কলকাতা, 26 জুন : 30 বছর নারী হিসাবে জীবন কাটানোর পর হঠাৎজানতে পারলেন তিনি আসলে "পুরুষ" । এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বীরভূমের একযুবতীর সঙ্গে। সম্প্রতি তলপেটে ব্যথা নিয়ে ওই যুবতী কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসেন, সেখানেই পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনিএন্ড্রোজেন ইন্সেন্সিটিভিটি সিনড্রোমে ভুগছেন। এটি একটি অত্যন্ত বিরল শারীরিকঅবস্থা, যা প্রতি22 হাজারমানুষের একজনের হয়।
ওইযুবতীর রিপোর্ট পাওয়ার পর 28 বছর বয়সী তার ছোট বোনের পরীক্ষা করা হলে জানা যায়, তিনিও একই সিনড্রোমে ভুগছেন। এইশারীরিক অবস্থায় একজন মানুষ জিনগতভাবে পুরুষ হলেও তার দেহে একজন নারীর সমস্তলক্ষণ থাকে।
30 বছরবয়সী ওই যুবতী নয় বছর আগে বিয়ে করেছিলেন। সম্প্রতি তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণাহওয়ায় কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ক্যান্সার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা করাতেআসেন। সেখানেই অনুপম দত্ত এবং সৌমেন দাস বিভিন্ন পরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনিআদতে একজন পুরুষ।
অনুপমদত্ত জানান, " বাইরে থেকে দেখলে তিনি একজন নারী। তার গলার স্বর, স্তন, যৌনাঙ্গ- সবই নারী হওয়ার পরিচয় দেয়, তবে জন্মের পর থেকেই তার ডিম্বাশয় ওজরায়ু অনুপস্থিত। ওই যুবতীর কখনও ঋতুস্রাবও হয়নি। তলপেটে ব্যথা নিয়ে তিনিচিকিৎসা করাতে এলে আমরা কিছু পরীক্ষা করি। তাতে দেখা যায়, তার শরীরের ভেতরে অন্ডকোষ রয়েছে।এরপর বায়োপসি করানো হলে জানা যায়, তিনি টেস্টিকুলার ক্যান্সারে আক্রান্তহয়েছেন, যাসেমিনোমা নামেও পরিচিত। "
বর্তমানেওই যুবতী কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। দত্ত জানান," যেহেতুশরীরের ভিতরে অণ্ডকোষটি অপরিণত অবস্থায় রয়েছে, তাই টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ হয়নি।অন্যদিকে নারী হরমোন নিঃসরণ হওয়ায় তার বহিরঙ্গে নারী চেহারাই প্রস্ফুটিত হয়েছে।"
চিকিৎসকদেরএকজন নারীর আচমকা নিজেকে পুরুষ হিসেবে আবিষ্কার করার ঘটনার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেপ্রশ্ন করা হলে অনুপম দত্ত জানান, " ওই যুবতী একজন নারী হিসেবেইলালিত-পালিত হয়েছেন। প্রায় এক দশক ধরে তিনি একজন পুরুষের সঙ্গে বিবাহিত জীবনকাটাচ্ছেন। বর্তমানে ওই রোগী ও তার স্বামীর কাউন্সিলিং করা হচ্ছে এবং তাদেরকে আগেরমতোই জীবন কাটাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। "
অনকোলজিস্টঅনুপম দত্ত জানান, ওইদম্পতি এর আগে বহুবার সন্তান ধারণের চেষ্টা করেছেন, তবে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন। এইবিরল সিনড্রোমটি সম্ভবত ওই যুবতী জিনগত ভাবে পেয়েছে। তার দুই মাসিও একই সিনড্রোমেভুগছেন ।