আসানসোল, 16 জুলাই : কখনও ভুয়ো সাংবাদিক, কখনও ভুয়ো পুলিশ, কখনও বা ভুয়ো সিবিআই আধিকারিক । চিত্তরঞ্জনের শ্মশানের মুন্না ডোম ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণা করে হয়ে উঠেছিল লাখ লাখ টাকার মালিক । সাম্প্রতিককালে রীতিমতো বিলাসবহুল জীবনযাপন করত সে ৷ তবে শেষরক্ষা হল না । ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া পুলিশের জালে ধরা পড়ল চিত্তরঞ্জনের প্রতারক । তাকে ঝাড়খণ্ড থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছে চিত্তরঞ্জন থানা ।
মুন্না ডোম ওরফে এম কে সিং । রেলশহর চিত্তরঞ্জনের বেস রোড এলাকার বাসিন্দা । কখনও চাকরির নাম করে, কখনও অন্য ফিকিরে চিত্তরঞ্জন শহরে তার নামে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ ছিল । পরবর্তীকালে মুন্না মিহিজাম হাসিপাহাড়ি এলাকায় বসবাস শুরু করে । সেখানেও প্রতারণার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এককালে চিত্তরঞ্জন শ্মশানে ডোম কাজ করত মুন্না । রাতারাতি নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিতে শুরু করে । এই জন্য ভুয়ো প্রেস কার্ড বানায় সে । এই সময় এমনকি পুলিশ ও আরপিএফ কর্মীদের ব্ল্যাকমেল করে তোলাবাজির অভিযোগও ওঠে মুন্নার বিরুদ্ধে । এছাড়াও পুলিশ ও সিবিআই সেজেও তোলাবাজি করত সে । রাস্তায় চলন্ত গাড়ি আটকে নিজেকে পুলিশ কিংবা সিবিআই বলে পরিচয় চমকে টাকা আদায় করত । এছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা তোলার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে ।
জামতাড়া পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে ভুয়ো প্রেস কার্ড, জাল পুলিশের পরিচয়পত্র, ভুয়ো মানবাধিকার সংস্থার আইডি এবং লোগো পাওয়া গিয়েছে ৷ সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের দুমকার মাসালিয়া থানা এলাকায় স্কুটিতে পুলিশের লোগো লাগিয়ে তোলা আদায় করছিল সে ৷ সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে স্থানীয় দোকান ও বাইক আরোহীদের থেকে তোলা আদায় করছিল । এলাকাবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় তারা ধরে গ্রামে বেঁধে রাখে মুন্নাকে । এরপর পুলিশের হাতে তুলে দেয় । দুমকা পুলিশ 31 মে গ্রেফতার করে মুন্না ডোমকে । পরে চিত্তরঞ্জন থানা তা জানতে পেরে মুন্নাকে 6 দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসে ।
আরও পড়ুন: মালবাজারে মানবাধিকার কমিশনের ভুয়ো আধিকারিক গ্রেফতার
পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি প্রতারণার মামলা আছে মুন্না ডোমের বিরুদ্ধে । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে । পুলিশ সুত্রে খবর, মুন্না চিত্তরঞ্জন ও ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম ছাড়াও ধানবাদ, বিহারের মুঙ্গের সহ জম্মু-কাশ্মীরেও প্রতারণা চালিয়েছে ।