ETV Bharat / city

দুই প্রধান শিক্ষকের বদলি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক, উঠল দাবি

author img

By

Published : Mar 24, 2020, 10:58 PM IST

Updated : Mar 25, 2020, 9:29 PM IST

শিক্ষক বদলির ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছে শিক্ষক মহলের একাংশ ।

কলকাতা, 24 মার্চ: মিড ডে মিলের জন্য পড়ুয়াপিছু 2 কেজি চাল ও 2 কেজি আলু বিতরণের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগে গতকাল কলকাতার দু'টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে । ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যের শিক্ষক মহলের একাংশ । অবিলম্বে স্কুল শিক্ষা দপ্তর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক বলে তাদের দাবি। ঘটনার দিনই কেন তড়িঘড়ি ওই দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল? কেন তাঁদের প্রথমে শো-কজ় করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হল না? এই প্রশ্ন তুলে গোটা বিষয়টিই পূর্বপরিকল্পিত ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে অভিযোগ করেছে তারা ।


গতকাল লকডাউন শুরুর আগে জরুরি ভিত্তিতে দুপুর 3টে পর্যন্ত মিড ডে মিলের জন্য 2 কেজি করে চাল ও আলু বিতরণের কাজ চলেছে স্কুলে স্কুলে । স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, পড়ুয়াদের স্কুলে আসা একেবারেই নিষিদ্ধ । শুধু অভিভাবকদের মধ্যেই চাল-আলু বিতরণ করতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সেই নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগ উঠেছিল কলকাতার দু'টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । দু'জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, তাঁরা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইন অমান্য করে কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিভাবকদের পরিবর্তে পড়ুয়াদের স্কুলে এসে চাল-আলু সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছেন। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য ও যাদবপুরের কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকালই তাঁদেরকে শাস্তিমূলক বদলি করে দেয় স্কুল শিক্ষা দপ্তর । তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে ।


গতকালের এই ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষক মহলের একাংশ । কেন প্রথমে শো-কজ় করে ওই দুই প্রধান শিক্ষককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হল না, কোরোনা ভাইরাস নিয়ে যে জরুরি অবস্থা চলছে তার মধ্যেই কেন তড়িঘড়ি শাস্তিমূলক বদলি করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন এই বদলি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে।

স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, "এটা একেবারে অনৈতিক । আমরা রাজ্যজুড়ে যখন এইরকম একটা পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেশন ডিলারের কাজটা করলাম যেটার আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, সেখানে দাঁড়িয়ে আমাদের ধন্যবাদ আশা করার একটা জায়গা ছিল। সারা রাজ্যে সেদিন অচলাবস্থা ও তার আগের দিন জনতা কারফিউ, সবকিছু অসহযোগিতার মধ্যে যেভাবে জরুরি ভিত্তিতে কাজটা করা হয়েছে তাতে প্রধান শিক্ষকদের প্রশংসা করার প্রয়োজনীয়তা ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে দু'জনকে শাস্তি দিয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তর এটা প্রমাণ করল যে, আমরা যে কাজটা করছি সেই কাজটা গুরুত্বহীন। প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী যাঁরা এই কাজটা করলেন এটা তাদের প্রতি অবমাননাকর। ছাত্র-ছাত্রীদের তো আমরা ডাকিনি। কেউ যদি চলে আসে অতি উৎসাহিত হয়ে সেখানে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কী করার থাকে। সারা রাজ্যে কিন্তু ছাত্র-ছাত্রী এসেছে, শুধু ওই দুটো স্কুলে নয়। শাস্তি দিলে সবাইকে শাস্তি দিক। আমরা সারা রাজ্যের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা শাস্তি পাই। কেন শুধু ওই দুজন পাবেন। স্কুল শিক্ষা দপ্তর কেন এত জরুরি ভিত্তিতে এটা করতে গেল জানি না। স্কুল খুললে তদন্ত করে সবটা করতে পারত। আমরা আমাদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেতাম। আত্মপক্ষ সমর্থনের তো একটা সুযোগ থাকে, সেটাও দেয়নি। এটা মনে হচ্ছে এটা প্রি-মোটিভেটেড এবং প্রি-প্ল্যানড। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি।"


BJP টিচার্স সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, "BJP টিচার্স সেল পশ্চিমবঙ্গের তরফে আমরা দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা ওই প্রধান শিক্ষকদের পাশে আছি, কথাও বলেছি। তাঁরা ছাত্রদের অভিভাবকদের সঙ্গে আসার জন্য বলেননি। তা সত্ত্বেও যদি কোনও অভিভাবক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আসে তার দায় কার? এর জন্য শিক্ষা দপ্তর শো-কজ় করল না কেন? তাহলেই কারণ জানতে পারত। সেটা না করে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত ওই দুজন শিক্ষক সহ সকল শিক্ষকের কাছে মানহানিকর। প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের প্রশাসনিক বদলির বিরুদ্ধে আমরা আগেও হাইকোর্টে গেছি ও স্থগিতাদেশ পেয়েছি। সুতরাং, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকলে রুখে দাঁড়ান , একজন শিক্ষকের মতো মেরুদণ্ড সোজা রেখে প্রতিবাদ করার জন্য সকলের কাছে আহ্বান করছি।"

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (ABTA) সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, "অন্যায়ভাবে কাউকে প্রতিহিংসামূলক বদলির বিরোধিতা করছি। এ ব্যাপারে আমরা এর আগেও মুভমেন্ট করেছি। আমাদের সংগঠনের সদস্য হোক না হোক আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে চিরকাল প্রতিবাদ করব। অন্যায়ভাবে করা হলে অবিলম্বে এটা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। " সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "সরকার নোটিফিকেশন করল চাল-আলু দেব। আবার সেই নোটিফিকেশনের জন্য যাঁরা এই কাজটা করার জন্য গেল তার জন্য আমি প্রশাসনকে দায়ি করে ট্রান্সফার করে দিলাম। সেটা কোনওভাবেই মানা যায় না। প্রশাসনের আরও আরও অনেক সচেতন, আরও অনেক বেশি মানবিকবোধ দেখানো উচিত ছিল। তাঁদের বোঝা উচিত ছিল যে, কোন পরিস্থিতিতে বাড়ির বাচ্চাকে বাড়ির লোক পাঠান। এই জায়গাটা দেখা উচিত ছিল। একটা বাচ্চাকে পাঠিয়েছে মানে ধরে নিতে হবে তাঁর আর করণীয় কিছু ছিল না। এই মানবিক মুখটা প্রশাসন দেখাতে পারল না। এটা সমালোচনার কোনও ভাষা আমাদের নেই। প্রচণ্ড সমালোচনার যোগ্য কাজ। এটা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়।"

কোনও কোনও শিক্ষক সংগঠন আবার মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, "কোরোনা সংক্রমণ রুখতে সারা দেশজুড়ে জনতা কারফিউ পালিত হয়েছে, লকডাউন চলছে। সমস্ত প্রকার জমায়েত নিষিদ্ধ, পরিবহন ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ। একাদশ শ্রেণি ও উচ্চ মাধ্যমিক সহ সমস্ত প্রকার পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় অত্যন্ত আবশ্যিক। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও শিশুর পুষ্টির অজুহাতে স্কুলে স্কুলে চাল-আলু বিলির সরকারি নির্দেশিকা ছিল বর্তমান পরিস্থিতির পরিপন্থী। এই বিলি স্থগিত রাখার জন্য আমাদের শিক্ষক সংগঠন সহ অন্যান্য সংগঠন এবং শিক্ষক সমাজ আবেদন জানিয়েছিল। শিক্ষা দপ্তর নির্দেশিকায় যে শুধু অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে আসবার কথা বলা হয়েছিল সেটাও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সঠিক ছিল না বলে আমরা মনে করি। এই পরিস্থিতিতে দু'জন প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকী তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগটুকুও দেওয়া হয়নি। যা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থী। সমিতির পক্ষ থেকে আমরা সরকারের এই স্বৈরাচারী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করছি এবং তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।"

কলকাতা, 24 মার্চ: মিড ডে মিলের জন্য পড়ুয়াপিছু 2 কেজি চাল ও 2 কেজি আলু বিতরণের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগে গতকাল কলকাতার দু'টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে । ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যের শিক্ষক মহলের একাংশ । অবিলম্বে স্কুল শিক্ষা দপ্তর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক বলে তাদের দাবি। ঘটনার দিনই কেন তড়িঘড়ি ওই দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল? কেন তাঁদের প্রথমে শো-কজ় করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হল না? এই প্রশ্ন তুলে গোটা বিষয়টিই পূর্বপরিকল্পিত ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে অভিযোগ করেছে তারা ।


গতকাল লকডাউন শুরুর আগে জরুরি ভিত্তিতে দুপুর 3টে পর্যন্ত মিড ডে মিলের জন্য 2 কেজি করে চাল ও আলু বিতরণের কাজ চলেছে স্কুলে স্কুলে । স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, পড়ুয়াদের স্কুলে আসা একেবারেই নিষিদ্ধ । শুধু অভিভাবকদের মধ্যেই চাল-আলু বিতরণ করতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সেই নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগ উঠেছিল কলকাতার দু'টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । দু'জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, তাঁরা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইন অমান্য করে কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিভাবকদের পরিবর্তে পড়ুয়াদের স্কুলে এসে চাল-আলু সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছেন। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য ও যাদবপুরের কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকালই তাঁদেরকে শাস্তিমূলক বদলি করে দেয় স্কুল শিক্ষা দপ্তর । তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে ।


গতকালের এই ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষক মহলের একাংশ । কেন প্রথমে শো-কজ় করে ওই দুই প্রধান শিক্ষককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হল না, কোরোনা ভাইরাস নিয়ে যে জরুরি অবস্থা চলছে তার মধ্যেই কেন তড়িঘড়ি শাস্তিমূলক বদলি করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন এই বদলি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে।

স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, "এটা একেবারে অনৈতিক । আমরা রাজ্যজুড়ে যখন এইরকম একটা পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেশন ডিলারের কাজটা করলাম যেটার আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, সেখানে দাঁড়িয়ে আমাদের ধন্যবাদ আশা করার একটা জায়গা ছিল। সারা রাজ্যে সেদিন অচলাবস্থা ও তার আগের দিন জনতা কারফিউ, সবকিছু অসহযোগিতার মধ্যে যেভাবে জরুরি ভিত্তিতে কাজটা করা হয়েছে তাতে প্রধান শিক্ষকদের প্রশংসা করার প্রয়োজনীয়তা ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে দু'জনকে শাস্তি দিয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তর এটা প্রমাণ করল যে, আমরা যে কাজটা করছি সেই কাজটা গুরুত্বহীন। প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী যাঁরা এই কাজটা করলেন এটা তাদের প্রতি অবমাননাকর। ছাত্র-ছাত্রীদের তো আমরা ডাকিনি। কেউ যদি চলে আসে অতি উৎসাহিত হয়ে সেখানে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কী করার থাকে। সারা রাজ্যে কিন্তু ছাত্র-ছাত্রী এসেছে, শুধু ওই দুটো স্কুলে নয়। শাস্তি দিলে সবাইকে শাস্তি দিক। আমরা সারা রাজ্যের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা শাস্তি পাই। কেন শুধু ওই দুজন পাবেন। স্কুল শিক্ষা দপ্তর কেন এত জরুরি ভিত্তিতে এটা করতে গেল জানি না। স্কুল খুললে তদন্ত করে সবটা করতে পারত। আমরা আমাদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেতাম। আত্মপক্ষ সমর্থনের তো একটা সুযোগ থাকে, সেটাও দেয়নি। এটা মনে হচ্ছে এটা প্রি-মোটিভেটেড এবং প্রি-প্ল্যানড। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি।"


BJP টিচার্স সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, "BJP টিচার্স সেল পশ্চিমবঙ্গের তরফে আমরা দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা ওই প্রধান শিক্ষকদের পাশে আছি, কথাও বলেছি। তাঁরা ছাত্রদের অভিভাবকদের সঙ্গে আসার জন্য বলেননি। তা সত্ত্বেও যদি কোনও অভিভাবক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আসে তার দায় কার? এর জন্য শিক্ষা দপ্তর শো-কজ় করল না কেন? তাহলেই কারণ জানতে পারত। সেটা না করে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত ওই দুজন শিক্ষক সহ সকল শিক্ষকের কাছে মানহানিকর। প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের প্রশাসনিক বদলির বিরুদ্ধে আমরা আগেও হাইকোর্টে গেছি ও স্থগিতাদেশ পেয়েছি। সুতরাং, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকলে রুখে দাঁড়ান , একজন শিক্ষকের মতো মেরুদণ্ড সোজা রেখে প্রতিবাদ করার জন্য সকলের কাছে আহ্বান করছি।"

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (ABTA) সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, "অন্যায়ভাবে কাউকে প্রতিহিংসামূলক বদলির বিরোধিতা করছি। এ ব্যাপারে আমরা এর আগেও মুভমেন্ট করেছি। আমাদের সংগঠনের সদস্য হোক না হোক আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে চিরকাল প্রতিবাদ করব। অন্যায়ভাবে করা হলে অবিলম্বে এটা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। " সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "সরকার নোটিফিকেশন করল চাল-আলু দেব। আবার সেই নোটিফিকেশনের জন্য যাঁরা এই কাজটা করার জন্য গেল তার জন্য আমি প্রশাসনকে দায়ি করে ট্রান্সফার করে দিলাম। সেটা কোনওভাবেই মানা যায় না। প্রশাসনের আরও আরও অনেক সচেতন, আরও অনেক বেশি মানবিকবোধ দেখানো উচিত ছিল। তাঁদের বোঝা উচিত ছিল যে, কোন পরিস্থিতিতে বাড়ির বাচ্চাকে বাড়ির লোক পাঠান। এই জায়গাটা দেখা উচিত ছিল। একটা বাচ্চাকে পাঠিয়েছে মানে ধরে নিতে হবে তাঁর আর করণীয় কিছু ছিল না। এই মানবিক মুখটা প্রশাসন দেখাতে পারল না। এটা সমালোচনার কোনও ভাষা আমাদের নেই। প্রচণ্ড সমালোচনার যোগ্য কাজ। এটা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়।"

কোনও কোনও শিক্ষক সংগঠন আবার মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, "কোরোনা সংক্রমণ রুখতে সারা দেশজুড়ে জনতা কারফিউ পালিত হয়েছে, লকডাউন চলছে। সমস্ত প্রকার জমায়েত নিষিদ্ধ, পরিবহন ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ। একাদশ শ্রেণি ও উচ্চ মাধ্যমিক সহ সমস্ত প্রকার পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় অত্যন্ত আবশ্যিক। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও শিশুর পুষ্টির অজুহাতে স্কুলে স্কুলে চাল-আলু বিলির সরকারি নির্দেশিকা ছিল বর্তমান পরিস্থিতির পরিপন্থী। এই বিলি স্থগিত রাখার জন্য আমাদের শিক্ষক সংগঠন সহ অন্যান্য সংগঠন এবং শিক্ষক সমাজ আবেদন জানিয়েছিল। শিক্ষা দপ্তর নির্দেশিকায় যে শুধু অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে আসবার কথা বলা হয়েছিল সেটাও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সঠিক ছিল না বলে আমরা মনে করি। এই পরিস্থিতিতে দু'জন প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকী তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগটুকুও দেওয়া হয়নি। যা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থী। সমিতির পক্ষ থেকে আমরা সরকারের এই স্বৈরাচারী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করছি এবং তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।"

Last Updated : Mar 25, 2020, 9:29 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.