কলকাতা, 13 জুন: কলকাতা এবং শহরতলিতে সক্রিয় রয়েছে নকল মদ তৈরির চক্র। তার প্রমাণ পাওয়া গেল আরও একবার। আজ জোড়াসাঁকো থানা এলাকায় অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। আর তাতে উদ্ধার হয়েছে বিদেশি মদের প্রচুর প্যাকেট এবং লেবেল। ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজনকে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নকল মদের কারবারিদের হদিশ পেতে চাইছে পুলিশ।
লকডাউনের মাঝে বন্ধ ছিল সব মদের দোকান। তার জেরে রীতিমতো ফাঁপরে পড়েন মদ্যপায়ীরা। অনেকেই মদের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ছিলেন এদিক-ওদিক। আর এর সুযোগ নিচ্ছিল অসাধু কারবারিরা। এখনও অনেক কম সময় খোলা খাচ্ছে মদের দোকান। সেই সুযোগে রাতের শহর এবং শহরতলির অনেক জায়গাতেই গোপনে বিক্রি হচ্ছ মদ। পুলিশ কর্তাদের আশঙ্কা, এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভেজাল মদের কারবরিরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে আবগারি দপ্তর। সক্রিয় রয়েছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চও। গত 24 মার্চ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ খবর পায় 28/H/4 ক্যানাল রোডে চলছে বেআইনি মদের কারবার। সেখানে হানা দেয় গোয়েন্দারা। হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় কিষান ঘোষ নামে এক বেআইনি মদের ব্যবসায়ীকে। তার কাছে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে উদ্ধার হয় প্রায় 513 লিটার মদ। গত 2 এপ্রিল 12/2 চৌভাগা রোডে তল্লাশি চালায় আবগারি দপ্তর এবং পুলিশ। সেখানে 28 বছরের করণ হেলা নামে এক বেআইনি মদের কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছে কুড়ি লিটারের বেশি মদ উদ্ধার হয়। দুটি ক্ষেত্রেই মদের নমুনা ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। কারণ আবগারি দপ্তরের কর্তাদের আশঙ্কা ছিল, ওই মদ ভেজাল। টেস্ট রিপোর্টে দেখা যায় বেশকিছু নমুনা নকল মদের।
কলকাতার বেআইনি মদ কারবারের বেশিরভাগটাতেই সাপ্লাই হয় ওই ভেজাল মদ। মূলত বজবজ,মহেশতলা, তারাতলা, গার্ডেনরিচ, রাজারহাট, টেংরা, তপসিয়া, উত্তর শহরতলির বেশ কিছু জায়গায় তৈরি হয় ওই ভেজাল মদ। বিগত দিনে তল্লাশি চালিয়ে বন্ধ করা হয়েছিল সেই কারবার। ফেব্রুয়ারি মাসে তারাতলা থানা এলাকার ব্রেসব্রিজের বস্তিতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চালানো হয় অভিযান। পৃথক দুটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু নামী ব্র্যান্ডের মদের বোতল। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু লেবেল। তার তদন্ত রিপোর্ট বলছে, সস্তার কোনও দেশি মদের সঙ্গে রং এবং জল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল ওই ভেজাল মদ। তারপর তা বাজারজাত করা হচ্ছিল। পুলিশি অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর নকল মদের বোতল। আর আজ জোড়াসাঁকো থানা এলাকায় নীলমাধব সেন স্ট্রিটে উদ্ধার হয় 8 কার্টুন বিভিন্ন নামী বিদেশি মদের লেভেল এবং প্যাকেট। ঘটনায় মহম্মদ শাহিম নামে এক ব্যক্তি যুক্ত। তার বিরুদ্ধে কপিরাইট অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।