ETV Bharat / bharat

জ়িঙ্কের প্রয়োজনীয়তা, ঘাটতি, লাভ এবং উৎস - জ়িঙ্কের ঘাটতি

জ়িঙ্ক শরীরের জন্য খুবই উপকারী । কিন্তু , আবার বেশি পরিমাণে জ়িঙ্ক গ্রহণ করলে তখন তা স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফলতে পারে । সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে ।

Zinc
ছবিটি প্রতীকী
author img

By

Published : Dec 13, 2020, 8:09 AM IST

আমাদের শরীরে জ়িঙ্ক উৎপাদিত হয় না । তাই এই পরিপোষক পদার্থটিকে ক্রমাগত শরীরের বাইরে থেকে সরবরাহ করতে হয় । মানুষের শরীরে একাধিক কাজে জ়িঙ্কের ভূমিকা থাকে । যেমন – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ক্ষত সারাতে সাহায্য করে, মেটাবলিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ইত্যাদি । এটা একটা শিশুর প্রয়োজনীয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । আর আমাদের শরীরের প্রোটিন ও ডিএনএ সিন্থেসিসে সাহায্য করে । আয়ুর্বেদেও যশোদা ভস্ম বা জিঙ্কের ছাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান । এই উপাদান বিশেষ করে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় । আমরা রোজ যে খাবার খাই তার মধ্যেও জ়িঙ্ক পাওয়া যেতে পারে । এরপর এই লেখায় আমরা জানব যে কোন কোন খাবারে জ়িঙ্কের উপাদান থাকে ।

কতটা জ়িঙ্ক প্রয়োজন?

আমাদের প্রচুর পরিমাণে জ়িঙ্কের প্রয়োজন হয় না । কিন্তু গড়ে রোজ আমাদের যতটা জ়িঙ্ক দরকার হয়, তা নিচে উল্লেখ করা হল :

  • 6 মাস থেকে 13 বছরের শিশু : 2-8 মিলিগ্রাম
  • 14 থেকে 18 বছরের কিশোর-কিশোরী : 9-11 মিলিগ্রাম
  • 18 বছরের বেশি প্রাপ্ত বয়স্করা : 8-11 মিলিগ্রাম
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মহিলারা : 11-12 মিলিগ্রাম

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে । আপনার শিশুর ঠিক কতটা জ়িঙ্কের প্রয়োজন, তা জানতে আপনি কোনও শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারেন । লিঙ্গের উপর নির্ভর করছে । পুরুষদের জ়িঙ্কের প্রয়োজনীয়তা মহিলাদের তুলনায় 2 থেকে 3 মিলিগ্রাম বেশি হয় ।

জ়িঙ্কের ঘাটতি

যদি আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে জ়িঙ্ক প্রবেশ না করে, তাহলে শিশুদের বিকাশের গতি কমে যায় । জ়িঙ্কের ঘাটতি যৌন-বৃদ্ধির গতিও কমিয়ে দেয় এবং পুরুষদের মধ্যে পুরুষত্বহীনতাও তৈরি করে । এই ঘাটতির জেরে আর কী কী হতে পারে, তা উল্লেখ করা হল :

  • খিদে কমে যাওয়া ।
  • চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ।
  • ডায়েরিয়া ।
  • ত্বকে ফুসকুড়ি ও ত্বকের অন্যান্য অবস্থা ।
  • ক্ষত নিরাময়ের গতি কমে যাওয়া ।
  • ওজন কমে যাওয়া ।
  • চোখ ও ত্বকে ঘা ।

আরও পড়ুন , লেন্সের বদলে চশমা, চোখের মধ্যে দিয়ে কোভিড সংক্রমণ এড়ানোর উপায়

জ়িঙ্কের উপকারিতা

1. সাধারণ জ্বর

অ্যামেরিকার দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ বা এনআইএইচ জানিয়েছে , কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্কের লজেন্স বা সিরাপ ( কিন্তু তা কখনও রোজকার জীবনে ট্যাবলেট আকারে হওয়া চলবে না ) সাধারণ জ্বর থেকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে । আর জ্বরের লক্ষণ 24 ঘণ্টার মধ্যে কমিয়ে তা নিরাময় করতে সাহায্য করে । তবে এর জন্য আরও সমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে ।

2. ব্রণ

একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্ক ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো করতে সাহায্য করছে । আর ব্রণ-র সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে । এটা আমাদের ত্বককে উচ্চ তাপমাত্রা ও ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আর এটা ত্বকের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে ।

3. ডায়েরিয়া

পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়ার সমস্যা খুবই মারাত্মক হতে পারে । একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্কের উপাদান রোজের খাবারে থাকলে শিশুদের ডায়েরিয়ার লক্ষণকে কমানো যেতে পারে ।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জ়িঙ্কের কার্যকারিতা সর্বজনবিদিত । ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মানে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি বৃদ্ধি করে । কারণ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াই সংক্রমণ ছড়াতে সাহায্য করে ।

5. বয়স সংক্রান্ত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এএমডি)

এএমডি একটি চোখ সংক্রান্ত রোগ । যার ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যেতে থাকে । এএমডির অগ্রগতি কমাতে জ়িঙ্কের উপাদান কাজ করে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে ।

আরও পড়ুন , সব বয়সের নারীর জন্য সময়কে হার মানানো 5টি গয়না


জ়িঙ্কের উৎস

জ়িঙ্কের প্রয়োজনীয়তা বজায় রাখতে যে খাবারগুলি খাওয়া প্রয়োজন, তার তালিকা দেওয়া হল :

  • মাংস (গোরু, ভেড়া, শুয়োরের মাংস)
  • সেলফিশ (ঝিনুক, কাঁকড়া, বাতা)
  • বাদাম (কাজু, বাদাম, চিনা বাদাম)
  • বীজ (কুমড়ো, তিল এবং শিং বীজ)
  • দুধ ও অন্য দুধ জাতীয় খাবার
  • ডিম
  • মটরশুঁটি, মসুর, ছোলা ইত্যাদি
  • শস্য (ওট, কুইনো, গম)
  • শাক সবজি (আলু, মটর, অ্যাস্পারাগাস)
  • ডার্ক চকোলেট

অতিরিক্ত পরিমাণ জ়িঙ্ক কি ক্ষতিকারক ?

হ্যাঁ, অতিরিক্ত পরিমাণে জ়িঙ্ক গ্রহণ করলে তা আপনার শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে । অতিরিক্ত জিঙ্ক সেবন করলে বমি বমি ভাব, ডায়েরিয়া, তলপেটে টান ধরা, মাথাধরা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি ঘটতে পারে ।

ফলে জ়িঙ্ক প্রয়োজনীয় পরিমাণেই গ্রহণ করা উচিত । যদি আপনি নিশ্চিত না হন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন । জেনে নিন আপনার বয়স, আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে আপনার শরীরে ঠিক কতটা জ়িঙ্কের প্রয়োজন । এছাড়া জেনে নিন , আপনার বর্তমানে চলতে থাকা কোনও ওষুধের উপর জ়িঙ্ক গ্রহণের প্রভাব পড়বে কি না । জ়িঙ্ক সমৃদ্ধ কিছু গ্রহণ করা উচিত কি না, তাও আপনি জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন ।

আমাদের শরীরে জ়িঙ্ক উৎপাদিত হয় না । তাই এই পরিপোষক পদার্থটিকে ক্রমাগত শরীরের বাইরে থেকে সরবরাহ করতে হয় । মানুষের শরীরে একাধিক কাজে জ়িঙ্কের ভূমিকা থাকে । যেমন – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ক্ষত সারাতে সাহায্য করে, মেটাবলিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ইত্যাদি । এটা একটা শিশুর প্রয়োজনীয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । আর আমাদের শরীরের প্রোটিন ও ডিএনএ সিন্থেসিসে সাহায্য করে । আয়ুর্বেদেও যশোদা ভস্ম বা জিঙ্কের ছাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান । এই উপাদান বিশেষ করে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় । আমরা রোজ যে খাবার খাই তার মধ্যেও জ়িঙ্ক পাওয়া যেতে পারে । এরপর এই লেখায় আমরা জানব যে কোন কোন খাবারে জ়িঙ্কের উপাদান থাকে ।

কতটা জ়িঙ্ক প্রয়োজন?

আমাদের প্রচুর পরিমাণে জ়িঙ্কের প্রয়োজন হয় না । কিন্তু গড়ে রোজ আমাদের যতটা জ়িঙ্ক দরকার হয়, তা নিচে উল্লেখ করা হল :

  • 6 মাস থেকে 13 বছরের শিশু : 2-8 মিলিগ্রাম
  • 14 থেকে 18 বছরের কিশোর-কিশোরী : 9-11 মিলিগ্রাম
  • 18 বছরের বেশি প্রাপ্ত বয়স্করা : 8-11 মিলিগ্রাম
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মহিলারা : 11-12 মিলিগ্রাম

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে । আপনার শিশুর ঠিক কতটা জ়িঙ্কের প্রয়োজন, তা জানতে আপনি কোনও শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারেন । লিঙ্গের উপর নির্ভর করছে । পুরুষদের জ়িঙ্কের প্রয়োজনীয়তা মহিলাদের তুলনায় 2 থেকে 3 মিলিগ্রাম বেশি হয় ।

জ়িঙ্কের ঘাটতি

যদি আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে জ়িঙ্ক প্রবেশ না করে, তাহলে শিশুদের বিকাশের গতি কমে যায় । জ়িঙ্কের ঘাটতি যৌন-বৃদ্ধির গতিও কমিয়ে দেয় এবং পুরুষদের মধ্যে পুরুষত্বহীনতাও তৈরি করে । এই ঘাটতির জেরে আর কী কী হতে পারে, তা উল্লেখ করা হল :

  • খিদে কমে যাওয়া ।
  • চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ।
  • ডায়েরিয়া ।
  • ত্বকে ফুসকুড়ি ও ত্বকের অন্যান্য অবস্থা ।
  • ক্ষত নিরাময়ের গতি কমে যাওয়া ।
  • ওজন কমে যাওয়া ।
  • চোখ ও ত্বকে ঘা ।

আরও পড়ুন , লেন্সের বদলে চশমা, চোখের মধ্যে দিয়ে কোভিড সংক্রমণ এড়ানোর উপায়

জ়িঙ্কের উপকারিতা

1. সাধারণ জ্বর

অ্যামেরিকার দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ বা এনআইএইচ জানিয়েছে , কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্কের লজেন্স বা সিরাপ ( কিন্তু তা কখনও রোজকার জীবনে ট্যাবলেট আকারে হওয়া চলবে না ) সাধারণ জ্বর থেকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে । আর জ্বরের লক্ষণ 24 ঘণ্টার মধ্যে কমিয়ে তা নিরাময় করতে সাহায্য করে । তবে এর জন্য আরও সমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে ।

2. ব্রণ

একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্ক ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো করতে সাহায্য করছে । আর ব্রণ-র সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে । এটা আমাদের ত্বককে উচ্চ তাপমাত্রা ও ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আর এটা ত্বকের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে ।

3. ডায়েরিয়া

পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়ার সমস্যা খুবই মারাত্মক হতে পারে । একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে জ়িঙ্কের উপাদান রোজের খাবারে থাকলে শিশুদের ডায়েরিয়ার লক্ষণকে কমানো যেতে পারে ।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জ়িঙ্কের কার্যকারিতা সর্বজনবিদিত । ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মানে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি বৃদ্ধি করে । কারণ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াই সংক্রমণ ছড়াতে সাহায্য করে ।

5. বয়স সংক্রান্ত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এএমডি)

এএমডি একটি চোখ সংক্রান্ত রোগ । যার ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যেতে থাকে । এএমডির অগ্রগতি কমাতে জ়িঙ্কের উপাদান কাজ করে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে ।

আরও পড়ুন , সব বয়সের নারীর জন্য সময়কে হার মানানো 5টি গয়না


জ়িঙ্কের উৎস

জ়িঙ্কের প্রয়োজনীয়তা বজায় রাখতে যে খাবারগুলি খাওয়া প্রয়োজন, তার তালিকা দেওয়া হল :

  • মাংস (গোরু, ভেড়া, শুয়োরের মাংস)
  • সেলফিশ (ঝিনুক, কাঁকড়া, বাতা)
  • বাদাম (কাজু, বাদাম, চিনা বাদাম)
  • বীজ (কুমড়ো, তিল এবং শিং বীজ)
  • দুধ ও অন্য দুধ জাতীয় খাবার
  • ডিম
  • মটরশুঁটি, মসুর, ছোলা ইত্যাদি
  • শস্য (ওট, কুইনো, গম)
  • শাক সবজি (আলু, মটর, অ্যাস্পারাগাস)
  • ডার্ক চকোলেট

অতিরিক্ত পরিমাণ জ়িঙ্ক কি ক্ষতিকারক ?

হ্যাঁ, অতিরিক্ত পরিমাণে জ়িঙ্ক গ্রহণ করলে তা আপনার শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে । অতিরিক্ত জিঙ্ক সেবন করলে বমি বমি ভাব, ডায়েরিয়া, তলপেটে টান ধরা, মাথাধরা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি ঘটতে পারে ।

ফলে জ়িঙ্ক প্রয়োজনীয় পরিমাণেই গ্রহণ করা উচিত । যদি আপনি নিশ্চিত না হন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন । জেনে নিন আপনার বয়স, আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে আপনার শরীরে ঠিক কতটা জ়িঙ্কের প্রয়োজন । এছাড়া জেনে নিন , আপনার বর্তমানে চলতে থাকা কোনও ওষুধের উপর জ়িঙ্ক গ্রহণের প্রভাব পড়বে কি না । জ়িঙ্ক সমৃদ্ধ কিছু গ্রহণ করা উচিত কি না, তাও আপনি জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.