ছিন্দওয়াড়া (মধ্যপ্রদেশ) 22 জুলাই: গ্রামে কেবল রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৷ তবে তার অবস্থা জরাজীর্ণ ৷ নেই কোনও উচ্চ বিদ্যালয় বা প্রাথমিকে শিক্ষক ৷ হেঁটে দু'দিনে 100 কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আদিবাসী পড়ুয়ারা অভিযোগ জানালেন কালেক্টরের কাছে ৷ দু'দিনের যাত্রাপথে তাদের সঙ্গে ছিল চাটনি ও রুটি ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় ৷
হেঁটে 2 দিনে 100 কিলোমিটার যাত্রা: অমরওয়াড়া আদিবাসী উন্নয়ন ব্লকের কাহুয়া গ্রামে রয়েছে প্রাথমিক স্কুল ৷ তবে তা প্রায় 50 বছরের পুরনো একটি ভবন ৷ বর্তমানে সেটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ৷ যেখানে বসে লেখাপড়া করার মতো অবস্থা নেই । শিশুরা জানায়, শেখানোর মতো শিক্ষকও নেই । তাই তারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে কালেক্টরের দ্বারস্থ হয়েছে ৷ যাতে সেখানে একটি নতুন ভবন তৈরি করা হয় ৷ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্লোগান দিতে শোনা যাচ্ছিল, ভবন তৈরি করে আমাদের জীবন বাঁচান ৷ শিক্ষক পাঠান ৷ অন্ধকার থেকে আমাদের জীবন বাঁচান ৷ স্কুল ভবন ও শিক্ষকদের দাবি নিয়ে গ্রামের প্রধান ও উপ-প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে কালেক্টর অফিসে আসে শিশুরা ৷ তারা জানায়, গ্রাম থেকে অনেক দূর এই অফিস ৷ তারা হেঁটে এখানে পৌঁছেছে ৷ খাবারের জন্য তাদের সঙ্গে ছিল চাটনি ও রুটি।
তালাবদ্ধ স্কুলের শিশুরা মাঠে কাজ করে: গ্রামবাসীরা জানায়, শিক্ষকের অভাবে গত এক বছর ধরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ ৷ বিদ্যালয়ে কোনও লেখাপড়া হয় না ৷ তাই শিশুরা মাঠে কাজ করছে । কালেক্টরের কাছে গ্রামবাসীরা আবেদন জানিয়েছে, কালেক্টর একবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করুক ৷ তাহলেই সব সত্যিটা জানতে পারবেন ৷ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হলে আর মাঠে কাজ করবে না শিশুরা ৷ তারা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করবে বলে দাবি গ্রামবাসীদের ।
আরও পড়ুন: 2 বছর ধরে নেই শিক্ষক, তালা ঝুলছে জুনিয়র হাইস্কুলে
প্রাথমিকে একজন শিক্ষক: মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও পাঠদানের জন্য কোনও শিক্ষক নেই । এমনকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে । জেলা শিক্ষা কেন্দ্রের আধিকারিক জেকে ইদপাচি বলেন, "কাহুয়াতে মোট 132 জন ছাত্র রয়েছে ৷ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে ৷ বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোনও শিক্ষক নেই ৷ তবে অতিথি শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ যাতে আপাতত ক্লাস চালানো যায় ৷"
বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনটি জরাজীর্ণ এবং যত্রতত্র জল জমে আছে । পরিস্থিতি এমন যে এই বর্ষায় যেকোনও সময় ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে । শিক্ষা দফতরের আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে গত বছরই স্কুল ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে ৷ কিন্তু স্কুল নির্মাণের বাজেট এখনও পাওয়া যায়নি ৷ যার কারণে কাজ শুরু হয়নি ।
আরও পড়ুন: নেই শিক্ষক, রান্না হয় না মিড-ডে মিলও ! অনিশ্চয়তায় 92 খুদে পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ
শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরাও বিষয়টি জানে: গ্রামের উপ-প্রধান রঘুনাথ সিং বানজারা জানান, গ্রামে 10 বছর আগে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা হয়েছিল ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি ৷ কখনও চুক্তির ভিত্তিতে আবার কখনও অতিথি শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়। এই বিদ্যালয়ে প্রায় 200 শিশু রয়েছে ৷ কিন্তু এখন কোন শিক্ষক নেই ৷ তাই এটি তালাবদ্ধ রয়েছে। শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, তারা জানতেন না যে সেখানকার স্কুলের এই অবস্থা ৷