মুম্বই, 10 জুন: মুম্বই সংলগ্ন থানে জেলার মীরা রোডে মহিলাকে খুনের পর দেহ টুকরো করে লোপাটের ঘটনায় এবার নয়া তথ্য এল পুলিশের হাতে ৷ সরস্বতী বৈদ্য অনাথ আশ্রমে থেকে বড় হলেও, তাঁরা পাঁচ বোন বলে জানা গিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর তিন বোন পুলিশের সঙ্গে দেখা করেছেন বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ৷ উল্লেখ্য, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজ সানে পুলিশকে জানিয়েছিলেন সরস্বতী অনাথ ৷ এমনকী তিনি নিজেও অনাথ ৷ তবে, পরবর্তী সময়ে পুলিশ জানতে পারে মনোজের তুতো ভাই-বোন রয়েছে ৷ তাঁরাও মুম্বইয়ে থাকেন ৷ অন্যদিকে, সরস্বতীর দেহ লোপাটের জন্য তিনি ইন্টারনেট সার্চ করে কৌশল বের করেছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷
এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে পুলিশ এবার জানতে পেরেছে, সরস্বতী অনাথ ছিলেন না ৷ মনোজ পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার সরস্বতীর তিন বোন পুলিশের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তাঁরা নিজেদের পরিচয়ও দিয়েছেন ৷ খুব শীঘ্রই তাঁদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ আর এই সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছোটবেলায় তাঁরা পাঁচ বোন একসঙ্গে অনাথ আশ্রমে থাকতেন ৷ সরস্বতী ছিলেন সকলের ছোট ৷ পরবর্তী সময়ে তাঁর বাকি বোনদের কেউ চাকরি পান বা কেউ বিয়ে করে ফেলেন ৷ সরস্বতীও দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করার সময় অনাথ আশ্রম থেকে ঔরঙ্গাবাদে এক বোনের কাছে চলে যান ৷
সেখানে থেকেই পড়াশোনা শেষ করেন এবং চাকরির খোঁজে মুম্বইয়ে আসেন ৷ সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় মনোজ সানের সঙ্গে ৷ তিনি সরস্বতীকে চাকরি খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ পরবর্তীতে চাকরি পেলেও থাকার জায়গা ছিল না ৷ সেই সময় মনোজ সানে তাঁর বোরিভলির দু-কামরার ফ্ল্যাটে থাকার প্রস্তাব দেন সরস্বতীকে ৷ দু’জনে একসঙ্গে থাকাকালীন তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয় ৷ এরপর মন্দিরে গিয়ে মনোজ এবং সরস্বতী বিয়েও করে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁর বোনরা ৷
আরও পড়ুন: আত্মঘাতী হয়েছেন সরস্বতী, মুম্বইয়ে যুবতীর দেহের টুকরো উদ্ধারে দাবি অভিযুক্তের
এই বিষয়টি সামনে আসার পর ফের মনোজ সানেকে জেরা শুরু করেছে পুলিশ ৷ সূত্রের খবর, সেই জেরায় জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে মনোজের তুতো ভাই-বোনরা থাকেন ৷ বিষয়টি যাতে তাঁদের কাছ পর্যন্ত না যায়, পুলিশের কাছে সেই অনুরোধও করেছেন মনোজ ৷ অন্যদিকে, পুলিশকে অভিযুক্ত জানিয়েছেন 2014 সাল থেকে তিনি নাকি এইডসে আক্রান্ত ৷ নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন ৷ যদিও, তদন্তকারীরা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজের দাবি সত্যি কি না, যাচাই করতে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হতে পারে ৷
আরও পড়ুন: লিভ-ইন পার্টনারের দেহ টুকরো করে কুকারে সেদ্ধ, হাড়হিম হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী রইল মায়ানগরী
গত 8 জুন বুধবার মুম্বই সংলগ্ন থানে জেলার বোরিভলির মীরা রোডের একটি আবাসন থেকে বছর 32 এর এক মহিলার টুকরো করা দেহাংশ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ এমনকি তার মধ্যে কিছু অংশ প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করা হয় বলে অভিযোগ ৷ আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় ৷ পুলিশ এই ঘটনায় মৃত মহিলা সরস্বতীর লিভ-ইন পার্টনার মনোজ এবং আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ৷ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনোজ দাবি করেছিলেন, সরস্বতী আত্মহত্যা করেছেন ৷ কিন্তু, পুলিশ তাঁকে সন্দেহ করবে, এটা ভেবেই নাকি সরস্বতীর দেহ টুকরো করে প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করেন, যাতে দুর্গন্ধ না বের হয় ৷ পরবর্তীতে সেগুলিকে তিনি লোপাট করার পরিকল্পনা করেছিলেন ৷