পিলভিট, 23 অক্টোবর: ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন নির্যাতিতা ৷ তাঁর অভিযোগ সৎ ছেলে মাসের পর মাস ধরে তাঁকে ধর্ষণ করেছে ৷ তাছাড়া স্বামীর বন্ধুরাও একই কাজ করেছে বলে তাঁর দাবি ৷ তাই এ জীবন আর রাখতে চান না ৷ এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর (death by euthanasia) অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখলেন ৷ চিঠিতে 30 বছর বয়সী ওই নির্যাতিতা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন, দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি তাঁর সব আর কোনও আস্থা নেই (Rape Survivor seeks Euthanasia permission) ৷
রাষ্ট্রপতিকে (President of India Droupadi Murmu) লেখা চিঠিতে তিনি আরও জানিয়েছেন, 9 অক্টোবর পুরানপুর কোতওয়ালি পুলিশ স্টেশনে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ৷ এরপর আদালতের নির্দেশ দিলেও পুলিশ ইচ্ছাকৃত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না ৷ শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ব্যাপারে তাঁকে চুপ থাকতে বলছে অভিযুক্তরা ৷ মুখ খুললেই খুন করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা ৷
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলায় দোষীদের দ্বিগুণ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাদুরাই হাইকোর্টের
তিনি চিঠিতে লেখেন, "আমি অনেক কষ্ট করেছি ৷ আমার মনে হয় না যে আমি বিচার পাব ৷ তাই আমি আমার জীবন শেষ করে ফেলতে চাই ৷ আপনি (রাষ্ট্রপতি) অনুমতি দিন ৷"
নির্যাতিতা মহিলার বয়ান অনুযায়ী, তিন বছর আগে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ৷ এরপর তিনি চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা 55 বছর বয়সী এক কৃষককে বিয়ে করেন ৷ তাঁর অভিযোগ, এবছর এপ্রিলে সৎ ছেলে তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয় ৷ তাঁকে যৌন হেনস্থা করতে থাকে ৷ ওই সৎ ছেলে তাঁকে চুপ করে থাকতে বলে ৷ ভয় দেখায় কাউকে কিছু বললে তার ফল ভালো হবে না ৷
ধর্ষিতার দাবি, এই অবস্থায় তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন এবং ডিএনএ টেস্টের করতে চেয়েছিলেন ৷ সেই সময় তাঁর পেটে খুব জোরে লাথি মারা হয় ৷ পরে তাঁকে পুরানপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত করানো হয় ৷
18 জুলাই ওই নির্যাতিতাকে স্বামীর বন্ধুর খামারবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে তাঁর বন্ধুর এক আত্মীয়, তার দুই সহকর্মী তাঁকে গণধর্ষণ করে ৷ ধর্ষিতা মহিলা স্থানীয় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান ৷ কিন্তু পুলিশ তাঁর কথায় কোনও কান দেয়নি ৷ কোনও উপায় না দেখে শেষে আদালতের দ্বারস্থ হন মহিলা ৷ আদালত পুলিশকে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেয় ৷ তারপরও কাজের কাজ হয়নি বলে দাবি নির্যাতিতার ।
সম্প্রতি পুরানপুর কোতওয়ালি থানায় ওই মহিলার স্বামী, সৎ ছেলে-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে ৷ কিন্তু এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি ৷ নির্যাতিতা এখন বারেলিতে তাঁর মা, ভাই এবং প্রথম পক্ষের ছ'বছরের সন্তানের সঙ্গে থাকেন ৷ এসপি দীনেশ কুমার প্রভু বলেন, "এই মামলাটা খুবই জটিল ৷ অভিযোগের একাধিক স্তর আছে ৷ আমরা যথাযথ তদন্ত শুরু করেছি ৷ খুব শিগগিরি তা শেষ হবে ৷ তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"
আরও পড়ুন: ধর্ষণ-খুনে সাজাপ্রাপ্ত রাম রহিমের 'সৎসঙ্গ'-এ বিজেপি নেতারা, তোপ বিরোধীদের