দিল্লি, 30 জানুয়ারি : পর পর বেশ কয়েকটি বিতর্কিত রায় দিয়ে গত কয়েকদিনে খবরের শিরোনামে চলে এসেছেন বিচারপতি পুষ্পা গানেড়িওয়ালা৷ কিন্তু এর জেরে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের ওই বিচারপতিকে স্থায়ী বিচারপতি করার সুপারিশ ফিরিয়ে নেওয়া হল৷ শীর্ষ আদালতের সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে৷
কোনও অস্থায়ী বিচারপতিকে স্থায়ী করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করে৷ পুষ্পা গানেড়িওয়ালার নামও গিয়েছিল কেন্দ্রের কাছে৷ কিন্তু তাঁর দেওয়া একাধিক রায় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর৷
গত কয়েকদিনে নাবালিকাদের উপর যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত মামলায় বেশ কয়েকটি বিতর্কিত রায় দেন ওই বিচারপতি৷ 19 জানুয়ারির একটি রায়ে তিনি জানান, পোশাকের উপর দিয়ে কোনও নাবালিকার স্তন বা গোপনাঙ্গ ছুঁলে তাকে যৌন হেনস্থা হিসেবে দেখা যাবে না৷ এর জন্য সরাসরি ত্বকের সঙ্গে সম্পর্ক হতে হবে৷
এর কয়েকদিন পর দেখা যায় 15 জানুয়ারি তিনি আরও একটি বিতর্কিত রায় দিয়েছেন৷ সেই মামলায় তিনি জানান যে কোনও নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলার ঘটনাকে যৌন হেনস্থা হিসেবে ধরা হবে না৷ সেই কারণে তিনি দায়রা আদালতের দেওয়া একটি রায় খারিজ করে দেন৷
আরও পড়ুন : ত্বকের সঙ্গে ত্বকের স্পর্শ না হলে যৌন নিপীড়ন নয় !
এর পর জানা যায়, তিনি তৃতীয় একটি বিতর্কিত রায় দিয়েছেন৷ সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন যে কোনওরকম ধস্তাধস্তি ছাড়া একা কোনও ব্যক্তির পক্ষে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়। একজন লোকের পক্ষে কোনও মেয়েকে মুখ চেপে নিয়ে গিয়ে তাঁর ও নিজের জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা প্রায় অসম্ভব। সেই কারণে তিনি অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেন৷
আরও পড়ুন : নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলা যৌন হেনস্থা নয় : বম্বে হাইকোর্ট
এই নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক হইচই হচ্ছে৷ অনেকেই ওই বিচারপতির রায়ের সমালোচনা করেছিলেন৷ সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই একটি রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে৷ এবার তাঁর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হল৷ পুষ্পাদেবী বর্তমানে বম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি৷ আপাতত তাঁর আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম৷
আরও পড়ুন : 'ধস্তাধস্তি ছাড়া একা ব্যক্তির পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা অসম্ভব'
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে এখন তিনজন সদস্য রয়েছেন৷ প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে ছাড়াও রয়েছেন এনভি রামানা ও আরএফ নরিম্যান৷ তাঁরাই কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব ফেরানোর কথা বলেছেন৷ তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আরও দুই বিচারপতি পুষ্পা গানেড়িওয়ালার এই ধরনের রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ৷