ভুবনেশ্বর, 11 নভেম্বর: নিজের স্কুলে ফিরে আবেগে ভাসলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (Droupadi Murmu) ৷ ওড়িশার ভুবনেশ্বরে (Bhubaneswar) ইউনিট-2 গভর্মেন্ট গার্লস হাইস্কুলের পড়ুয়া ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রথম নাগরিক ৷ গত শতাব্দীর সাতের দশকে এই স্কুলে পড়তেন তিনি ৷ শুক্রবার সেই স্কুলেই আসেন দ্রৌপদী ৷ স্কুলে পড়াশোনার সময় ছোট্ট একটি খাটে শুয়ে ঘুমোতেন তিনি ৷ এদিন ফের একবার সেই খাটে বসেন রাষ্ট্রপতি ৷ আর সেই সময়েই পুরনো দিনের কথা মনে করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি ৷
উল্লেখ্য, দ্রৌপদী নিজে ওড়িশার মানুষ ৷ এখানকার আদিবাসী দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি তিনি ৷ বর্তমানে ওড়িশা সফরে (Droupadi Murmu Odisha Visit) রয়েছেন রাষ্ট্রপতি ৷ শুক্রবার ছিল তাঁর সফরের দ্বিতীয় দিন ৷ এদিন নিজের স্কুলে আসেন দ্রৌপদী ৷ স্কুলে পড়ার সময় স্থানীয় কুন্তলা কুমারী সবত আদিবাসী হস্টেলে থাকতেন তিনি ৷ সেই ছাত্রীবাসেও এদিন আসেন দ্রৌপদী ৷ 13 জন সহপাঠীর সঙ্গে দেখা করেন ৷ জানান, নিজের স্কুল এবং হস্টেলে আসতে পেরে, পুরনো বন্ধুদের পাশাপাশি বর্তমান ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে তিনি অত্যন্ত খুশি ৷
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেলেন আলিপুরদুয়ারের দুই স্বাস্থ্য কর্মী
এদিন সকালে প্রথমেই খণ্ডগিরি শহরের তপবন হাই স্কুলে যান রাষ্ট্রপতি ৷ সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমার স্কুলজীবন শুরু হয়েছিল আমাদের উপরবেড়া গ্রামে ৷ সেখানে স্কুলের কোনও ভবন ছিল না ৷ বদলে খড়ের তৈরি একটি ঘরে স্কুল চলত ৷" রাষ্ট্রপতি মনে করেন, আজকালকার বাচ্চারা অনেক বেশি 'সৌভাগ্যশালী' ৷ যে কারণে তারা ভালো পরিকাঠামোযুক্ত স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ পায় ৷ এই প্রসঙ্গে দ্রৌপদী বলেন, "আমাদের শ্রেণিকক্ষ ঝাঁট দিতে হত ৷ পুরো স্কুল গোবর দিয়ে পরিষ্কার করতে হত ৷ আমাদের সময় পড়ুয়ারা খোলা মনে পড়াশোনা করত ৷ তোমাদের (উপস্থিত পড়ুয়াদের) প্রতি আমার অনুরোধ, সকলে কঠোর পরিশ্রম কর ৷ এবং নিজেদের পড়াশোনায় মন দাও ৷"
এদিন স্কুলে ছাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন রাষ্ট্রপতি ৷ সেই সময় তিনি বলেন, "আমাদের সময় টেলিভিশন বা ইন্টারনেটের মতো পরিষেবা ছিল না ৷ ফলে বাইরের পৃথিবীটাকে জানার কোনও সুযোগ ছিল না আমাদের কাছে ৷ সেই কারণে আমার জীবনে বাইরের কেউ কখনও 'রোল মডেল' হননি ৷ আমার ঠাকুমাই ছিলেন আমার রোল মডেল ৷ আমি দেখেছি, কীভাবে তিনি মানুষকে সাহায্য করতেন ৷ বিশেষ করে আমাদের এলাকার মহিলাদের তিনি সবসময় সহযোগিতা করতেন ৷ আমার ঠাকুমা মানসিকভাবে অত্যন্ত দৃঢ় ছিলেন এবং নিজের জীবন থেকেই তিনি অনেক কিছু শিখেছিলেন ৷"