নয়াদিল্লি, 23 নভেম্বর: সমলিঙ্গ বিবাহের রায়গুলি পর্যালোচনা করার আবেদন গৃহীত হয়েছে শীর্ষ আদালতে ৷ আগামী 28 নভেম্বর দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই মামলায় দেওয়া রায়গুলি ফের পর্যালোচনা করবেন ৷ 17 অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট সমলিঙ্গ বিবাহ নিয়ে একাধিক রায় ঘোষণা করে ৷ তাতে সমলিঙ্গ বিবাহকে বৈধ ঘোষণা না করলেও এলজিবিটিকিউ+ গোষ্ঠীর জন্য বেশকিছু নিয়ম শিথিল করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ৷
এরপর নভেম্বরের গোড়ায় উদিত সুদ নামে এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে সমলিঙ্গ বিবাহের রায় পর্যালোচনার জন্য আবেদন জানান ৷ আবেদনকারীদের আইনজীবী মুকুল রোহতাগি দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে এই আবেদন পেশ করেন ৷ প্রবীণ আইনজীবী জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের যে বিচারপতিরা সমলিঙ্গ বিবাহের রায়গুলি ঘোষণা করেছেন, তাঁরা সবাই সম্মত যে, ওই রায়গুলিতে বৈষম্য করা হয়েছে ৷ এদিকে আইনজীবী রোহতাগি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, একটা বড়ো সংখ্যায় মানুষের জীবন এই রায়ের উপর নির্ভর করছে ৷
উদিত সুদের পর্যালোচনার আবেদন: এদিকে উদিত সুদ তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, "এই রায়ের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিবাহকে উপেক্ষা করা হয়েছে ৷ কিন্তু বিয়ে সমাজে এমন একটি চুক্তি, যা আইনের দ্বারাই কার্যকর করা সম্ভব ৷ যে কোনও ব্যক্তি এই চুক্তিতে সম্মত হলে তিনি বিয়ে করতেই পারেন ৷ যে কোনও বিশ্বাস, ধর্ম, বা ধর্ম না-মানলেও এই চুক্তিতে আবদ্ধ হতে পারেন ওই ব্যক্তি ৷ কোনও একটি গোষ্ঠীর মানুষ আরেকটি গোষ্ঠীকে বিবাহের সংজ্ঞা বোঝাতে পারে না ৷ প্রাপ্তবয়স্কের বিয়ের অধিকারকে কোনও চুক্তি বা হাজতবাসের মতো শাস্তি দিয়ে খর্ব করা যায় না ৷" তিনি আরও জানিয়েছেন, এলজিবিটিকিউ+ গোষ্ঠী সমাজে বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছে ৷ এই বিষয়টি স্বীকার করলেও সুপ্রিম কোর্ট এই বৈষম্যের কারণটি দূর করেনি ৷ সমলিঙ্গ দম্পতিকে বিবাহের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অর্থ এধরনের মানুষকে 'মানুষ' হিসেবে বিবেচনা না করা ৷ এই রায়ে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সরকার এলজিবিটিকিউ+ গোষ্ঠীর মানুষদের একটা সমস্যা বলে মনে করে ৷
আবেদনকারীদের অন্যতম উদিত সুদ সওয়াল-জবাবে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টকে এই রায়গুলি পর্যালোচনা করে দেখতে হবে ৷ কারণ সেগুলির মধ্যে জটিলতা রয়েছে, সেগুলি স্ব-বিরোধী ৷ 17 অক্টোবর দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ঘোষণা করেন, সমলিঙ্গ বিয়ে আইনত সম্ভব নয় ৷ এর জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংসদে প্রণয়ন করতে হবে ৷ দেশে বিবাহ সম্পর্কিত যে আইন রয়েছে, তার আওতায় সমলিঙ্গ বিয়ের বৈধতা দেওয়া যায় না ৷ সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানায়, সমলিঙ্গ বিবাহকে মৌলিক অধিকার নয় ৷ তবে সমলিঙ্গ যুগলের নিরাপত্তার সমর্থনে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট ৷
আরও পড়ুন: