হায়দরাবাদ, 15 ডিসেম্বর: এত বছর ধরে আপনি নিয়মিত স্বাস্থ্যবীমার প্রিমিয়াম দিয়ে গেছেন । তার সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করেছেন যে পরিবারের সকল সদস্যের বীমা করা হয়েছে । কিন্তু যখন মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি (Health emergencies) দেখা দিয়েছে, তখন বীমা কোম্পানি আপনার দাবি গ্রহণ করছে না (Health Insurance Claim) ।
এর জন্য কাকে দোষ দেবেন ? সত্যি হল এটাই, স্বাস্থ্যবীমা চুক্তিতে যে কোনও ছোট ভুলের ফলে কেবল পলিসি হোল্ডারই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে । তার জন্য কী করণীয় ? জেনে নিন ৷
বীমা পলিসিধারক এবং কোম্পানির মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তোলে । তবে এই ট্রাস্ট ফ্যাক্টর শুধুমাত্র পলিসির শর্তাবলীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । প্রায়শই, পলিসিধারীরা আবেদনপত্র পূরণ করার সময় অসতর্ক হয়ে যান । তখন অজান্তেই তারা অর্ধেক তথ্য দিয়ে ফেলেন । যার ফলে সাধারণ ত্রুটিগুলি ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে । যেমন অনেকে নামের ভুল বানান, বয়সের ভুল বর্ণনা দিয়ে দেন ৷ আবার অনেকে ধূমপানের অভ্যাস ও বার্ষিক আয়ের বিবরণ দিতে চান না ।
এক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়াটা জরুরি ৷ অনেকেরই ধারণা, সব বিস্তারিত জানালে পলিসি দেওয়া হবে না এবং প্রিমিয়ামও বেশি নেওয়া হবে । এমনকী আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য গোপন করে একটি পলিসি নেন, তবে সমস্যা হবে । উদাহরণস্বরূপ, পলিসিতে ধূমপানের উল্লেখ করা নেই । এরপরই কোম্পানির দাবি করে জালিয়াতি করে পলিসি নেওয়া হয়েছে । এই ধরনের জিনিস এড়াতে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সমস্ত তথ্য পরিষ্কার করে বলুন । কিছু লুকোবেন না কোম্পানির কাছে ৷
পলিসি পুনর্নবীকরণ করার সময় হয়ে এলে তার এক মাস আগে কোম্পানিগুলি পলিসি ধারকদের এ সম্পর্কে সতর্ক করে (Companies alert policy holders) । কিছু লোক তার পরেও দেরি করে পুনর্নবীকরণ করতে । সাধারণত মেয়াদ শেষ হওয়ার 30 দিন পর্যন্ত পুনর্নবীকরণ সম্ভব । পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বীমা কভার বন্ধ হয়ে যায় । আর এই সময়ের মধ্যে যদি আপনাকে কোনও কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তাহলে আপনি ক্ষতিপূরণ পাবেন না ।
একটি নতুন পলিসি নেওয়ার পরে 30 দিন অপেক্ষা করার সময় রয়েছে । এই সময়ে, শুধুমাত্র দুর্ঘটনার কারণে হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসা খরচ প্রদান করা হয় । এমনকী গুরুতর অসুস্থতার কভারেজের ক্ষেত্রেও বীমাকৃত ব্যক্তি তখনই পলিসির টাকা দাবি করতে পাবেন, যদি হাসপাতালে ভর্তির পরে কমপক্ষে 30 দিন তিনি বেঁচে থাকেন । কিছু রোগের ক্ষেত্রে 2-4 বছরের অপেক্ষা করা হয় এবং সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ নাও পাওয়া যেতে পারে । সুতরাং, এই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশদ তথ্য দেওয়া উচিত (Tiny mistakes may hamper medical claim) ।
একটি স্কিম বা পলিসি নেওয়ার আগে একজনকে সম্পূর্ণরূপে শর্তাবলী জানতে হবে । পলিসি নথিতে দেওয়া সমস্ত তথ্যের বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দু'বার চেক করা উচিত । সেখানে প্রতিটি স্বাস্থ্য পলিসি স্পষ্টভাবে তাদের শর্তাবলীর উল্লেখ করে ৷ এমনকী কোনক্ষেত্রে বীমা প্রযোজ্য নয়, তারও উল্লেখ করা থাকে তাতে । অনেকেই এই বিষয়টি অবহেলা করেন । অবশেষে পলিসি ক্লেম বা দাবি প্রত্যাখ্যান করা হলে তারা অসুবিধার সম্মুখীন হয় । ভবিষ্যতে এই ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে আগে থেকেই যত্ন নেওয়া ভালো ।
আরও পড়ুন: গৃহঋণে সুদের হার বাড়ছে? রইল তা কমানোর উপায়
মেডিক্যাল ক্লেম প্রত্যাখ্যানের আরেকটি বড় কারণ হল, পলিসিধারীদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বীমা কোম্পানিকে জানানো হয় না । দুর্ঘটনা বা জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে স্বাস্থ্য বীমা দাবি করা সম্ভব নাও হতে পারে । সেক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির 24 থেকে 48 ঘন্টার মধ্যে বিমা কোম্পানিকে বিস্তারিত জানাতে হবে । পলিসি হোল্ডার জানাতে না-পারলেও তার মনোনীত ব্যক্তি বা অনুমোদিত ব্যক্তিদের উচিত সময়মতো বীমা কোম্পানিকে জানানো ।