গয়া (বিহার), 26 ডিসেম্বর: বিয়ে দু’টো পরিবারের আনন্দ যেমন এনে দেয় ৷ আবার ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা বাড়িঘর এবং সর্বপরি বাবা-মা’কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্টও থাকে ৷ ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিয়ে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ সেই সঙ্গে দু’টি মানুষের এক নতুন জীবনের সূচনাও হয় ৷ কিন্তু, বিহারের গয়ায় এক মুমূর্ষু মহিলার জীবনে বিয়ে শান্তি নিয়ে এল ৷ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃতপ্রায় মহিলার শেষ ইচ্ছে ছিল মেয়ের বিয়ে দেখে যাওয়ার (Daughter Fulfill Last Wish of Dying Mother) ৷
আর এটা বিশেষ এই কারণে, এখানে কোনও বড় হল ভাড়া করে জাঁকজমকের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়নি ৷ একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ কেবিনে বিয়ে করেছেন বর-কনে (Wedding in ICU Cabin) ৷ কারণ, তাঁর মায়ের শেষ ইচ্ছে ছিল এটাই ৷ আর এই কাহিনী বিহারের গয়া জেলার বালি গ্রামের বাসিন্দা পুনম ভার্মার ৷ তিনি গত কয়েকদিন ধরে হৃদযন্ত্রের এক অসুখে ভুগছেন ৷ কিন্তু, গত রবিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ৷ গয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করানো হয় ৷ কিন্তু, সেখানে তাঁর অবস্থার বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি ৷
পুনম ভার্মার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করা হলে, খুব একটা ভালো খবর দিতে পারেননি চিকিৎসক ৷ চিকিৎসক জানান, তিনি যে কোনও সময় মারা যেতে পারেন এবং পরিবারের সদস্যরা যেন পুনম ভার্মার কাছেই থাকেন ৷ তবে, পুনম ভার্মা হয় তো জেনে গিয়েছিলেন যে, তিনি আর বেশিদিন বা সময় বাঁচবেন না ৷ এ কথা কোনওভাবে তাঁর কানে গিয়েছিল ৷ আর তাই তিনি শেষ ইচ্ছেপূরণের দাবি জানান ৷ তিনি নিজের মেয়ে চাঁদনি কুমারীর বিয়ে দেখে যেতে চান ৷
আরও পড়ুন: অস্ত্রোপচারে বের হয়েছিল 46 কেজির টিউমার ! পাঁচমাস পর সম্পূর্ণ সুস্থ বৃদ্ধা
প্রসঙ্গত, আজ 26 ডিসেম্বর চাঁদনির বাগদান পর্ব ছিল ৷ কিন্তু, পুনম ভার্মার শেষ ইচ্ছেপূরণ করতে একদিন আগে চাঁদনির বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, পরিবারের সদস্যরা ৷ আর সেটা কেবলমাত্র তাঁর মৃত্যুশয্যায় থাকা মায়ের শেষ ইচ্ছেপূরণ করতে ৷ সেই মতো হাসপাতালের আইসিইউ কেবিনে চাঁদনি কনের সাজে উপস্থিত হন ৷ সেখানে পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সুমিত গৌরবের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি ৷ আর সেই দৃশ্য হাসপাতালের শয্যা থেকে আনন্দের সঙ্গে দেখেন পুনম ভার্মা ৷ তবে, মেয়ের বিয়ের মুহূর্তের সাক্ষী থাকার 2 ঘণ্টার মধ্যে মারা যান পুনম ৷ সদ্য-বিবাহিত মেয়ে এবং পুরো পরিবারকে ছেড়ে পরোলোক গমন করেন তিনি ৷