নয়াদিল্লি, 4 নভেম্বর : ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের (Captain Amrinder Singh) সঙ্গে কংগ্রেসের (Congress) সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল ৷ বুধবার দলের তরফে ক্যাপ্টেনের ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে ৷ তবে সম্পর্ক শেষ হলেও দুই পক্ষের লড়াই কিন্তু এখনই শেষ হচ্ছে না ৷
পদত্যাগের অনেক আগে থেকেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছিলেন পঞ্জাবের ক্যাপ্টেন ৷ পদত্যাগ করার পর সেই আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়েছেন তিনি ৷ দাবি করেছেন, পঞ্জাবের কোন কোন বিধায়ক ও মন্ত্রী বেআইনি বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত, তাঁর কাছে সব তালিকা আছে ৷ তা তিনি প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন ৷
আরও পড়ুন : Narendra Modi : ভারতের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টার যোগ্য জবাব দেয় সেনাবাহিনী : মোদি
হাইকমান্ডকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে ক্য়াপ্টেন লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ই তাঁর কাছে এই নিয়ে তথ্য এসেছিল ৷ কিন্তু তিনি এই বিষয়গুলি প্রকাশ্যে এলে কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়বে, এটা ভেবেই তিনি কিছু বলেননি ৷
তাঁর দাবি, কেন তিনি ব্যবস্থা নেননি এখন তা নিয়ে তাঁর অনুশোচনা হয় ৷ কারণ, ওই বিধায়করা এখনও পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ৷
আরও পড়ুন : Yogi Adityanath: দোল পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন, ভোটের আগে কল্পতরু যোগী
তাঁর এই বক্তব্য সামনে আসার পর টুইট করেছেন কংগ্রেসের সাংসদ গুরজিত অজুলা ৷ তিনি লিখেছেন, শুধু পঞ্জাব নয়, সারা বিশ্ব সেই নামগুলি জানতে চায়, যাঁরা মাদক পাচার, বালি পাচার ও অন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ৷ তাই দ্রুত নামগুলি সামনে আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি ৷ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গুরজিত ক্যাপ্টেনের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ৷
এদিকে ক্যাপ্টেনের কংগ্রেস ছাড়ার অন্যতম কারণ ছিল নভজ্যোত সিং সিধুর (Navjot Singh Sidhu) সঙ্গে বিবাদ ৷ সিধুকে পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি করার পর থেকে ওই বিবাদের শুরু হয় ৷ যার জেরে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন ক্যাপ্টেন ৷ তার পর কংগ্রেসও ছাড়লেন ৷ এখন যা পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই সিধু ও ক্যাপ্টেনের বাকযুদ্ধ বাড়তে থাকবে ৷ যার প্রভাব ভোটে অবশ্যই ৷
আরও পড়ুন : Lalu Prasad Yadav : উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের পর ফের দাম বাড়বে জ্বালানির, ভবিষ্যদ্বাণী লালুর
দলের বাইরে থাকা এই আক্রমণের বিরুদ্ধে যেমন লড়তে হবে কংগ্রেসকে, তেমনই লড়াই করতে হবে ভিতরে চলতে থাকা দ্বন্দ্বের সঙ্গে ৷ যে দ্বন্দ্বের অন্যতম দুই কুশীলব হলেন সিধু ও মুখ্যমন্ত্রী চন্নি ৷ আপাতত পঞ্জাবের নতুন অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগ নিয়ে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে ৷ পরিস্থিতি এরপর আরও বাড়বে বলে মত রাজনৈতিক মহলের ৷
কয়েক মাস পরই পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন ৷ সেকথা মাথায় রেখেই কংগ্রেসের তরফে প্রকাশ্যে দলের ঐক্যবদ্ধ ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ সেই কারণেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি (Charanjit Singh Channi) ও সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু কেদারনাথ যান ৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পঞ্জাবে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হরিশ চৌধুরী ৷ তাঁরা দেরাদুনে কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াতের বাড়িতেও যান ৷ রাওয়াত এর আগে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন ৷
আরও পড়ুন : Leander Paes : ধর্মের রাজনীতি রুখতেই সহজাত নেত্রী মমতার দলে যোগ, জানালেন তৃণমূলের লিয়েন্ডার
যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের অন্দর থেকেই ৷ দলের সাংসদ রভনীত বিট্টু ওই ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন ৷ আর প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ পঞ্জাব কংগ্রেসের ঐক্যবদ্ধ মুখ...কিন্তু উত্তরাখণ্ডে কেন এবং কেন পঞ্জাবে নয় ?...’’
আর পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সুনীল ঝাকড় এই নিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘রাজনৈতিক তীর্থযাত্রী ৷ কিন্তু প্রত্যেকেই পৃথক দেবতাকে তুষ্ট করতে চাইছেন ৷’’
আরও পড়ুন : By-polls Result : দেশের একাধিক রাজ্যে লোকসভা ও বিধানসভার উপনির্বাচনে শোচনীয় ফল গেরুয়া শিবিরের
ফলে কংগ্রেসের এই ঘরে বাইরের লড়াই ভোটের ময়দানে কী প্রভাব পড়ে, আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ৷