নয়াদিল্লি, 11 ডিসেম্বর: সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল সোমবার কেন্দ্রকে একটি ‘সত্য ও সমন্বয়সাধন’ কমিশন গঠনের জন্য সুপারিশ করেছেন ৷ রাষ্ট্রীয় মদতে বা সেটা ছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরে কোনও ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে কি না, সেই বিষয়টি ওই কমিশন তদন্ত করবে এবং রিপোর্ট তৈরি করবে ৷
বিচারপতি কৌল আরও জানিয়েছেন, এই তদন্তের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে ৷ আর এই নিয়ে কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেটাও ওই কমিশন সুপারিশ করবে ৷ এই কমিশনের অতীতের ক্ষত ঠিক করতে সক্ষম হতে পারে এবং একটি জাতীয় পরিচয় অর্জনের ভিত্তি তৈরি করতে পারে ।
সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ 370 বাতিল নিয়ে রায় দিয়েছে ৷ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকেই বলবৎ রেখেছে শীর্ষ আদালত ৷ এছাড়াও একাধিক নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ তার মধ্য়ে একটি এই কমিশন গঠনের বিষয়টি ৷ বিচারপতি কৌল সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের সঙ্গে একমত হয়ে একটি পৃথক রায় লিখেছেন ৷ সেখানে তিনি রাষ্ট্র এবং অ-রাষ্ট্রীয়, উভয় পক্ষের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত এবং রিপোর্ট করার জন্য একটি নিরপেক্ষ সত্য ও সমন্বয়সাধনকারী কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছেন ।
বিচারপতি কৌল জানিয়েছেন যে এই স্মৃতি চলে যাওয়ার আগেই কমিশন গঠন করতে হবে ৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে ৷ তিনি আরও জানান, যুব সমাজের একটি পুরো প্রজন্ম রয়েছে, যাঁরা অবিশ্বাসের অনুভূতি নিয়ে বড় হয়েছে । সেই ক্ষত নিরাময়ের জন্যই এই কমিশন প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন ৷
বিচারপতি কৌল জানিয়েছেন যে কমিশন কীভাবে গঠন করা উচিত, তা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং এর সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করা উচিত । কমিশন অবশ্যই একটি ফৌজদারি আদালতে পরিণত হবে না ৷ অবশ্যই সেখানে সবপক্ষের মতামত প্রকাশ ও তা নিয়ে আলোচনার জায়গা থাকবে ৷ তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া এই ধরনের একটি কমিশনের কথাও উল্লেখ করেন ৷
দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছিল ৷ বিচারপতি এসকে কৌল, সঞ্জীব খান্না, বিআর গভাই ও সূর্য কান্তও ছিলেন ওই বেঞ্চে ৷ 2019 সালের 5 অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার 370 বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার তকমা সরিয়ে দেয় ৷ তার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে ৷ পাঁচ সদস্য়ের ডিভিশন বেঞ্চ 16 দিন ধরে সেই আবেদনগুলির একত্রে শুনানি করে ৷ এ দিন রায় দেওয়া হলেও মামলার শুনানি শেষ হয় গত 5 সেপ্টেম্বর ৷ সেদিন রায় সংরক্ষণ করার কথা জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত ৷
আরও পড়ুন: