আসানসোল, 17 সেপ্টেম্বর : লকডাউনে বাড়িতে বসেই পাঁচ বন্ধু মিলে বানিয়ে ফেললেন আস্ত ল্যান্ডমাইন ডিটেক্টর! মোবাইলের সাহায্যে কন্ট্রোল করা যাবে ডিটেক্টরটি ৷ অবাক করার মতো বিষয় হল, ডিটেক্টরটি বানাতে খরচ হয়েছে মাত্র 800 টাকা। এই যন্ত্রটি বানিয়ে যথারীতি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পাঁচ ছাত্র-ছাত্রী।
আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়া সৃজা ঘোষ, শুভম দাস, সৃজা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিয় মণ্ডল ও স্বরূপ বিট। পাঁচজনই কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। লকডাউনের সময় কলেজ বন্ধ থাকায় তাঁরা অনলাইনে এই প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা সেরে ফেলেছিলেন। সবাই বাড়িতে থেকেই আলাদা আলাদা ভাবে এই প্রোজেক্টের জিনিসপত্রগুলি বানিয়েছেন । পরে একদিন সবাই মিলে এক জায়গায় হয়ে এই প্রোজেক্টের অ্যাসেমব্লিং-র কাজটি সম্পূর্ণ করেন । প্রোজেক্টের নাম দেওয়া হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন কন্ট্রোলড ল্যান্ডমাইন ডিটেক্টর।
কীভাবে তৈরি করা হল যন্ত্রটি ?
ছাত্রী সৃজা ঘোষ জানান, এই যন্ত্রটি একটি খেলনা গাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে। গাড়িটির সামনে রয়েছে তামার কয়েল এবং সেখান থেকে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার লাগানো হয়েছে। মাইক্রোকন্ট্রোলারে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি বাজ়ারও লাগানো হয়েছে। মূলত এই কয়েলটির কাজ হল যখন কোনও ধাতব বস্তু কয়েলটির সামনে আসবে তখন সেটি সিগন্যাল পাঠাবে মাইক্রোকন্ট্রোলারে এবং তারপর বাজ়ার থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করবে। সৃজা ঘোষের দাবি, খুব সহজেই এই যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ল্যান্ড মাইন খোঁজা যেতে পারে। যন্ত্রটি মোবাইল ফোনের অ্যাপ্লিকেশনের দ্বারা ব্লুটুথ এর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এই প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত অপর এক ছাত্র সুপ্রিয় মণ্ডল জানান, এই প্রকল্পটি তৈরি করতে তাঁদের মাত্র 800 টাকা খরচ হয়েছে। সুপ্রিয় আরও বলেন, "যুদ্ধক্ষেত্রে ল্যান্ডমাইন খুঁজতে তো বটেই, এছাড়াও VVIP-দের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।" এই ডিটেক্টরটি 10 মিটার দূর থেকে মোবাইলের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
এবিষয়ে আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য বলেন, "লকডাউনে ছাত্রছাত্রীরা অভাবনীয় সব প্রকল্প তৈরি করেছে। তার মধ্যে এটি একটি। দেশে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে সীমান্ত এলাকায় ল্যান্ডমাইন খুঁজতে এই যন্ত্রটি খুব কাজে লাগবে।"