ETV Bharat / city

"50 টাকা আয়ের 20 টাকা মালিককে দিলে খাব কী"

কোরোনা, লকডাউন এই শব্দগুলি তাঁদের কাছে বিভীষিকা ৷ খদ্দের না পাওয়ায় সংসার কোনওরকমে চলছে বর্ধমানের রিকশাচালক থেকে টোটোচালকদের ৷ এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় তাঁরা ৷

author img

By

Published : Sep 28, 2020, 8:18 PM IST

ছবি
ছবি

বর্ধমান, 28 সেপ্টেম্বর : লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই রুটি রোজগারের টান পড়তে শুরু করেছিল। আনলক ফোরে ছবিটা কিছুটা বদলালেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি । বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন রিকশা চালক ও টোটো চালকেরা। তাঁদের ভাবনা একটাই, কবে লোকাল ট্রেন চালু হবে ।


লকডাউনের আগে বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম । দুই চাকা গাড়ি বা সাইকেল নিয়ে পথ চলা দূরে থাক হেঁটে রাস্তা পারাপার করা যেত না। একদিকে রিকশা লাইন, অন্যদিকে অটোচালকদের লম্বা লাইন । বর্ধমান স্টেশন থেকে বের হওয়ার পরে বাঁদিকের ফাঁকা জায়গায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকত শয়ে শয়ে টোটো। কেউ স্টেশন থেকে যাবে বীরহাটা, তেলিপুকুর, কেউ নবাবহাট, কেউ কার্জনগেট কিংবা কেউ আলিশা বাসস্ট্যান্ড। রাতের দিকে স্টেশনে নামার পরে কিছুটা বেশি ভাড়া গুনতে হলেও গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর জন্য টোটোর অভাব হত না । দেখা মিলত রিকশারও। কিন্তু টোটোর সঙ্গে কম্পিটিশনে পেরে না ওঠায় রিকশা চালকেরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছিলেন। তবে কোনওরকমে সংসারটা অন্তত চলে যেত । টোটো চালকেরা দিনের শেষে 700-800 টাকা আয় করলেও রিকশা চালকরাও দিনে গড়ে তিন চারশো টাকা আয় করতেন । কিন্তু লকডাউন সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে ছবিটা।


আনলক পর্যায়ে টোটো রিকশা চলাচল শুরু হলেও রেল বন্ধ থাকায় সেভাবে প্যাসেঞ্জার মিলছে না । ফলে প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায় স্টেশনের বাইরে ঠায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে রিকশা, টোটো চালকদের। দিনের শেষে টোটো চালকদের গড়ে আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দু-তিনশো টাকায়। রিকশা চালকেরা দিনে এক-দেড়শো টাকা রোজকার করতেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। টোটোর ক্ষেত্রে কেউ লোন নিয়ে টোটো কিনেছেন। আবার কেউবা দিনে 300 টাকা ভাড়ার বিনিময়ে টোটো চালাচ্ছেন। টোটোর ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য আবার কারও খরচ হচ্ছে আশি থেকে একশো টাকা। ফলে দিনে গড়ে দু তিনশো টাকা আয় হওয়ায় দিনের শেষে লাভের মুখ তাঁরা দেখতে পারছেন না। এছাড়া যাঁরা লোন নিয়ে টোটো কিনেছেন, রোজগার না থাকায় সেই লোন শোধ করতে পারছেন না। অভিযোগ, লোন শোধ না দিতে পারায় বাড়িতে এসে শাসিয়ে যাচ্ছে লোন সংস্থাগুলি।

কোনওদিন রিকশা চালিয়ে 50 টাকা রোজগার হয়


রিকশা চালকদের অবস্থা আরও খারাপ। তাদের এমনই অবস্থা যে দিনে কুড়ি থেকে তিরিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাবদ দেওয়ার কথা ভাবতেই আঁতকে উঠছেন। বর্ধমান স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে জিটি রোডে উঠলেই ডানদিকে রিকশা স্ট্যান্ড। ট্রেনের উপরেই তাঁদের জীবন নির্ভরশীল। এমনিতেই টোটোর কারণে তাঁদের রুজি রোজগারে টান পড়েছিল। লকডাউনে অবস্থা খুবই খারাপ হয়েছিল। কিন্ত আনলক ফোরে ট্রেন চালু না হওয়ায় অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি। সারাদিনে রিকশা টেনে এক-দেড়শো টাকার বেশি হয় না। এর মধ্যে কুড়ি টাকা দিতে হয় রিকশার মালিককে। এমনও দিন যায় যেদিন সারাদিনে চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা রোজগার হয়। সেখান থেকে কুড়ি টাকা দেওয়ার কথা ভাবলেই তারা আঁতকে ওঠেন। বলেন, 50 টাকার মধ্যে 20 টাকা মালিককে দিলে খাব কী ।

টোটো চালক থেকে রিকশা চালক সবার একটাই প্রার্থনা, দ্রুত লোকাল ট্রেন চালু হোক।

বর্ধমান, 28 সেপ্টেম্বর : লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই রুটি রোজগারের টান পড়তে শুরু করেছিল। আনলক ফোরে ছবিটা কিছুটা বদলালেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি । বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন রিকশা চালক ও টোটো চালকেরা। তাঁদের ভাবনা একটাই, কবে লোকাল ট্রেন চালু হবে ।


লকডাউনের আগে বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম । দুই চাকা গাড়ি বা সাইকেল নিয়ে পথ চলা দূরে থাক হেঁটে রাস্তা পারাপার করা যেত না। একদিকে রিকশা লাইন, অন্যদিকে অটোচালকদের লম্বা লাইন । বর্ধমান স্টেশন থেকে বের হওয়ার পরে বাঁদিকের ফাঁকা জায়গায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকত শয়ে শয়ে টোটো। কেউ স্টেশন থেকে যাবে বীরহাটা, তেলিপুকুর, কেউ নবাবহাট, কেউ কার্জনগেট কিংবা কেউ আলিশা বাসস্ট্যান্ড। রাতের দিকে স্টেশনে নামার পরে কিছুটা বেশি ভাড়া গুনতে হলেও গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর জন্য টোটোর অভাব হত না । দেখা মিলত রিকশারও। কিন্তু টোটোর সঙ্গে কম্পিটিশনে পেরে না ওঠায় রিকশা চালকেরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছিলেন। তবে কোনওরকমে সংসারটা অন্তত চলে যেত । টোটো চালকেরা দিনের শেষে 700-800 টাকা আয় করলেও রিকশা চালকরাও দিনে গড়ে তিন চারশো টাকা আয় করতেন । কিন্তু লকডাউন সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে ছবিটা।


আনলক পর্যায়ে টোটো রিকশা চলাচল শুরু হলেও রেল বন্ধ থাকায় সেভাবে প্যাসেঞ্জার মিলছে না । ফলে প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায় স্টেশনের বাইরে ঠায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে রিকশা, টোটো চালকদের। দিনের শেষে টোটো চালকদের গড়ে আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দু-তিনশো টাকায়। রিকশা চালকেরা দিনে এক-দেড়শো টাকা রোজকার করতেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। টোটোর ক্ষেত্রে কেউ লোন নিয়ে টোটো কিনেছেন। আবার কেউবা দিনে 300 টাকা ভাড়ার বিনিময়ে টোটো চালাচ্ছেন। টোটোর ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য আবার কারও খরচ হচ্ছে আশি থেকে একশো টাকা। ফলে দিনে গড়ে দু তিনশো টাকা আয় হওয়ায় দিনের শেষে লাভের মুখ তাঁরা দেখতে পারছেন না। এছাড়া যাঁরা লোন নিয়ে টোটো কিনেছেন, রোজগার না থাকায় সেই লোন শোধ করতে পারছেন না। অভিযোগ, লোন শোধ না দিতে পারায় বাড়িতে এসে শাসিয়ে যাচ্ছে লোন সংস্থাগুলি।

কোনওদিন রিকশা চালিয়ে 50 টাকা রোজগার হয়


রিকশা চালকদের অবস্থা আরও খারাপ। তাদের এমনই অবস্থা যে দিনে কুড়ি থেকে তিরিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাবদ দেওয়ার কথা ভাবতেই আঁতকে উঠছেন। বর্ধমান স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে জিটি রোডে উঠলেই ডানদিকে রিকশা স্ট্যান্ড। ট্রেনের উপরেই তাঁদের জীবন নির্ভরশীল। এমনিতেই টোটোর কারণে তাঁদের রুজি রোজগারে টান পড়েছিল। লকডাউনে অবস্থা খুবই খারাপ হয়েছিল। কিন্ত আনলক ফোরে ট্রেন চালু না হওয়ায় অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি। সারাদিনে রিকশা টেনে এক-দেড়শো টাকার বেশি হয় না। এর মধ্যে কুড়ি টাকা দিতে হয় রিকশার মালিককে। এমনও দিন যায় যেদিন সারাদিনে চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা রোজগার হয়। সেখান থেকে কুড়ি টাকা দেওয়ার কথা ভাবলেই তারা আঁতকে ওঠেন। বলেন, 50 টাকার মধ্যে 20 টাকা মালিককে দিলে খাব কী ।

টোটো চালক থেকে রিকশা চালক সবার একটাই প্রার্থনা, দ্রুত লোকাল ট্রেন চালু হোক।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.