নয়াদিল্লি, 14 এপ্রিল: ‘বিদ্রোহী’ সচিন পাইলটকে নিয়ে এবার ধীরে চলো নীতি নিতে চলেছে কংগ্রেস ৷ ওই দলের একটি সূত্র থেকে তেমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে ৷ তবে সচিনের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ গুরুত্ব দিয়ে শোনার সিদ্ধান্তও কংগ্রেসের হাইকমান্ডের তরফে নেওয়া হয়েছে বলে খবর ৷
কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, পুরো বিষয়টিই চলছে রাহুল গান্ধি ও কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নজরদারিতে ৷ আপাতত গান্ধি পরিবারের বিশ্বস্ত দুই নেতা কমল নাথ ও কেসি বেণুগোপালকে সচিনের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নিতে কংগ্রেসের শীর্ষস্তর থেকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে খবর ৷
গত মঙ্গলবার রাজস্থানের জয়পুরের শহিদ স্মারকে প্রতীকী অনশন করেন সচিন ৷ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত বিজেপি জমানায় হওয়া দুর্নীতি নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ সচিনের ৷ সেই কারণেই তিনি অনশনে বসেন ৷ যদিও এই অনশনকে দল বিরোধী আখ্যা দিয়েছিল কংগ্রেস ৷ সচিন দলের অন্দরে এই নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি বলেও অভিযোগ তোলা হয় ৷ সচিন পালটা দাবি করেন যে তিনি দু’বার এই নিয়ে চিঠি লেখার পরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ৷
অনশন কর্মসূচি শেষ করেই নয়াদিল্লিতে চলে আসেন সচিন ৷ সেখানে এসে তিনি বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন কমল নাথ ও কেসি বেণুগোপালের সঙ্গে ৷ আজ, শুক্রবার ওই দু’জনের সঙ্গে তাঁর আরও এক দফা বৈঠক হতে পারে ৷ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অনশন নিয়ে দলের অবস্থানের সমালোচনা করেন সচিন ৷ এই নিয়ে নিজের ক্ষোভও উগড়ে দেন ৷ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের পুরনো প্রতিশ্রুতির কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন ওই দুই নেতাকে ৷
ওই সূত্রের দাবি, সচিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা তিনি মেনে নেবেন ৷ তা বলে তাঁর প্রতিবাদ থেমে থাকবে না ৷ তিনি এর পর জনতার কাছে গিয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরবেন ৷ আগামী 17 এপ্রিল রাজস্থানে দু’টি কর্মসূচি রয়েছে সচিনের ৷ সেই কর্মসূচিতে থেকে তিনি পিছু হটবেন না বলে কমল নাথ ও কেসি বেণুগোপালকে জানিয়ে দিয়েছেন সচিন ৷ তাই আজ শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে কী আলোচনা হয়, এখন সেটাই দেখার ৷
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শেষেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, 2018 সালে রাজস্থানের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন সচিন ৷ তার পরও তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাননি ৷ তাঁকে উপ মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ৷ এই নিয়ে সচিনের ক্ষোভ ছিল ৷ তিনি পরে বিদ্রোহও করেন গেহলতের বিরুদ্ধে ৷ তার পরও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ বরং উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদও চলে যায় ৷
এবার ভোটের কয়েকমাস আগে থেকেই নিজের শক্তি প্রদর্শন করছেন সচিন ৷ এবার তিনি হাইকমান্ডের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছেন ৷ কিন্তু সেটা যদি না হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটাই দেখার !
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে দু’বার চিঠি লিখলেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি, অভিযোগ সচিনের