দুর্গাপুর, 20 ফেব্রুয়ারি : আজ ১৬ দিন অবস্থান বিক্ষোভরত অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত কারখানার কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে বামেদের সমস্ত শ্রমিক সংগঠন ও INTUC মিছিল করে গেলেন। ''দুর্গাপুর বাঁচাও''-এর ডাক দিলেন এই মিছিল থেকে । রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রায় 1400 জন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক DSP-র আবাসনে আছেন । সেই আবাসনের লিজ় অথবা লাইসেন্স দেওয়ার আবেদন নিয়ে আজ ১৬ দিন ধরে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নগর প্রশাসন ভবনের সামনে পরিবার নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন ।
২০০৫ সাল থেকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের অবাসনের লিজ় অথবা লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করেছে SAIL কর্তৃপক্ষ । অথচ দেশের SAIL-র অধীনস্থ অন্য ইস্পাত কারখানার শ্রমিকরা অবসরের পরে যে যে আবাসনে আছেন তাঁদের সেই আবাসনগুলি লিজ় অথবা লাইসেন্সের মাধ্যমে বসবাসের অধিকার দেওয়া হয়েছে । এমনকী দুর্গাপুরেই অপর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ASP কারখানার শ্রমিকদেরও আবাসনের লিজ় ও লাইসেন্স দেওয়া হয় । কিন্তু দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এই ১৪০০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ২০০৫ এর পর থেকে আর আবাসনের লিজ় বা লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। এই শ্রমিকরা গড়ে তোলেন "স্টিল এমপ্লয়িজ় ফোরাম" বা SEF। এতদিন পর্যন্ত মাঝে মধ্যেই বিক্ষিপ্ত আবাসনের দাবিতে আন্দোলন করতেন এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা । কিন্তু তাতে কাজ হয়নি । তাই এবার আবাসনের দাবিতে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকরা তাঁদের পরিবার নিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নগর প্রশাসন ভবনের সামনে আজ ১৬ দিন লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ করছেন । দু'দিন আগেই তাঁদের এই আন্দোলনে এসে যোগ দেন দুর্গাপুরের CPI(M) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ও TMC ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তাঁরা দুজনেই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের কথা বলেন । অবসরপ্রাপ্তদের বক্তব্য়, সারাজীবন ইস্পাত কারখানায় কাজ করার পরেও আবাসন পাওয়া থেকে তাঁরা বঞ্চিত । অথচ SAIL-র অন্যান্য কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা পেয়েছেন আবাসন । SAIL-এর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের পাশাপাশি এই শ্রমিকরা দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন ।
আজ বামেদের সমস্ত শ্রমিক সংগঠন ও INTUC-র নেতা-কর্মীরা মিছিল করে দুর্গাপুর বাঁচাও এর ডাক দিয়ে এই অবসরপ্রাপ্ত আন্দোলনরত প্রবীণদের পাশে এসে দাঁড়ান । DSP কর্তৃপক্ষের আচরণের প্রতিবাদে এই সংগঠন লড়াই চালাবেন বলে আশ্বাস দেন । এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা যেহেতু অবসরের পরেও আবাসন ছাড়েননি তাই তাঁদের গ্র্যাচুইটির কোটি কোটি টাকা SAIL-এর কাছে জমা । যে টাকা আজ দীর্ঘ কয়েকদশক পড়ে থাকলেও তা সুদে বাড়া তো দূর-অস্ত, উলটে এই টাকা থেকেই কাটা হচ্ছে আবাসনে থাকার ভাড়া ।