নয়াদিল্লি, 4 সেপ্টেম্বর: 70 দিন পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন সমাজকর্মী তিস্তা সেতলওয়াড় (Teesta Setalvad Released)৷ সুপ্রিম কোর্ট তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করার পর শনিবার সন্ধেয় জেল থেকে মুক্তি পান তিনি (Sabarmati Jail)৷ তবে জামিন পেলেও তাঁকে আদালতের বেশ কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে ৷ 2002 সালের দাঙ্গার (Gujarat Riot 2002) পর গুজরাত সরকারকে ফেলে দিতে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ রয়েছে তিস্তার বিরুদ্ধে ৷
গুজরাত দাঙ্গায় একাধিক 'নিরাপরাধ ব্যক্তি'কে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে তিস্তা সেতলওয়াড়ের বিরুদ্ধে ৷ সেইসঙ্গে, এই ঘটনায় তিনি প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে ৷ যার জেরে গত 26 জুন থেকে হাজতবাস করতে হয় তিস্তাকে ৷ গত শুক্রবার তিস্তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ৷ প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, "আবেদনকারী দু'মাসেরও বেশি সময় ধরে হেফাজতে রয়েছেন ৷ তাঁর বিরুদ্ধে গুজরাত হাইকোর্টে মামলা চলছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে তিনি অবশ্যই অন্তর্বর্তী জামিন পেতে পারেন ৷"
আদালত জানিয়েছে, গুজরাতে তিস্তার বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে, তার প্রেক্ষিতে যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট আদালতে তাঁকে পেশ করতে হবে ৷ সুপ্রিম কোর্টের তরফে গুজরাত পুলিশকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিস্তাকে তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ একইসঙ্গে তদন্ত প্রক্রিয়ায় তাঁকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
আরও পড়ুন: তিস্তা সেতলওয়াড়ের জামিনের আবেদনের শুনানি মুলতুবি শুক্রবার পর্যন্ত
তিস্তার পাশাপাশি আর বি শ্রীকুমারকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল ৷ এর আগে তাঁরা দু'জনই আহমেদাবাদের নগর দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন ৷ কিন্তু, গত 30 জুলাই সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় ৷ এরপর গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দুই অভিযুক্ত ৷ সেখানেও তাঁদের জামিনের আবেদন ঝুলে রয়েছে ৷ অবশেষে শীর্ষ আদালতে এসে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন তিস্তা ৷
তিস্তা সেতলওয়াড়ের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছিল গুজরাত সরকার ৷ তাদের দাবি ছিল, তিস্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যে অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাবাস । তাঁর জামিনের আবেদন ইতিমধ্যে হাইকোর্টের বিচারাধীন ৷ দীর্ঘ সময়ের মুলতুবির কারণে, সেতলওয়াড় দ্রুত শুনানির জন্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন । কিন্তু গুজরাত সরকার বলেছিল যে, হাইকোর্টকে বাইপাস করে এই নিয়ে নির্দেশ দেওয়া উচিত নয়, যখন এই মামলা ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে বিচারাধীন ৷ তবে সেই যুক্তি মানেনি সুপ্রিম কোর্ট ৷