ভরতপুর (রাজস্থান), 22 নভেম্বর: পকেটমার এবং তাদের দলগুলি কীভাবে কাজ করে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং শিল্পপতি গৌতম আদানিকে পকেটমার গ্যাং-এর সমান্তরাল রেখায় বসিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ৷
বুধবার রাজস্থানে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং শিল্পপতি গৌতম আদানি কার্যত দেশের জনসাধারণকে লুট করার জন্য একযোগে কাজ করেন ৷ ভরতপুরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধি বলেন, "পকেটমার কখনও একা আসে না, তার সঙ্গে মোট তিনজন থাকে। একজন সামনে থেকে আসে, একজন পিছন থেকে এবং একজন দূর থেকে দেখে। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজ আপনার মনোযোগ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি সামনে থেকে আসেন এবং হিন্দু-মুসলিম, নোটবন্দি এবং জিএসটি প্রসঙ্গ তুলে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেন।"
এখানেই শেষ নয়, রাহুল আরও জানান, মোদি যখন মানুষের মনকে বিভ্রান্ত করেন তখনই অন্যদিকে আদানি পিছন থেকে এসে টাকা নিয়ে যায়। তাঁর কথায়, "অমিত শাহ তৃতীয় ব্যক্তি। তাঁর ভূমিকা আসলে তত্ত্বাবধান করা। তিনি নিশ্চিত করেন যে আদতে কী ঘটছে তা কেউ যেন না জানে ৷" রাহুল গান্ধি আবারও কেন্দ্রে সচিব-স্তরের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া জাতি এবং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের অংশগ্রহণ নিয়ে এদিন প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, "যে কোনও বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করুন সে কী হতে চায়, সেই বাচ্চা বলবে সে আইএএস অফিসার হতে চায়। কেন্দ্রীয় সরকার সেক্রেটারিদের দ্বারা পরিচালিত হয়। আমরা যখন জিজ্ঞেস করলাম, কতজন অফিসার অনগ্রসর শ্রেণী থেকে আছেন, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশ থেকে আছেন, তিনি নীরব থাকলেন ৷" রাহুল এদিন বলেন, "যখন আমি দেখলাম কেন্দ্রে মাত্র তিন জন ওবিসি সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করছে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আর তাদের সবাইকে কার্যত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে রাখা হয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক যখন অনগ্রসর শ্রেণী, তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব !"
অন্যদিকে, এদিন পালটা কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ রাজস্থানের নির্বাচনী সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি কংগ্রেস নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে বলেন, "এটি পরিবারতান্ত্রিক দল ৷ পার্টি তাদেরই নেতা শচীন পাইলটকে হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর বাবার বিদ্রোহের জন্য এখনও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কংগ্রেসের ইতিহাস হল, যে দলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার চেষ্টা করবে, সেই রাজনৈতিক জায়গা হারাবে। রাজেশ পাইলট মাত্র একবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন ৷ কিন্তু দল আজ পর্যন্ত শচীন পাইলটকে শাস্তি দিচ্ছে। রাজেশ পাইলট আর নেই কিন্তু কংগ্রেস তাঁর ছেলের প্রতি ক্ষোভ পুষে রেখেছে ৷"
রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন আগামী 25 নভেম্বর ৷ 3 ডিসেম্বর ভোট গণনা। 200টি বিধানসভা আসনের মধ্যে 199টিতে 25 নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে ৷ কংগ্রেস প্রার্থী গুরমিত সিং কুনারের মৃত্যুর কারণে করণপুর কেন্দ্রের নির্বাচন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, 2018 সালে কংগ্রেস 99টি আসন জিতেছিল ৷ অন্যদিকে, বিজেপি 73টি জিতেছিল ৷ সেই সময় অশোক গেহলত বিএসপি বিধায়ক এবং নির্দলদের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ৷ (এএনআই)
আরও পড়ুন