কলকাতা, 7 জানুয়ারি : দেশের জন্য চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi virtually inaugurates CNCI Campus in Kolkata) ৷ ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা ও অন্যরা ৷
মুখ্যমন্ত্রী এই ক্যাম্পাসের উদ্বোধনের জন্য কেন্দ্র সরকার, এই ক্যাম্পাসের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক, গবেষক, অন্য কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ৷ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধন করছেন আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য তাঁকে দু'বার ফোন করেছেন ৷ তাই তিনি এখানে অংশ নিয়েছেন ৷
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, অনেক আগেই ক্যানসার ক্যাম্পাস চালু হয়েছে রাজ্যে ৷ এর আগে কোভিড ঢেউয়ের সময় কোভিড সেন্টারের প্রয়োজনে তিনি রাজারহাটে চিত্তরঞ্জনের আরেকটি ক্যানসার ক্যাম্পাসে যান ৷ সেটিকে কোভিড সেন্টার হিসেবে চালু করেছিলেন ৷
আরও পড়ুন : PM Narendra Modi : চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার হাসপাতালের ক্যাম্পাসের উদ্বোধনে কাল ভার্চুয়ালি শহরে মোদি
এই ক্যাম্পাস তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার 25 শতাংশ টাকা দিয়েছে ৷ এমনকি রেকারিং খরচের 71 শতাংশ বহন করছে রাজ্য সরকার বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "এই ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য 11 একর জমি আমরা দিয়েছি ৷ জনসাধারণের কল্যাণের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে ৷"
ক্যানসার থেকে রেহাই পাওয়ার কোনও নিশ্চয়তা না থাকলেও, চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা অনেক উন্নত হয়েছে ৷ 400টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে ৷ মুম্বইয়ে টাটা রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে ক্যানসার চিকিৎসার জন্য মৌ চুক্তি করেছে রাজ্য সরকার ৷ এই চুক্তি অনুযায়ী কলকাতা ও শিলিগুড়িতে ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার খোলা হবে ৷
মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে রাজ্যে কোনও পোলিও রোগী নেই ৷ পশ্চিমবঙ্গে পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল রয়েছে ৷ যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া খুবই কঠিন ৷ আগের সরকারের আমলে স্বাস্থ্য পরিষেবার হার ছিল 65%, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন এখন তা 99% ৷ এছাড়া রাজ্য সরকারের তরফে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে প্রতিটি পরিবারকে 5 লক্ষ টাকার চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে ৷
এই অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য এখনও 40% মানুষ কোভিড-19 ডোজ পায়নি ৷ এখন করোনা সংক্রমণ খুব দ্রুত বেড়ে চলেছে ৷ তবে মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক নয় এবং তেমন কোনও বিপদের সম্ভাবনা নেই বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন : NEET PG councelling : 27 শতাংশ OBC, 10 শতাংশ EWS সংরক্ষণে ভর্তির সিদ্ধান্ত বহাল সুপ্রিম কোর্টে
প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি রাজ্যে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানান ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "একটা হাসপাতালে যদি 75 জন চিকিৎসক থাকেন আর সবাই কোভিড আক্রান্ত হয়ে যান ৷ তাহলে কী হবে ? তাই রাজ্যের জন্য কোটার পরিমাণ বাড়ান ৷" এ প্রসঙ্গে তিনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কথা তোলেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই বাইরে থেকে ডাক্তার নিয়োগ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু রাজ্যপাল এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কেন বাইরে থেকে লোক নেওয়া হচ্ছে ? এতে চিকিৎসা ব্যবস্থা সমস্যায় পড়ছে ৷
কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থান যাই হোক না কেন, রাজ্য কেন্দ্রের নির্দেশিকা পালন করার 99% চেষ্টা করে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ আজ এই ক্যাম্পাস ছাড়াও কলকাতা, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানে আরও তিনটি ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্রের বন্দোবস্ত করছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ৷