ্যায় ফের মাথাচাড়া দিয়েছে ৷ এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে টুইট করেছেন অভিনেত্রী তথা পরিচালক অপর্ণা সেন ৷ তিনি তৎকালীন কংগ্রেস সরকারকে একহাত নিয়ে লিখেছেন, "তোষণ নীতির কারণে কংগ্রেস সরকার অসাংবিধানিক ভাবে দ্য স্যাটানিক ভার্সেস নিষিদ্ধ করেছিল, আমি তার তীব্র নিন্দা করি ৷ বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা সরকারের কাছে আমার আর্জি, স্বাধীনতার 75 বছরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক ও আমাদের সংবিধানের প্রতি সম্মান জানানো হোক ৷"
-
I condemn the uncostitutional banning of The Satanic Verses by the Congress govt with its appeasement policies. I urge the govt in power to lift the ban and honour our Constitution on the the 75th anniversary of our Independence.
— Aparna Sen (@senaparna) August 14, 2022 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">I condemn the uncostitutional banning of The Satanic Verses by the Congress govt with its appeasement policies. I urge the govt in power to lift the ban and honour our Constitution on the the 75th anniversary of our Independence.
— Aparna Sen (@senaparna) August 14, 2022I condemn the uncostitutional banning of The Satanic Verses by the Congress govt with its appeasement policies. I urge the govt in power to lift the ban and honour our Constitution on the the 75th anniversary of our Independence.
— Aparna Sen (@senaparna) August 14, 2022
আরও পড়ুন: ভেন্টিলেটর থেকে বেরলেন, কথাও বললেন রুশদি
যদিও গতকালই এই বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের এক মন্ত্রী ৷ 1988 সালে সলমন রুশদির লেখা দ্য স্যাটানিক ভার্সেস বইটি আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজীব গান্ধির সরকার ৷ সেই সময় বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন কে নটবর সিং ৷ শনিবার তিনি সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বলেছেন, সলমন রুশদির নভেল দ্য স্যাটানিক ভার্সেস ভারতের আইনশৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ৷ তিনি বলেছেন, "রাজীব গান্ধি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী করা উচিত ৷ আমি বলেছিলাম, গোটা জীবনে আমি সবসময় বই নিষিদ্ধ করার বিরোধী ৷ তবে যখন আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তখন রুশদির মতো মহান লেখকের বইও নিষিদ্ধ হওয়া উচিত ৷" কংগ্রেস সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত ছিল বলে দাবি করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, "আমি বলেছিলাম, সমগ্র মুসলিম বিশ্ব জ্বলে উঠবে, আমাদের বহু সংখ্যক মুসলিম রয়েছে ৷ এ ছাড়াও সেই সময়ে বইটিতে যা ছিল, তা গ্রহণযোগ্য নয় ৷"
1988 সালে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিতর্কের মুখে পড়ে সলমন রুশদির দ্য স্যাটানিক ভার্সেস ৷ মুসলিম ধর্মবিশ্বাসে আঘাতের অভিযোগে বিভিন্ন দেশে এই বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় ৷ 1989 সালে ইরানের প্রয়াত নেতা আয়াতোল্লাহ রুহোল্লাহ খোমিনেনি সলমন রুশদিকে হত্যা করার নিদান দিয়ে ফতোয়া জারি করেছিলেন ৷ বহু বছর এই লেখককে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়েছে ব্রিটিশ প্রশাসন ৷ বহুবার তাঁর কাছে এসেছে প্রাণনাশের হুমকি ৷ 1991 সালের জুলাই মাসে হত্যা করা হয় বইটির জাপানি অনুবাদককে ৷ তার কয়েক মাস পরই এক ইতালীয় অনুবাদককে কোপানো হয় এবং গুলি করা হয় বইটির নরওয়ের প্রকাশককে ৷