হায়দরাবাদ, 30 জানুয়ারি: আয় এবং ব্যয় - এই দুটির মধ্যে আপনাকে অবশ্যই ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে । আপনার আজকের দিনের চাহিদা মেটানোর সময়, ভবিষ্যতের খরচ সম্পর্কেও অনুমান করে রাখা উচিত । এটি এমন নীতি যা যেকোনও বাজেটকে ঠিক রাখে ৷ তা বিধানসভা, লোকসভার বাজেট হোক বা একটি পরিবারের । কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হবে 1 ফেব্রুয়ারি । তার আগে অ্যাকাউন্টের বইটি খুলে আপনার বাজেটের জন্য কী করতে হবে তা দেখার সময় এসেছে ।
কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রভাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিটি নাগরিকের ওপর পড়বে (Central budget impact on citizens) । উন্নয়ন ও কল্যাণের দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার মতো সাধারণ নীতির ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করা হয় । বাড়ির বাজেট তৈরি করার সময়ও আমাদের এটি মাথায় রাখতে হবে । প্রথমে ভাবুন এবং বাড়ির বাজেট তৈরির আগে পরিবারের সামগ্রিক আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৷
পারিবারিক বাজেট
বাজেট বইয়ে সব লক্ষ্যগুলি লিখে রাখুন । স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য আলাদাভাবে উল্লেখ করুন । গৃহস্থের দারকারি জিনিসপত্র কেনা একটি স্বল্পমেয়াদি প্রয়োজন । একটি বাড়ি এবং একটি গাড়ি কেনা মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য । অবসর, ছেলেমেয়ের বিয়ের মতো বিষয় দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য । একবার এই বিষয়গুলি স্পষ্ট করতে পারলে আপনি কী করবেন তা বুঝতে পারবেন । অনেক আর্থিক সমস্যার মূল কারণ হল, উপার্জিত অর্থ বিভিন্ন উদ্দেশের জন্য কীভাবে সামঞ্জস্য করা যায় তা না জানা ।
পরিবারের বাজেট আপনাকে সাহায্য করে বুঝতে যে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য উপলব্ধ অর্থকে কতটা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারবেন । অনেকে মনে করেন যে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চয় করা যথেষ্ট । এটি একটি ভালো আর্থিক পরিকল্পনা ৷ কিন্তু এটি আসলে একটি ভুল সিদ্ধান্ত । আপনি কতটা সঞ্চয় করছেন, তা ছাড়াও আপনার আর্থিক লক্ষ্যকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য কতটা বিনিয়োগ করতে হবে, তা আপনার জানা উচিত । খুব সাবধানে এই পরিমাণ বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করা উচিত ৷
কন্টিনজেন্সি ফান্ড
কখন কোন সমস্যা আসবে তা আপনি আগে থেকে জানেন না । তাই প্রত্যেকেরই একটি কন্টিনজেন্সি ফান্ড (Contingency fund) থাকতে হবে । এটিকে আপনার পারিবারিক বাজেটে বেশি অগ্রাধিকার দিন । নিশ্চিত করুন যে আপনার কাছে সর্বদা কমপক্ষে 6 মাসের খরচ এবং কিস্তির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ থাকবে । তবে এটিকে শুধুমাত্র বেকারত্ব, দুর্ঘটনা ইত্যাদির মতো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে খরচ মেটাতে ব্যবহার করা উচিত ।
পর্যাপ্ত বরাদ্দ
লক্ষ্য নির্ধারণ করার পর পরবর্তী কাজটি হল আপনার প্রাপ্ত প্রতিটি টাকা কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নেওয়া । আয় কেমন? ব্যয় কতটা হয়, তার একটি সঠিক হিসাব থাকা উচিত । আপনার প্রাপ্ত সমস্ত আয় যোগ করুন, যেমন বেতন, অন্যান্য আয়, সুদ এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন । বার্ষিক আয় এবং মাসিক ব্যয় অনুমান করুন (Financial future and cost control) । প্রতি তিন, ছয় মাস বা বছরে একবার, আপনার বড় খরচ হতে পারে । তার জন্য আপনার কাছে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা উচিত ৷
খরচ নিয়ন্ত্রণ
পরিবারের সদস্যদের প্রতিটি খরচের হিসেব দিতে হবে । তাদের প্রতি দুই মাস পর পর খরচ পর্যালোচনা করা উচিত । প্রত্যেকের উচিত খরচ নিয়ন্ত্রণের নীতি অনুসরণ করা । যাদের একটি নির্দিষ্ট আয় নেই, তাদের আয় এবং ব্যয়ের জন্য দুটি পৃথক অ্যাকাউন্ট বজায় রাখা উচিত । সমস্ত আয় এক জায়গায় জমা করা উচিত এবং তারপরে কিছু পরিমাণ ব্যয়ের অ্যাকাউন্টে ডাইভার্ট করা উচিত ।
আর্থিক ভবিষ্যৎ
আয় এবং ব্যয়ের রেকর্ড আমাদের আর্থিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গাইডের মতো হওয়া উচিত । আমরা বাজেট মেনে চলছি কি না, আমাদের সময়ে সময়ে পরীক্ষা করতে হবে । এর জেরে বাজেটে কোনও ত্রুটি থাকলে, তা এক-দুই মাসের মধ্যে জানা যাবে । আপনি কী সঠিকভাবে আয়ের হিসাব করেছেন? প্রত্যাশিত খরচের অনুমান? এ ধরনের বিষয় বিশ্লেষণ করা উচিত । যদি খরচ বেশি হয়, তাহলে আপনি ঋণে পড়ে যাবেন । তারপরে, আর্থিক লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হতে পারে ।
বিলাসিতা এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
বেশিরভাগ মানুষই টাকাপয়সার চিন্তা করে না । আয়-ব্যয়ের হিসাব করতে পছন্দ করে না । তারা বিলাসিতা এবং প্রয়োজনীয়তার মধ্যে পার্থক্য করে না । বাজেটের প্রতি একটি বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি রাখুন এবং চিন্তা করুন যে আপনি আপনার বিলাসিতা অনুযায়ী কতটা ব্যয় করতে পারেন । মনে রাখবেন এই ধরনের খরচ আপনার আর্থিক পরিকল্পনাকে যেন লাইনচ্যুত না করে ।
আরও পড়ুন: নিন ট্যাক্স-সেভিং এফডি, পান নিশ্চিত রিটার্ন