নয়াদিল্লি, 21 মার্চ: তিহাড় জেলেই (Tihar Jail) যাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ মঙ্গলবার তাঁকে 13 দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় বা জেল হেফাজতে (13 Days Jail Custody for Anubrata Mondal) পাঠানোর নির্দেশ দেয় দিল্লির রাউস অ্য়াভিনিউ আদালত (Rouse Avenue Court) ৷ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট বিচারকের চেম্বারে অনুব্রত মণ্ডলের শুনানি হয় ৷ ইডির তরফে অনুব্রতকে মণ্ডলকে 14 দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করা হয় ৷ কিন্তু, বিচারক 13 দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন ৷ তাঁর যুক্তি ছিল, সোমবারই অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে একই মামলায় 14 দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে অনুব্রতকে 13 দিনের হেফাজতে পাঠানো হলে দু'জনের ক্ষেত্রেই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হবে আগামী 3 এপ্রিল ৷ ওই দিন ইডির তদন্তকারীদের আদালতে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য পেশ করতে হবে ৷ তার ভিত্তিতে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ করবে ৷
এদিকে, দিল্লি আসার সময় অনুব্রতর সঙ্গে ছিল চারটি বড় ব্যাগ ৷ সেই ব্যাগে অনুব্রতর ব্যক্তিগত বহু জিনিস রয়েছে ৷ কিন্তু, নিয়ম অনুসারে সেই ব্যাগ নিয়ে জেলে ঢুকতে পারবেন না অনুব্রত ৷ তাই আপাতত সেগুলি ইডির কাছেই থাকবে ৷ তবে, যেহেতু তিনি অসুস্থ, তাই সঙ্গে প্রেসক্রিপশন থাকলে, সেই প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ জেলের ভিতর নিয়ে যেতে পারবেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ এর বাইরে অনুব্রতর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন হলে জেল হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা করা হবে ৷ এদিনের শুনানির পর অনুব্রতকে আদালতের একতলার লক-আপে রাখা হয় বেশ কিছুক্ষণ ৷ ততক্ষণে আদালতের বাইরে পৌঁছে যায় প্রিজন ভ্য়ান ৷ সেই প্রিজন ভ্যানেই অনুব্রতকে জেল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ ৷
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে মণীশ কোঠারি ছাড়াও তিহাড় জেলে রয়েছেন গরুপাচার মামলায় ধৃত আরও তিনজন ৷ এঁরা হলেন, অনুব্রতর এক সময়ের দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, গরুপাচার মামলার মূল অভিযুক্ত এনামুল হক ও বিএসএফ আধিকারিক সতীশ কুমার ৷ এবার সেই 'একই ছাদের নীচে' থাকবেন অনুব্রতও !
উল্লেখ্য, গরুপাচার মামলায় (WB Cattle Smuggling Scam) অনুব্রত গ্রেফতার হন গত বছরের অগাস্ট মাসে ৷ তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ পরবর্তীতে এই মামলার আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে নামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (Enforcement Directorate) বা ইডি (ED) ৷ আদালতের কাছে অনুব্রতকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিল্লি নিয়ে আসার আবেদনও তারাই জানিয়েছিল ৷ আদালত সেই দাবি মঞ্জুর করে এবং বিস্তর টালবাহানার পর অবশেষ অনুব্রতকে দিল্লি আনতে সক্ষম হয় ইডি ৷
আরও পড়ুন: ফের দিল্লিতে সুকন্যাকে ইডির তলব, হাজিরা এড়ালে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি
দিল্লিতে আনার পর দুই দফায় মোট 14 দিনের জন্য (প্রথমে তিনদিন ও তারপর আরও 11 দিন) অনুব্রতকে হেফাজতে নেয় ইডি ৷ সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয় মঙ্গলবার ৷ আইনজ্ঞ মহলের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, এবার অনুব্রতর তিহাড়যাত্রা একপ্রকার নিশ্চিত ৷ কারণ, 14 দিনের বেশি অনুব্রতকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে না এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট ৷ এমনকী, গোয়েন্দারা যদি অনুব্রতকে ফের জেরা করতে চান, তাহলে তাঁদেরও জেলে গিয়েই অনুব্রতর সঙ্গে কথা বলতে হবে ৷