নয়াদিল্লি, 5 জুলাই : ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার (Solicitor General of India Tushar Mehta) অপসারণ চেয়ে এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস (All India Trinamool Congress) ৷ পূর্ব ঘোষণা মাফিক, সোমবার রাষ্ট্রপতি ভবনে (Rashtrapati Bhavan) যান দলের প্রতিনিধিরা ৷ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের (President of India Ram Nath Kovind) সঙ্গে ৷ সরাসরি তাঁর কাছেই সলিসিটর জেনারেলের অপসারণের দাবি জানান তাঁরা ৷ তাঁদের সাক্ষাতের কথা নিজের টুইটার (Twitter) হ্য়ান্ডেলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) ৷ পোস্ট করেছেন দলের তরফে দেশের সাংবিধানিক প্রধানকে দেওয়া তাঁদের দু’পাতার স্মারকলিপি ৷
এদিন রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মহুয়া ৷ সেখানে ভারতের বর্তমান সলিসিটর জেনারেল সম্পর্কে দলের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি ৷ জানান, ঠিক কী কারণে ওই পদে তুষার মেহতার অপসারণ চাইছেন তাঁরা ৷ মহুয়া বলেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছি ৷ দলের তরফে তাঁকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে ৷ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কার্যালয় নানা অনিয়ম করছে ৷ সেই বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করেই রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা অবিলম্বে সলিসিটর জেনারেল পদে তুষার মেহতার অপসারণ দাবি করেছি ৷ কারণ তিনি প্রচুর অনিয়ম ও অবৈধ কাজ করছেন ৷’’
-
Our official memorandum to the Hon’ble President seeking immediate removal of the Solicitor General in public interest & to maintain the integrity & neutrality of his office pic.twitter.com/9tXZGe8NHO
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 5, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">Our official memorandum to the Hon’ble President seeking immediate removal of the Solicitor General in public interest & to maintain the integrity & neutrality of his office pic.twitter.com/9tXZGe8NHO
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 5, 2021Our official memorandum to the Hon’ble President seeking immediate removal of the Solicitor General in public interest & to maintain the integrity & neutrality of his office pic.twitter.com/9tXZGe8NHO
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 5, 2021
আরও পড়ুন : বিজেপির সিক্রেট জেনারেল, তুষার মেহতাকে আক্রমণ অভিষেকের
এই প্রসঙ্গে গত 1 জুলাইয়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন মহুয়া ৷ তিনি জানান, ওই দিন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ (Suvendu Adhikari) বিজেপির বিধায়করা প্রথমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন ৷ এবং পরে সলিসিটর জেনারেলের 10, আকবর রোডের বাসভবনেও যান তাঁরা ৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে মহুয়া আসলে বিজেপির সঙ্গে সলিসিটর জেনারেলের আঁতাঁতের বার্তাই দিতে চেয়েছেন ৷
এই প্রসঙ্গে আর এক তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) বলেন, ‘‘শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করতে না পারায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সলিসিটর জেনারেল ৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, শুভেন্দুকে সেখানে (সলিসিটর জেনারেলের বাসভবনে) ঢোকার অনুমতি কে দিল ? তিনি ভিতরে ঢুকলেন কীভাবে ?’’ সুখেন্দুশেখরের অভিযোগ, সলিসিটর জেনারেল বার কাউন্সিলের নিয়ম ভেঙেছেন ৷ পেশাগত নৈতিকতাও হারিয়েছেন তিনি ৷ সেই কারণেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া উচিত ৷
প্রসঙ্গত, গত 1 জুলাই থেকেই সলিসিটর জেনারেলের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তাঁর বাসভবনে শুভেন্দু অধিকারীর যাওয়া নিয়েই যার সূত্রপাত ৷ এমনকী, সলিসিটর জেনারেলকে ‘সিক্রেট জেনারেল’ বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee) ৷
আরও পড়ুন : তুষার মেহতা-শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎ বিতর্ক, চাপ বাড়াচ্ছে তৃণমূল
1 জুলাইয়ের ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি লিখেও তুষার মেহতার অপসারণের দাবি জানায় তৃণমূল কংগ্রেস ৷ ওই চিঠিতে তৃণমূলের যুক্তি ছিল, সারদা চিটফান্ড মামলা (Saradha Group financial scandal) ও নারদ কেলেঙ্কারির (Narada Case) অন্যতম অভিযুক্ত হলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতেই তিনি তুষার মেহতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে তৃণমূল ৷ যদিও তুষার মেহতার দাবি ছিল, তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর দেখা হয়নি ৷ এবং শুভেন্দু তাঁকে না জানিয়েই তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন ৷
তৃণমূল অবশ্য সলিসিটর জেনারেলের এই সাফাই মানতে নারাজ ৷ সোমবার রাষ্ট্রপতিকে দলের তরফে যে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘সলিসিটর জেনারেল ভারতের আইনি আধিকারিকদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় এবং তিনি সিবিআইয়ের বিশেষ আইনজীবী ৷ অন্যদিকে, এই সিবিআই-ই আবার চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলাগুলির তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে ৷ সেই মামলারই অন্যতম অভিযুক্তের সঙ্গে সলিসিটর জেনারেলের বৈঠক অবশ্যই সন্দেহ ও অনিয়মের অবকাশ তৈরি করে ৷’’